×

অর্থনীতি

এনবিআর ট্রান্সপারেন্ট হলে সব অফিসই ট্রান্সপারেন্ট হবে

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৩ অক্টোবর ২০১৯, ০৬:২৬ পিএম

এনবিআর ট্রান্সপারেন্ট হলে সব অফিসই ট্রান্সপারেন্ট হবে

রোববার (১৩ অক্টোবর) রাজস্ব বোর্ডের কনফারেন্স রুমে কমিশনারদের সঙ্গে অর্থমন্ত্রী

বিভিন্ন খাতে রাজস্ব অব্যহতি, নতুন ভ্যাট আইন জঠিলতা, প্রায় ৪ কোটি করযোগ্য মানুষ করের আওতার বাইরে থাকা, ক্যাপিটাল মেশিনারিজ আমদানি বেড়ে যাওয়া, ট্যারিফ রেট সংশোধনকে চলতি অর্থবছরের প্রথম ২ মাসের রাজস্ব ঘাটতির অজুহাত হিসেবে উপস্থাপন করলেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) এর কর্মকর্তারা। তারা বলছেন, এছাড়া গত ঈদের লম্বা ছুটির কারণে প্রায় ১০ দিন আমদানি রপ্তানিসহ সার্বিক কার্যক্রম বন্ধ থাকায় এর প্রভাব পড়েছে আমদানি-রপ্তানিতে। তবে এসব অজুহাত পরবর্তী বৈঠকে মানতে নারাজ অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। এনবিআর ট্রান্সপারেন্ট হলে দেশের সব অফিস ট্রান্সপারেন্ট হবে বলেও মন্তব্য করেন অর্থমন্ত্রী।

রোববার (১৩ অক্টোবর) রাজধানীর সেগুন বাগিচায় রাজস্ব বোর্ডের কনফারেন্স রুমে কমিশনারদের সঙ্গে অর্থমন্ত্রীর আলোচনায় এসব বিষয় উঠে আসে। এই সভায় সভাপত্বি করেন এনবিআর চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন ভুইয়া। এ সময় এনবিআরের কাস্টমস, ভ্যাট এবং কর কমিশনাররা উপস্থিত ছিলেন।

আয়কর খাতে রাজস্ব আদায়ের বিষয়ে বক্তব্য রাখেন এনবিআর সদস্য (কর প্রশাসন) কালীপদ হালদার। তিনি বলেন, আমাদের বিরাট একটা অংশ ইনফরমাল ইকোনমিতে আছেন। যার কারণে আমাদের এসব মানুষকে ট্রেস করতে পারছিনা আর তা পারা সম্ববও না। যার কারণে এখনও অনেক মানুষ কর আওতার বাইরে রয়েছেন। এই কারণে আয়কর খাতে রাজস্ব আদায় কমেছে।

ভ্যাট বাস্তবায়নের দায়িত্বপ্রাপ্ত এনবিআর সদস্য জামাল হোসেন বলেন, চলতি অর্থবছরে ভ্যাট আইন বাস্তবায়ন হয়েছে। প্রথমে এই বিষয়ে ব্যবসায়ীদের পাশাপাশি আমাদের অফিসারদের মাঝে একটা মানষিক অশান্তি বিরাজ করতো। তবে এই কয়েকমাসে অফিসারদের পাশাপাশি ব্যবসায়ীরা নতুন আইনকে গ্রহন করেছেন। ইতিমধ্যে ইফডি মেশিন প্রক্রিউরমেন্ট প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। ইএফডি বাস্তবায়ন হলে আমরা ভ্যাট আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে সক্ষম হবো। আমদানি-রপ্তানিতে রাজস্ব আদায়ের বিষয়ে বক্তব্য রাখেন চট্রগ্রাম কাস্টমস হাউসের কমিশনার ফখরুল আলম। তিনি বলেন, চট্রগ্রাম কাস্টমসের লক্ষ্যমাত্রা ৬৩ হাজার ১৬৮ কোটি টাকা। যা কাস্টমসের মোট লক্ষ্যমাত্রার ৬৩ শতাংশ। চলতি অর্থবছরের প্রথম মাসে ভালো হলেও আগষ্টে কমেছে। এর কারণ হিসেবে তিনি বলেন, ট্যারিফ সংশোধন হওয়ায় শুল্কহার কমেছে। এছাড়াও চলতি অর্থবছরে ক্যাপিটাল মেশিনারিজ আমদানি বেড়েছে, বড় বড় মেঘা প্রকল্পের পণ্য ডিউটি ফ্রি যাচ্ছে। আগে এডিবল অয়েল আমদানি হতো এখন দেশে দুটি কোম্পানি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। যারা এডিবল অয়েলের র মেটিরিয়েল বীজ আমদানি হয় বিদেশ থেকে। আর বীজে কোন ডিউটি নেই। এসব কারণে ভলিউম বাড়লেও রাজস্ব আদায় ঐহারে বাড়ে নাই।

তবে রাজস্ব ঘাটতিতে এসব অজুহাত পরবর্তীতে মানতে নারাজ অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। তিনি বলেন, এখন যেভাবে কেন রাজস্ব আদায় কম হয়েছে শুনেছি। আবার মিটিং এ বসলে এসব অজুহাত আর চলবে না। এনবিআরের কামিশনারদের উদ্যেশে অর্থমন্ত্রী বলেন, আপনারা বাজেট ভালোভাবে পড়েন। এ বছর লক্ষ্যমাত্রা কাটছাট হয়েছে আগামীতে আর তা হবে না। বাজেটে যা লেখা আছে হুবহু বাস্তবায়ন করতে হবে। এজন্য এনবিআরে জনবল লাগলে প্রয়োজনে এক লাখ জনবল দেব। কিন্ত আমি বাকীতে বিশ্বাসী নই, এবারে লক্ষ্যমাত্রা অর্জন হয় নাই, আগামীতে হবে। এনবিআর চেয়ারম্যানের উদ্ধৃতি দিয়ে মন্ত্রী বলেন, এখনো ৪ কোটি করযোগ্য মানুষ করের আওতার বাইরে রয়েছেন। তাদের প্রথমে ভালোভাবে বুঝাবেন। যদি তারা না শোনের তাহলে আমরা কঠোর হব। আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে। এছাড়া এনবিআরের কমিশনারদের সৎভাবে দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি দেশের সরকারি কর্মকর্তা ও কর্মচারির বেতন আর্নি এর একমাত্র প্ল্যাটফর্ম যে রাজস্ব বোর্ড তা স্মরণ করিয়ে দেন।

মন্ত্রী আরো বলেন, এনবিআর ট্রান্সপারেন্ট হলে দেশের সব অফিস ট্রান্সপারেন্ট হবে। এনবিআরে অভিযোগ ও পরামর্শ বক্স নামে দুটি বক্স এনবিআরে টানানোর নির্দেশ দেন অর্থমন্ত্রী। প্রতি ১৫ দিন পর পর এই বক্স খোলা হবে। অভিযোগ ও পরামর্শ কি এসেছে দেখা হবে। তিনজন কর্মকর্তা এর দায়িত্বে থাকবেন। আর বাইরে যে এনবিআরের প্রতি মানুষের ভয় ও নেতিবাচক আছে তা দুর করতে হবে এনবিআরে যারা কা করেন তাদেরই।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App