×

জাতীয়

বছর পেরোতেই চুপসে গেছে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৩ অক্টোবর ২০১৯, ১১:১০ এএম

বছর পেরোতেই চুপসে গেছে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট
বছর পেরোতে না পেরোতেই চুপসে গেছে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। নেই কোনো কর্মসূচি, সাংগঠনিক তৎপরতা। উদ্যোগ নেই ঐক্য ধরে রাখারও। উল্টো শরিকদের কর্মকাণ্ডে ঐক্যে ফাটল ধরেছে। ঐক্য ভেঙে চলে গেছেন কেউ কেউ। তবে শীর্ষ নেতারা এখনো আশাবাদী। অধিকার আদায়ে শিগগিরই নতুন কর্মসূচিরও আশ্বাস দিয়েছেন তারা। একগুচ্ছ কর্মসূচি নিয়ে রাজপথে সক্রিয় হওয়ারও চেষ্টা করছে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। সংশ্লিষ্টরা এসব তথ্য জানিয়েছেন। বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি, নিরপেক্ষ গ্রহণযোগ্য নির্বাচনসহ ৭ দাবি ও ১১টি লক্ষ্য নিয়ে বিএনপি, গণফোরাম, জেএসডিসহ কয়েকটি রাজনৈতিক দলের সমন্বয়ে গত বছরের ১০ অক্টোবর গঠিত হয় জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। এরপর জোটগতভাবে একক প্রতীকে গত বছরের ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেন জোটের নেতারা। বিতর্কিত নির্বাচনের পর তা বাতিলের দাবিও জানিয়েছিল জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট, কিন্তু এ নিয়ে রাজপথে সক্রিয় ছিল না। আনুষ্ঠানিকভাবে মতিঝিলে ড. কামাল হোসেনের অফিসে শুধু কিছু অসমাপ্ত বৈঠক করেছে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। এ পরিস্থিতিতে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শরিক কৃষক-শ্রমিক-জনতা লীগসহ কয়েকটি দল অসন্তোষ প্রকাশ করে। ভোট কারচুপির অভিযোগে একাদশ নির্বাচনের ফল বর্জন করা ঐক্যফ্রন্টের সিদ্ধান্ত ছিল সংসদে না যাওয়ার। কিন্তু শরিকদের না জানিয়ে প্রথমে গণফোরাম ও পরে বিএনপির সাংসদরা শপথ নেন। গণফোরাম ও বিএনপির এমন সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্ন তোলেন বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী। প্রত্যাশিত উত্তর না পেয়ে গত ৮ জুলাই জোট ছাড়েন তিনি। ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে বিএনপির কার্যক্রম মেনে নিতে না পেরে আলাদা মুক্তিমঞ্চের ঘোষণা দেন ২০ দলীয় জোটের নেতা এলডিপির সভাপতি কর্নেল (অব.) অলি আহমদ। এরপর থেকেই জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রধান নেতা ড. কামাল হোসেনের ভূমিকা ও সিদ্ধান্ত নিয়ে সন্দেহ বাড়তে থাকে। কেউ কেউ বলেন, ড. কামাল বিএনপিকে কৌশলে নির্বাচনে নিয়ে সরকারের শিখিয়ে দেয়া অ্যাজেন্ডা বাস্তবায়ন করেছে। এ নিয়ে বিএনপিতেও মতানৈক্য দেখা দেয়। এই জোটের ব্যাপারে আগ্রহ হারিয়ে ফেলে বিএনপি। বিএনপির মনোভাব বুঝতে পেরে গণফোরামও একলা চলো নীতিতে হাঁটতে শুরু করে। এরপর নিজেদের অবস্থান আরো স্পষ্ট করে বিএনপি। ঐক্যফ্রন্টের ভরসায় না থেকে গত জুলাই থেকে দল গোছাতে শুরু করে বিএনপি। খালেদা জিয়ার মুক্তি ও নতুন নির্বাচনের দাবি নিয়ে এককভাবেই সভা-সমাবেশ করেছে দলটি। এ বিষয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ^র চন্দ্র রায় বলেন, বিএনপি এখন নিজেদের শক্তি সঞ্চয় করার বিষয়ে গুরুত্ব দিচ্ছে। কারোর ওপরে ভরসা করে পথচলা বিএনপির মতো একটি রাজনৈতিক দলের সাজে না। তাই আপন শক্তিতে গর্জে ওঠা ছাড়া বিএনপির সামনে আর কোনো পথ খোলা নেই। অন্যদিকে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শরিক দলগুলোর মধ্যে দূরত্ব কমাতে গত ৪ সেপ্টেম্বর গুলশানে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. মঈন খানের বাসায় তিন প্রভাবশালী দেশের কূটনীতিকদের সঙ্গে বৈঠক করেন ফ্রন্টের শীর্ষ নেতারা। বৈঠকের পর নেতারা দাবি করেন- ঐক্যফ্রন্টের সব কার্যক্রম সচল রয়েছে। ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে ২৮ সেপ্টেম্বর ড. কামালের মতিঝিল চেম্বারে বৈঠক করেন তারা। বৈঠক শেষে খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে গণমাধ্যমে একটি বিবৃতিও দেয়। এরপর গত ৯ অক্টোবর জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের সভাপতি আ স ম আবদুর রবের বাসায় বৈঠক করে ঐক্যফ্রন্ট। আজ রবিবার বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সমাবেশ করবে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। সূত্র জানায়, জাতীয় ঐক্যফ্রন্টকে দুর্বল করার ষড়যন্ত্র ঠেকাতে তৎপর হয়েছেন জোটের নেতারা। পাশাপাশি ঐক্যফ্রন্টের মাধ্যমে সরকারবিরোধী জনমত গড়ে তোলার পরিকল্পনা করছেন তারা। এর অংশ হিসেবে একগুচ্ছ কর্মসূচি নিয়ে রাজপথে নামবে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। এর অংশ হিসেবে ২৯ অথবা ৩০ ডিসেম্বর ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশের প্রস্তুতি নিচ্ছে। এ ছাড়া ঢাকার বাইরে বিভাগীয় শহরগুলোতেও পর্যায়ক্রমে সমাবেশের চিন্তা করছেন ঐক্যফ্রন্ট নেতারা। এ বিষয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, ঐক্যফ্রন্টে কোনো দূরত্ব নেই। সময়মতো যৌথ কর্মসূচি আসবে। নাগরিক ঐক্যের আহবায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, নানা কারণে বেশ কিছু দিন জোটের কর্মসূচি ছিল না। সময় হলেই কর্মসূচি নিয়ে আসব।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App