×

আন্তর্জাতিক

কবর থেকে জ্যান্ত শিশু উদ্ধার

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৭ অক্টোবর ২০১৯, ১১:৪২ এএম

কবর থেকে জ্যান্ত শিশু উদ্ধার
মৃত শিশুকে কবর দিতে গিয়ে মাটির নিচ থেকে সদ্যোজাত জ্যান্ত শিশু উদ্ধার করা হয়েছে। ভারতের উত্তরপ্রদেশের বরেলিতে চাঞ্চল্যকর এ ঘটনা ঘটে। মাটি খুঁড়ে উদ্ধার করার সময় শিশুটির খুদে ফুসফুস অক্সিজেন শুষে নেয়ার আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিল। উত্তরপ্রদেশের ব্যবসায়ী হিতেশ কুমার সিরোহি তার মৃত সন্তানকে কবর দিতে গিয়ে এ সদ্যোজাত কন্যাকে উদ্ধার করেন। এ ঘটনায় এলাকায় হৈচৈ পড়ে যায়। খবর টাইমস অব ইন্ডিয়া। হিতেশ কুমার সিরোহির স্ত্রী বৈশালী বরেলিতে পুলিশের সাব-ইন্সপেক্টর। গত ৯ অক্টোবর রাতে প্রসব যন্ত্রণা শুরু হওয়ায় স্ত্রীকে বরেলির একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করেছিলেন হিতেশ। পরদিন সকালে তার স্ত্রী ৭ মাসের অপরিণত শিশুর জন্ম দেন। দুর্ভাগ্যবশত জন্মের কয়েক মিনিটের মধ্যেই এ সদ্যোজাতের মৃত্যু হয়। ওই দিন সন্ধ্যায় তিনি মৃত সদ্যোজাতকে কবর দিতে গিয়েছিলেন। মাটি খুঁড়তে গিয়ে তিনি লক্ষ্য করেন, মাটির তিন ফুট নিচে একটা শক্ত কিছু রাখা রয়েছে। সেটা একটা মাটির পাত্র ছিল। পাত্রটাকে টেনে বাইরে বার করে তাজ্জব হয়ে যান তিনি। পাত্রের ভেতরে তখনো ছটফট করছে একটা তাজা প্রাণ। এক সদ্যোজাত কন্যাশিশু! ভীষণ জোরে শ্বাস নিচ্ছিল সে। তৎক্ষণাৎ তাকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসেন তিনি। তাকে দুধ খাওয়ান। পরে শিশুটিকে স্থানীয় সরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় এবং নবজাতক নিবিড় পরিচর্যা ইউনিটে ভর্তি করা হয়। সেখানকার প্রধান শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. সৌরভ অঞ্জন বারেইলি জানান, যখন শিশুটিকে হাসপাতালে আনা হয় তখন তার বয়স প্রায় এক সপ্তাহ ছিল। তিনি বলেন, শিশুটি সময়ের আগেই জন্ম নিয়েছিল, সম্ভবত ৩০ সপ্তাহে জন্মগ্রহণ করেছিল শিশুটি এবং তার ওজন মাত্র ১ দশমিক ১ কেজি। যেটা কিনা জন্মের সময়ে শিশুর আদর্শ ওজনের হিসেবে খুব কম। উন্নততর সুবিধা থাকায় পরে শিশুটিকে ডা. রবি খান্নার পেডিয়াট্রিক হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সেখানকার চিকিৎসক ডা. খান্না বলেন, তাকে নিবিড় পরিচর্যা ইউনিটে রাখা হচ্ছে এবং একটি টিউবের মাধ্যমে তরল খাওয়ানো হচ্ছে। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক। আমরা তার রক্তে সংক্রমণ নিয়ে উদ্বিগ্ন। শিশুটি কতক্ষণ মাটির নিচে চাপা পড়েছিল সে বিষয়ে আলাদা আলাদা অনুমান রয়েছে। তবে চিকিৎসকরা বলছেন তারা কেবল এটাই বলতে পারবেন যে, শিশুটি কীভাবে বেঁচেছিল। ডা. খান্না বলেন, তিন থেকে চার দিন আগে শিশুটিকে কবর দেয়া হয়ে থাকতে পারে। শিশুটি এতদিন তার ব্রাউন ফ্যাটের কারণে বেঁচে আছে। বাচ্চারা তাদের পেটে, ঊরু এবং গালে ফ্যাট নিয়ে জন্মায় এবং কিছুটা জরুরি অবস্থায় তারা এটার ওপর নির্ভর করে বেঁচে থাকতে পারে। কিন্তু সেই শক্তি ফুরিয়ে যাওয়ার পর শিশুটির শরীর কুঁকড়ে যেতে থাকে। স্থানীয় রাজ্য নেতা রাজেশ কুমার মিশ্র বলেছেন, তিনি বাচ্চাটিকে ‘দত্তক’ নিয়েছেন এবং একবার যদি শিশুটি ভালো হয়ে ওঠে, তবে তিনি এবং তার স্ত্রী শিশুটিকে নিজ বাড়িতে বড় করবেন। তিনি বলেন, এটি একটি অলৌকিক ঘটনা যে, সে বেঁচে আছে, আমি বিশ্বাস করি যে ঈশ্বর তার জীবন বাঁচিয়েছেন এবং তাকে আমার কাছে পাঠিয়েছেন। এখন আমাদের জন্য তার সমস্ত কিছু করা কর্তব্য। শিশুটি জীবন ও মৃত্যুর মধ্যে দুলছে। সে সুস্থ হয়ে উঠলে আমি তাকে বাড়িতে নিয়ে আসব এবং তাকে আমার মেয়ে হিসেবে বড় করব। মিশ্রা একটি হিন্দু দেবীর নাম অনুসারে কন্যাশিশুটির নাম রাখেন সীতা।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App