×

শিক্ষা

কবে চার্জশিট, কতদিন বর্জন ক্লাস-পরীক্ষা

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৬ অক্টোবর ২০১৯, ০৭:৩৬ পিএম

বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যা মামলার চার্জশিটভুক্ত আসামিদের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্থায়ী বহিষ্কারের দাবিতে অটল সাধারণ শিক্ষার্থীরা। বুধবার (১৬ অক্টোবর) ক্যাম্পাসে সব ধরনের সন্ত্রাস ও সাম্প্রদায়িক অপশক্তি রুখে দেয়ার শপথ নিয়ে মাঠের কর্মসূচির ইতি টানলেও ক্লাসে ফিরছেন না তারা।

শিক্ষার্থীরা এখন অপেক্ষা করবেন আদালতে মামলার চার্জশিট দাখিল করা এবং চার্জশিটে নাম থাকা আসামিদের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্থায়ী বহিষ্কারের ঘোষণা অবধি। এর আগে তারা কোনো ধরনের একাডেমিক কার্যক্রমে অংশ নেবেন না। ক্লাস, পরীক্ষাসহ সব ধরনের কার্যক্রম বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

যদিও আবরার হত্যা মামলার চার্জশিট দিতে কত সময় লাগতে পারে সে সম্পর্কে সুনির্দিষ্টভাবে কেউ জানাতে পারেননি। সে কারণে চার্জশিটের অপেক্ষায় শিক্ষার্থীরা কতদিন ক্লাসের বাইরে থাকবেন সেটাও নিশ্চিত নয়। আবরার হত্যাকাণ্ডের পর যে দশ দফা দাবিতে আন্দোলনে নামেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা, তাদের সেসব দাবির মধ্যে অন্যতম ছিল মামলার অভিযোগপত্র আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করার।

দশ দফার দাবির সম্পূরক হিসেবে আরো পাঁচদফা দাবিতে বুয়েট ক্যাম্পাস যখন উত্তাল তার মধ্যেই গত ১০ অক্টোবর সচিবালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল জানিয়েছিলেন, মামলার অভিযোগপত্র শিগগিরই দাখিল করা হবে। বলেছিলেন, তদন্ত কর্মকর্তারা কাজ করছেন।

তবে শিগগিরই বলতে মন্ত্রী সময়ের কত স্বল্পতা বুঝিয়েছেন সে সম্পর্কে প্রশ্ন করা হলে মন্ত্রী বলেছিলেন, খুব স্বল্পতম সময়ের মধ্যে এই মামলার পূর্ণাঙ্গ চার্জশিট দিতে পারবো। আমাদের পুলিশ কাজটি করছে, যাতে চার্জশিট নিখুঁত হয়, সমস্ত কিছু যেন নির্ভুল হয়।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুনির্দিষ্ট সময় উল্লেখ না করলেও নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে চার্জশিট দেয়া হবে বলে গত ১৩ অক্টোবর সাংবাদিকদের জানিয়েছেন পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) যুগ্ম কমিশনার মাহবুব আলম।

তদন্ত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের দেয়া তথ্য মতে, চার্জশিট দাখিল করতে এখনও তিন সপ্তাহ অপেক্ষা করতে হবে। এতদিন ধরে বুয়েটে ক্লাস-পরীক্ষা আর একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ থাকলে শিক্ষার্থীদের পড়ালেখা ব্যাহত হবে বলে মনে করছেন শিক্ষক, অভিভাবকরা। কেউ কেউ বলছেন, চার্জশিট দিতে আরো সময়ও লাগলে অপেক্ষা আরো বাড়তে পারে।

আন্দোলনে নেতৃত্বে থাকা এক শিক্ষার্থী বলেন, আমরা যে সময়ে আন্দোলন করেছি এসময় মূলত আমাদের ক্লাস পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য বন্ধ ছিল। আমাদের টার্ম ফাইনাল শুরু হওয়ার কথা ছিল ১৯ অক্টোবর। তাই, আমরা শুধু পরীক্ষায় অংশগ্রহণ না করে তা স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এসময় পরীক্ষার পরিবর্তে যদি ক্লাস থাকতো তবে হয়তো আমাদের সিদ্ধান্ত অন্যরকম হতে পারতো। কারণ এতগুলো ক্লাস বর্জন করলে আমাদের নিজেদেরই ক্ষতি হতো।

এ বিষয়ে শিক্ষকদের সঙ্গে কথা হয়েছে কি না জানতে চাইলে ওই শিক্ষার্থী বলেন, আমরা আমাদের সিদ্ধান্ত ছাত্র কল্যাণ পরিচালকের (ডিএসডব্লিউ) কাছে জানিয়েছি। তিনি আমাদের কথা শুনেছেন। তবে তিনি কোনো সিদ্ধান্ত জানান নি।

তথ্যমতে, চাঞ্চল্যকর আবরার হত্যা মামলায় এখন পর্যন্ত ১৯ অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এর মধ্যে ইফতি মোশাররফ সকাল, মেফতাহুল ইসলাম জিয়ন, অনিক সরকার ও মুজাহিদুর রহমান মুজাহিদ আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। এছাড়া অভিযুক্ত মেহেদি হাসান রাসেল, মুহতাসিম ফুয়াদ, মুনতাসির আলম জেমি, খন্দকার তাবাখখারুল ইসলাম তানভির ও ইশতিয়াক আহমেদ মুন্নাকে রিমান্ড শেষে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। আরো ৯ আসামি রয়েছেন রিমান্ডে।

এদিকে, আবরার হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার প্রমাণ মেলায় বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের সহসভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ ১১ জনকে গত ৭ অক্টোবর দল থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, গত ৬ অক্টোবর রাতে বুয়েটের শেরেবাংলা হলের ১০১১ নম্বর কক্ষ থেকে ডেকে নিয়ে পিটিয়ে হত্যা করা হয় বুয়েটের ১৭তম ব্যাচের ইলেকট্রিক অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের (ইইই) ছাত্র আবরার ফাহাদ। এ ঘটনায় আবরারের বাবা বরকত উল্লাহ বাদী হয়ে রাজধানীর লালবাগ থানায় ৭ অক্টোবর হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় ১৯ জনকে আসামি করা হয়।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App