×

মুক্তচিন্তা

কলুষমুক্ত হোক ক্রীড়াঙ্গন

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৪ অক্টোবর ২০১৯, ০৮:৩১ পিএম

দীর্ঘকাল ধরে ধুঁকছিল দেশের ক্রীড়া ক্লাবগুলো। ক্যাসিনো কেলেঙ্কারিতে এবার অস্তিত্বই সংকটের মুখে। আগামী মৌসুমে খেলা মাঠে গড়াবে কিনা, তা নিয়ে এখন ঘোর সংশয় দেখা দিয়েছে। এর থেকে উত্তরণের পথ আমাদের বের করতে হবে। সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে চলমান শুদ্ধি অভিযানে ধরা পড়ছে ক্রীড়াঙ্গনের রাঘববোয়ালরা। ঢাকার ফকিরাপুল ইয়ংমেন্স ক্লাব, ওয়ান্ডারার্স, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ক্রীড়া চক্র এবং কলাবাগান ক্রীড়া চক্র, ভিক্টোরিয়া স্পোর্টিং ক্লাব, আরামবাগ ক্রীড়া সংঘ, দিলকুশা স্পোর্টি ক্লাব এমনকি মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব, চট্টগ্রামের আবাহনী লিমিটেড, মোহামেডান ও মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ক্লাবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী অভিযান চালিয়ে উদ্ধার করেছে ক্যাসিনোর বিপুল সরঞ্জাম। ক্যাসিনো, হাউজি এবং ওয়ানটেনের মতো জুয়ার উন্মাতাল নাটক মঞ্চায়িত হতো ক্লাবের অভ্যন্তরে। খেলোয়াড়দের ঘর পরিণত হয়েছে জুয়াড়ির আস্তানায়। রাত গভীর হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়ত জুয়াড়ির সংখ্যাও। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাদের হাতেনাতে ধরেছে। তাতে প্রমাণ মেলে, ক্লাবগুলো মাঠের খেলা ছাড়িয়ে হয়ে উঠেছিল জুয়ার আখড়া। আরো ভয়ঙ্কর ব্যাপার হলো, ক্রীড়া ক্লাবগুলোর এই ক্যাসিনো ক্লাবে রূপান্তর সংগঠকদের প্রশ্রয়ে; তাদের সরাসরি তত্ত্বাবধানে। এসব ক্যাসিনো থেকে প্রতি রাতে কোটি কোটি টাকা উড়ত ঢাকার বাতাসে। প্রশাসন, রাজনৈতিক নেতা এমনকি গণমাধ্যমের লোকজন ভাগ-বাটোয়ারা নিতো বলে বিভিন্ন তথ্যে বেরিয়ে এসেছে। খেলাধুলা নৈতিক অবক্ষয় থেকে রক্ষা করে যুবসমাজকে। আর এই সুন্দর জগৎটা যদি হয়ে ওঠে জুয়াড়ি, গুণ্ডা, মাস্তান ও খুনিদের আখড়া তাহলে জাতির ভবিষ্যৎ কী হতে পারে চিন্তা করলে যে কারো শিউরে ওঠার কথা। বর্তমান ও আগামী প্রজন্মের জন্য এটা বড় একটা ধাক্কা, হুমকি ও চ্যালেঞ্জ। সবার জানা, যুগ যুগ ধরে ক্লাবগুলোর কল্যাণেই দেশ পেয়েছে তারকা খেলোয়াড়দের। যাদের নৈপুণ্যে বিশ্ব চিনেছে বাংলাদেশকে। জেনেছে বাংলাদেশের গৌরবান্বিত অধ্যায়। দেশের খেলাধুলার সূতিকাগার ক্লাবগুলোই। কোনো কোনো ক্লাব এখন দাঁড়িয়ে আছে শতবর্ষের সাক্ষী হয়ে। যুগে যুগে তারকা খেলোয়াড় তৈরি করে আজ তারা ব্যাপক পরিচিত। ক্লাবগুলোর এই দুরবস্থার জন্য দায়ী কাকে করবেন? ক্লাবগুলো কীভাবে রক্ষা করা যায় তা নিয়ে ভাবনার সময় এসেছে। ক্রীড়া সংগঠকরা বলছেন, এই অবস্থা শুধু বড় ক্লাবগুলোতে নয়, বিভিন্ন পাড়া-মহল্লায় গড়ে ওঠা খেলাধুলার ক্লাবগুলোতেও একই অবস্থা। ফলে ক্লাব সংস্কৃতি নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে নেতিবাচক মনোভাব গড়ে উঠেছে। ক্যাসিনো মাফিয়াদের খপ্পর থেকে ক্রীড়াঙ্গনকে মুক্ত করতে হলে ক্লাবগুলোকে রাজনীতিমুক্ত করতে হবে। ত্যাগী সংগঠকদের স্থান ছেড়ে দিতে হবে। আমরা চাই না কিছু মানুষের জন্য ক্রীড়াঙ্গন কলুষিত হোক। যারা এই অপকর্মের সঙ্গে জড়িত তাদের বিচার হওয়া উচিত। আইন পরিবর্তন করে ক্লাবগুলোকে ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের অধীনে নিয়ে আসার কথাও ভাবতে পারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App