×

জাতীয়

আত্মহত্যার প্রবণতা বাড়ছে গুরুদাসপুরে

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৩ অক্টোবর ২০১৯, ১২:৪৭ পিএম

আত্মহত্যার প্রবণতা বাড়ছে গুরুদাসপুরে
অপরিনত বয়সে প্রেম, বাল্য বিবাহ, মাদক, পারিবারিক কলহ, পরকীয়া, মানষিক অসুস্থ্যতাসহ বিভিন্ন কারনে নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলায় গত ৮ মাসে নারী-পুরুষসহ মোট ২৯ জন আত্মহত্যা করেছে। সম্প্রতি এক পরিসংখ্যানে দেখা যায় নাটোর জেলার ৬টিঁ উপজেলার মধ্যে গুরুদাসপুরে আত্মহত্যার প্রবণতাই বেশী। গুরুদাসপুর থানা সূত্রে জানাযায়, গত ৩০জানুয়ারী ২০১৯ হতে ৯ অক্টোবর-১৯ ইং পর্যন্ত মোট ৩১ টি ইউডি মামলা হয়েছে। এদের মধ্যে ২৭ জনই আত্মহত্যা করেছে। বাকি ৫ জন কেউ বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট কেউ পানিতে পড়ে মৃত্যু বরণ করেছে। এর মধ্যে ১৩ জন পুরুষ ও ১৪ জনই নারী। শিশু কিশোর থেকে শুরু করে বৃদ্ধ,যুবক পর্যন্ত ওই আত্মহত্যার তালিকায় রয়েছে। গলায় ফাঁস নিয়ে আত্মহত্যা করেছে ১১ জন এবং বিভিন্ন কিটনাশক বা গ্যাস ট্যাবলেট খেয়ে আত্মহত্যা করেছে ১৪ জন। গত ২৪ আগস্ট উপজেলার গুপিনাথপুর গ্রামে হৃদয় বিদারক একটি ঘটনা ঘটে। মৃত্যুর আড়াই মাস আগে প্রেম করে বিয়ে হয় মোঃ হাসান (১৯) ও সপ্নার (১৫) । আড়াই মাস খুব ভালই চলছিলো সংসার। হঠাৎ করেই একদিন রাতে দুজনের মধ্যে মান অভিমানে দুজনই গ্যাস ট্যাবলেট খেয়ে আত্মহত্যা করে। অপর দিকে উপজেলার মশিন্দা ইউনিয়নের বড় হাসমারি গ্রামে স্কুল ড্রেস পেতে দেরি হওয়ায় আত্মহত্যা করে পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্রী রঞ্জনা খাতুন। ভাইয়ের উপর অভিমান করে আত্মহত্যা করে উপজেলার দরিহাসমারী গ্রামের ৬ষ্ঠ শ্রেণীর ছাত্রী সবিতা খাতুন। বিয়ের দাবিতে প্রেমিকের বাড়িতে প্রেমিকার অবস্থান। এক পর্যায়ে আত্মহত্যা করলো প্রেমিক সোহাগ। মানষিক অসুস্থতার কারনেও আত্মহত্যার করেছে কয়েকজন। পারিবারিক কলহ, পরকীয়াসহ আরো বিভিন্ন কারনে আত্মহত্যা করেছে অনান্যরা। আত্বহত্যাকারি কয়েকটি পরিবারের সাথে সরেজমিন দৈনিক ভোরের কাগজ প্রতিনিধির কথা হলে তারা জানায়,মোবাইল ফোনের মাত্রারিক্ত ব্যাবহার,এক রোখা মানষিকতা, যৌতুক ,বাল্যবিবাহ, পরকীয়া, স্বামী-স্ত্রীর মনোমালিন্য, ব্যর্থতা, পরীক্ষায় খারাপ ফলাফলসহ নানা কারণে সংগঠিত হয় এসব আত্মহত্যার মত মর্মান্তিক ঘটনা। আত্মহত্যার বিষয়ে গুরুদাসপুর থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) মোহাম্মদ আনারুল ইসলাম বলেন, আত্মহত্যা বন্ধ করতে হলে প্রথমে পরিবারকে এগিয়ে আসতে হবে। কেননা পরিবারের শিশু কিশোররা যদি বাবা মার সাথে ফ্রি না হয় তাহলে তাদের কষ্টগুলো শেয়ার করতে পারে না। ফলে বুকের ভিতর চাপা কষ্ট রেখেই তারা আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়। বেশির ভাগ সময়ে কীটনাশক জাতীয় গ্যাস ট্যাবলেট খেয়েই আত্মহত্যা করছে তারা। বাজারে এসকল ট্যাবলেট সহজলভ্য হওয়ার কারণেও বাড়ছে আত্মহত্যার প্রবনতা। সচেতনতামুলক কর্মসূচী দিয়েও ঠেকানো যাচ্ছে না আত্মহত্যার মত ঘটনা। উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ তমাল হোসেন বলেন, আমরা প্রতিনিয়ত উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বাল্য বিয়ে, মাদক, ইভটিজিং, আত্মহত্যার বিষয়ে জনসচেতনতামুলক পোগ্রাম প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ও গ্রাম এলাকায় করে থাকি। আত্মহত্যার প্রবণতা কমাতে প্রথমত এগিয়ে আসতে হবে প্রতিটি পরিবারকে। সন্তানদের সাথে সব সময় বন্ধু সুলভ আচরন করতে হবে। কখনও তাদের মতের বিরুদ্ধে জোর করে কিছু করা যাবে না। কারণ কিশোর বয়সে অধিকাংশ ছেলে মেয়েরাই থাকে অত্যন্ত আবেগ প্রবণ। সব সময় তাদের সাথে সহনশীল আচরণ করতে হবে। ৮০ ভাগ ভালবাসা এবং ২০ভাগ শাসন দিয়ে সন্তানদের মানুষ করতে হবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App