×

জাতীয়

ক্যাসিনো খালেদের সেই ১১ সহযোগী কারা?

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১১ অক্টোবর ২০১৯, ১১:১১ এএম

ক্যাসিনো খালেদের সেই ১১ সহযোগী কারা?
ক্যাসিনোকাণ্ডের অন্যতম পৃষ্ঠপোষক যুবলীগ নেতা খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়া গ্রেপ্তারের পর তার অনেক সহযোগীর নাম উঠে আসছে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদেও অনেকের নাম পাওয়া গেছে। তবে এখনো ভয়ে কেউ প্রকাশ্যে মুখ না খুললেও রাজধানীর দেয়ালে দেয়ালে দেখা যাচ্ছে দক্ষিণ যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক পদ থেকে বহিষ্কৃত খালেদের ১১ সহযোগীর নাম ও কুকীর্তির বর্ণনা সংবলিত পোস্টার। তারা হলেন উজ্জল, অংকুর, কিসলু, সজীব, রনি, ছিনতাই কবীর, রিজবী হাসান ওরফে রিজভী, রইছ, সাধু, সেলিম ও পল্টি রিপন। পোস্টারে লেখা রয়েছে প্রচারে শাহজাহানপুর, খিলগাঁও, রামপুরা, বনশ্রী, বাসাবো, শান্তিনগর, মতিঝিল, মাদারটেক, মুগদা ও কমলাপুরের সর্বস্তরের জনগণ। এখন প্রশ্ন উঠেছে পোস্টারে খালেদের ওই ১১ সহযোগী আসলেই কারা। তাদের মদদেই কি খালেদ গড়েছিল ত্রাসের রাজত্ব। তবে র‌্যাব বলছে তারা বিষয়টি খতিয়ে দেখছেন। খালেদের অন্যতম সমন্বয়কারী ও সহযোগী হিসেবে এসেছে কিসলুর নাম। সেখানে বলা হয়েছে তিনি গৃহায়ন ও গণপূর্ত অধিদপ্তরের নিয়ন্ত্রণসহ খালেদের অস্ত্র ভাণ্ডারের মজুদকারী। এসেছে রামপুরা বনশ্রী ক্রিস্টাল কেবলের আলোচিত ৩ খুনের প্রধান আসামি রইছের নাম। খালেদের আশীর্বাদে বনশ্রী, পূর্ব ও পশ্চিম রামপুরা এলাকায় চাঁদাবাজি-টেন্ডারবাজি এবং ইয়াবা ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন খালেদের অস্ত্রধারী এ ক্যাডার। তবে রইছ পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। খালেদের আরেক বিশ্বস্ত সহযোগী সেলিমের নামও এসেছে পোস্টারে। বর্তমানে ৮নং ওয়ার্ড যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক তিনি। তাকে দিয়ে খিলগাঁও বাজার মুক্তি সংঘ মাঠের বেদখল দোকানপাট ও ক্যাসিনো থেকে চাঁদা উত্তোলন করাতেন খালেদ। মহাখালী আওয়ামী লীগ নেতা সিদ্দিক হত্যা মামলার আসামি খালেদের অন্যতম একজন ক্যাডার সেলিম। রয়েছে খালেদের আরেক ক্যাডার অংকুরের নাম। পোস্টারে বলা হয়েছে মেয়েদের দিয়ে দেহ ব্যবসা করাতেন তিনি। এ ছাড়াও খালেদের নির্দেশে শাহজাহানপুর এলাকার ফ্ল্যাট দখল করতেন অংকুর। তার কাছেও অস্ত্রভাণ্ডার রয়েছে। রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের সব টেন্ডারবাজি অস্ত্রের মাধ্যমে ছিনিয়ে নিতেন খালেদের ক্যাডার উজ্জল। খালেদকে গ্রেপ্তারের পরে তার এ ক্যাডার খিলগাঁও লেগুনা গাড়ির স্ট্যান্ড ও ফুটপাতের ফলের দোকান থেকে চাঁদা উত্তোলন করছিলেন বলে পোস্টারে বলা হয়েছে। তার আরেক ভয়ঙ্কর সহকারী রিজবী হাসান ওরফে রিজভী। খালেদের সব টেন্ডার ও চাঁদাবাজি, অপকর্মের সাহায্যকারী। তিনি সব সরকারি-বেসরকারি, ব্যক্তিমালিকানা প্রতিষ্ঠান সশস্ত্র বাহিনী নিয়ে অস্ত্র মহড়া দিতেন। এ ছাড়াও নিজস্ব টর্চার সেলে ধরে নিয়ে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে চাঁদা নিতেন। জাল টাকার ব্যবসায়ীও ছিলেন তিনি। পোস্টারে এসেছে ২০০৭ সালে স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা হত্যা মামলার অন্যতম আসামি পল্টি রিপন। খালেদের আরো একজন অস্ত্র বহনকারী ক্যাডার বাহিনীর একজন তিনি। খিলগাঁও, শাহজাহানপুর ও বাসাবো এলাকায় ছিনতাই করতেন কবীর। মহাখালী আওয়ামী লীগের নেতা সিদ্দিক হত্যা মামলার আসামিদের একজন তিনি। খিলগাঁও বাগিচা পানির পাম্পের টর্চার সেলে কবিরকে দিয়ে কাজ করাতেন খালেদ। অস্ত্রধারী ক্যাডার কবীর খালেদের হয়ে ইয়াবা ব্যবসা পরিচালনা করেছেন বলে অভিযোগ করা হয়। চাঁদা ও টেন্ডারবাজি এবং খালেদের সব সন্ত্রাসী কাজের সহযোগী সাধু। অত্যাধুনিক অস্ত্রও রয়েছে তার কাছে। রয়েছে বিভিন্ন চাঁদাবাজি ও হত্যা মামলার আসামি রনি ও সজীবের নাম। এদিকে এলাকাবাসী ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সূত্রে জানা গেছে, পোস্টারের রইছসহ সবার বিরুদ্ধেই অভিযোগের সত্যতা রয়েছে। খালেদের ত্রাসের ভয় তার গ্রেপ্তারের পরেও রয়ে গেছে। তাই এ পন্থা বেছে নেয়া হয়েছে। এ বিষয়ে র‌্যাব-৩ এর কমান্ডিং অফিসার লে. কর্নেল শফিউল্লাহ বুলবুল ভোরের কাগজকে বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দৃষ্টি আকর্ষণ বা অপপ্রচার দুটি দিকই বিবেচনায় নিয়ে তারা বিষয়টি খতিয়ে দেখছেন। ১১ জনের বিরুদ্ধে দেয়া তথ্য মিলিয়ে দেখা হচ্ছে। এ ছাড়াও খালেদের অন্য সদস্যদেরও গ্রেপ্তারে কাজ করছেন তারা।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App