ঐক্যফ্রন্টের শোক র্যালি পুলিশি বাধায় পণ্ড
কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৩ অক্টোবর ২০১৯, ০৬:৪০ পিএম
আবরার ফাহাদের হত্যার প্রতিবাদে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নাগরিক শোক মিছিল পণ্ড করে দিয়েছে পুলিশ। রবিবার (১৩অক্টোবর) বিকাল ৫টা ১০ মিনিটে ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে শান্তিপূর্ণ শোক র্যালিটি জাতীয় প্রেসক্লাবের দ্বিতীয় গেইট দিয়ে একশ গজ দুরে গেলেই পুলিশ ব্যারিকেড দিয়ে আটকে দেয়। প্রায় ৬/৭ মিনিট কালো পতাকা হাতে র্যালির নেতা-কর্মীরা স্লোগান দিতে থাকে। এরপরই পুলিশ নেতা-কর্মীদের ভেতরে প্রবেশ করে তাদের সরিয়ে দেয়।
এ সময়ে জেএসডি প্রধান আ স ম আবদুর রব ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, এখানে আমাদের শান্তিপূর্ণ র্যালি পুলিশ যেতে রাস্তা বন্ধ করে দিয়েছে। সরকারের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, রাস্তা বন্ধ করে দিয়েছেন। সারা বাংলাদেশের ঘর থেকে বের হলে রাস্তা বন্ধ করবেন কিভাবে? প্রত্যেকের ঘর থেকে বের হবে, সব পুলিশ, আর্মি, নেভিরা ঘর থেকে বের হবে।
তিনি বলেন, পুলিশ বাহিনী সদস্যদের বলছি, আপনার ঘরের মা-বোনদের জিজ্ঞাসা করেন তারা বিক্ষুব্ধ কি না? আমরা এভাবে আমাদের শান্তিপূর্ণ র্যালির চলার পথ বন্ধ করার তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানাচ্ছি।
জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের এই নাগরিক শোক র্যালিটি কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে গিয়ে শেষ হওয়ার কথা ছিলো। এর আগে জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে র্যালি পূর্ব এক সমাবেশে ফ্রন্টের পক্ষ থেকে নাগরিক ঐক্যের আহবায়ক মাহমুদুর রহমান আবরার হত্যার প্রতিবাদে আগামী ১৮ অক্টোবর ঢাকায় উন্মুক্ত স্থানে বৃহৎ আকারে শোকসভার নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
তিনি বলেন, আমরা আগামী ১৮ অক্টোবর ঢাকায় মহানগরের কোনো জায়গায় আবরারের মৃত্যুতে জাতীয় শোকসভা করবো। এটা সোহরাওয়ার্দি উদ্যানে হতে পারে, এটা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারেও হতে পারে। আমরা সভার জন্য অনুমতি চাইবো। আমরা সভা করতে চাই।
আপনারা নিজেদের যা যা মাধ্যম আছে- সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম আছে, ঢাকা মহানগরের কোটি কোটি মানুষ আছে তাদের প্রত্যেকের কাছে খবর দিতে হবে ১৮ অক্টোবর ঢাকা মহানগরে জাতীয় শোকসভা হবে। এটাই আমাদের প্রধান কর্মসূচি।
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আবরার হত্যার প্রতিবাদে পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট এই নাগরিক শোক র্যালি বের করে। কয়েকশ নেতা-কর্মীরা কালো ব্যাজ ধারণ করে শোক র্যালিতে অংশ নেয়। সেখানে পুলিশ কর্মকর্তারা এসে ফ্রন্টের নেতা আ স ম আবদুর রব, মাহমুদুর রহমান মান্নাকে বলেন, স্যার র্যালি করা যাবে না। নেতারা বলেন, আমরা শোক র্যালি করব।
শোক র্যালিতে ড. কামাল হোসেন নিজের গাড়ীতে সামনের সিটে বসে এই র্যালিতে অংশ নেন। তার গাড়ির সামনে কালো পতাকা ঝুলানো ছিলো। পুলিশ র্যালিটি পন্ড করে দেবার পর ড. কামাল হোসেনকে বহন করা গাড়িটি চলে যাওয়ার ব্যবস্থা করে দেয় তারা।
এছাড়া শোক মিছিলে বিএনপির ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, শ্যামা ওবায়েদ, জেএসডির তানিয়া রব, আবদুল মালেক রতন, শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন, গণফোরামের আবু সাইয়িদ, সুব্রত চৌধুরী, মোশতাক আহমেদ, লতিফুল বারী হামিম, নাগরিক ঐক্যের এসএম আকরাম, শহীদুল্লাহ কায়সার, গণস্বাস্থ্য সংস্থার ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, বিকল্প ধারা অধ্যাপক নুরুল আমিন ব্যাপারী, শাহ আহমেদ বাদল, গণদলের এটিএম গোলাম মাওলা চৌধুরী প্রমূখ নেতারা ছিলেন।
এর আগে জাতীয় প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে র্যালি পূর্ব সমাবেশ হয়। ২০১৮ সালের ১৩ অক্টোবর বিএনপিসহ ৫ টি রাজনৈতিক দলকে নিয়ে ড. কামাল হোসেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠন করেন। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালনে আলোচনা সভা করা কথা থাকলেও আবরার হত্যাকান্ডের ঘটনায় প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী এই আলোচনা সভা বাদ দিয়ে তারা নাগরিক শোক র্যালি করে।