×

জাতীয়

নতুন এমপিওভুক্তি নিয়ে গ্যাঁড়াকলে মন্ত্রণালয়

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৫ অক্টোবর ২০১৯, ১০:২৮ এএম

নতুন এমপিওভুক্তি নিয়ে গ্যাঁড়াকলে মন্ত্রণালয়
নতুন বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তি করতে গিয়ে গ্যাঁড়াকলে পড়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে এক দফা ফেরত আসার পর গত সেপ্টেম্বরের শেষ দিকে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বিভাগের অধীনে যে সব প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত হবে তার তালিকা প্রস্তুত করে ফের প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে পাঠায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়। কিন্তু গত ১৫ দিনেও সেই তালিকা চূড়ান্ত হয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে ফেরত আসেনি। কারিগরি ও মাদ্রাসা বিভাগের অধীনে যেসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত হবে সেটি নিয়ে আরো বেশি সমস্যা হচ্ছে। এসব প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করার জন্য তৈরি তালিকা প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকে দুই দুবার ফেরত আসার পর মন্ত্রণালয়ে এ পর্যন্ত ১৮ বার সংশোধন করা হয়েছে। সর্বশেষ গতকাল রবিবার ফের একটি তালিকা তৈরি করে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে পাঠানো হয়। কবে নাগাদ এই তালিকা ঘোষণা করা হবে তার উত্তর কেউ দিতে পারছেন না। এরকম পরিস্থিতিতে প্রশ্ন উঠেছে, নতুন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করতে মূল সমস্যাটা কোথায়? বারবার কেন এই তালিকার সংশোধন করতে হচ্ছে? কেন দফায় দফায় প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকে ফেরত পাঠিয়ে ‘ঠিকঠাক’ করে দিতে বলা হচ্ছে? জানা যায়, এমপিওভুক্তি চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশের আগে তালিকায় থাকা প্রতিষ্ঠানের গভর্নিং বডি অথবা পরিচালনা কমিটির ব্যাপারেও প্রয়োজনীয় খোঁজ নেয়া হচ্ছে। কারণ অনেক যোগ্য প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা পর্ষদ বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মীদের দখলে থাকার অভিযোগ আছে। আবার শিক্ষা প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে ঘাপটি মেরে আছে জামায়াতপন্থি কর্মকর্তারা। যদিও এ বিষয়ে কিছুই বলছে না শিক্ষা মন্ত্রণালয়। জানতে চাইলে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি গতকাল ভোরের কাগজকে বলেন, নতুন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির একটি নির্ভুল তালিকা প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে পাঠানো হয়েছে। তিনি যেদিন তালিকাটি চূড়ান্ত করবেন সেদিনই নতুন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির ঘোষণা দেয়া হবে। সেই ঘোষণা কি শিগগিরই হতে পারে, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে থাকায় এখনই দিন-তারিখ ঘোষণা করতে পারছি না। একাধিক সূত্র বলছে, ২০১৮ সালের এমপিও নীতিমালা অনুযায়ী প্রায় দুই হাজার ৭০০ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে এমপিওভুক্তির তালিকায় রাখা হয়েছিল। এসবের মধ্যে প্রায় ৫০০ নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়, এক হাজারের মতো মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ৬০টির বেশি স্কুল এন্ড কলেজ, শতাধিক উচ্চ মাধ্যমিক কলেজ, অর্ধশতাধিক ডিগ্রি ও অনার্স-মাস্টার্স কলেজ, ৫১২টি বিভিন্ন পর্যায়ের মাদ্রাসা এবং ৪৮৬টি কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। উল্লেখ্য, ২০১০ সালে সর্বশেষ এক হাজার ৬২৪টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করেছিল সরকার। এরপর শিক্ষকরা আন্দোলন করলেও শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়, বাজেটে অর্থ বরাদ্দ না থাকায় এমপিওভুক্তি সম্ভব হচ্ছে না। কঠোর আন্দোলনের মুখে এমপিও নীতিমালা ২০১৮ করা হয়। গত বছরের ৫ থেকে ২০ আগস্ট পর্যন্ত বেসরকারি স্কুল ও কলেজের কাছ থেকে অনলাইনে এমপিওভুক্তির আবেদন নেয়া হয়। এরপর মন্ত্রণালয় এমপিওভুক্তির জন্য যোগ্য প্রতিষ্ঠানের তালিকা করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একটি কমিটি। এরপর চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে পাঠানো হলেও নানা অসঙ্গতি থাকায় সেখান থেকে এখনও তালিকাটি অনুমোদন পায়নি। জানতে চাইলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (মাধ্যমিক-২) মো. জাবেদ আহমেদ ভোরের কাগজকে বলেছেন, এমপিওভুক্তির জন্য মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের তালিকা ঠিকঠাক করে দিন পনেরো আগে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে পাঠানো হয়েছিল। সেটি চ‚ড়ান্ত হয়ে এখনো ফেরত আসেনি। কেন বারবার সংশোধন এমন প্রশ্নের জবাবে কারিগরি ও মাদ্রাসা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন ও উন্নয়ন) এ কে এম জাকির হোসেন ভূঁঞা বলেছেন, আমি বলতে পারব না। আমার চাকরি আছে আর দুমাস। কোনোভাবে সময়টা পার করে বিদায় নিতে চাই।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App