×

মুক্তচিন্তা

অনতিবিলম্বে উদ্ভূত সংকটের সমাধান হোক

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৭ অক্টোবর ২০১৯, ০৯:০১ পিএম

স্বীকৃতিপ্রাপ্ত সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান একযোগে এমপিওভুক্তির দাবিতে ফের মাঠে নেমেছেন ননএমপিও শিক্ষক-কর্মচারীরা। শিক্ষক-কর্মচারীরা স্বীকৃতিপ্রাপ্ত ৫ হাজার ২৪২টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির দাবি জানিয়ে আসছেন। আর স্বীকৃতিপ্রাপ্ত সব প্রতিষ্ঠান একযোগে এমপিওভুক্তির প্রক্রিয়া দ্রুত সম্পন্ন করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন শিক্ষকরা। আশার কথা, বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির তালিকার একটি অংশের সম্মতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দিয়েছেন বলে ভোরের কাগজের একটি খবরে বলা হয়। এর মাধ্যমে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের অধীনে স্কুল, কলেজ মিলিয়ে দেড় হাজারেরও কিছু বেশি প্রতিষ্ঠান নতুন এমপিওভুক্ত হচ্ছে। খবরটি শিক্ষক-কর্মচারীদের জন্য আনন্দের। একাডেমিক স্বীকৃতিই এমপিওর মানদণ্ড। শিক্ষক সমাজের একটা বড় অংশকে অবহেলিত রেখে প্রকৃত শিক্ষার বাস্তবায়ন সম্ভব নয়। আমরা আশা করব বাকি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানও দ্রুত এমপিওভুক্তির আওতায় আসবে এবং শিক্ষকদের দুর্ভোগ লাঘব হবে। দীর্ঘ ৯ বছর পর বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত হচ্ছে। সর্বশেষ ২০১০ সালে ১ হাজার ৬২৪টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির আওতায় আনা হয়েছিল। এমপিওভুক্ত হলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীরা সরকার থেকে মাসে মূল বেতন ও কিছু ভাতা পেয়ে থাকেন। ফলে তাদের স্বল্প বেতনের পেশাজীবনে এমপিওভুক্তির বিশেষ গুরুত্ব আছে। বর্তমানে সমগ্র দেশে এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আছে ২৬ হাজারের বেশি। এগুলোতে শিক্ষক-কর্মচারী আছে প্রায় ৫ লাখ। এর বাইরে স্বীকৃতি পাওয়া ননএমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আছে সাড়ে ৫ হাজারের মতো। এগুলোতে শিক্ষক-কর্মচারী ৭৫ থেকে ৮০ হাজার। স্বীকৃতিপ্রাপ্ত এসব ননএমপিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারী দীর্ঘ ১৫-২০ বছর ধরে সরকারি প্রণোদনা ছাড়া চাকরি করছেন। এমপিওভুক্তির দাবিতে ননএমপিওভুক্ত মাধ্যমিক বিদ্যালয়, কলেজ, মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের এসব শিক্ষক-কর্মচারী আন্দোলনও করে আসছেন। এখন তাদের দাবি অনেকটাই পূরণ হতে চলছে বলা যায়। জানা গেছে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির খণ্ডিত তালিকা অনুমোদন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কতগুলো প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির জন্য প্রধানমন্ত্রী অনুমোদন দিয়েছেন সে বিষয়ে সুস্পষ্ট কোনো তথ্য জানাতে পারেনি শিক্ষা মন্ত্রণালয়। নতুন এমপিও নীতিমালা অনুসারে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির তালিকা চূড়ান্তকরণ এবং যোগ্য প্রতিষ্ঠানগুলোই এমপিওভুক্তির অনুমোদন পেয়েছে। তবে ১ হাজার ৭৯টি নতুন কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে এমপিওভুক্তির সম্মতির জন্য গত রবিবার প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে তালিকা পাঠিয়েছিল শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদ্রাসা বিভাগ। এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তিতে এখনো প্রধানমন্ত্রীর সম্মতি পায়নি। ফলে অপেক্ষাতেই থাকতে হচ্ছে কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের অধীনে থাকা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে। এসব শিক্ষক-কর্মচারীর বিষয়টি সুরাহা হওয়া দরকার। গতকালও বঞ্চিত শিক্ষকরা জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন। শিক্ষকরা এভাবে আন্দোলনে থাকলে শিক্ষার্থীরা নিশ্চিতভাবেই ক্ষতিগ্রস্ত হবে। ভবিষ্যতেও শিক্ষার্থীরা যাতে কোনোভাবে ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সে বিষয়টি কর্তৃপক্ষের যেমন তেমনি শিক্ষকদেরও বিবেচনায় রাখা প্রয়োজন বলে আমরা মনে করি। পারস্পরিক আলোচনার মাধ্যমে সরকার ও শিক্ষক সমাজ একটা যৌক্তিক অবস্থানে আসতে পারবে বলে আমরা বিশ্বাস করি। আমরা চাই, অনতিবিলম্বে উদ্ভূত সংকটের সমাধান হোক।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App