×

জাতীয়

চুক্তি বাতিল করে ফাহাদের পক্ষে প্রমাণ দিন: রিজভী

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৯ অক্টোবর ২০১৯, ০৩:০৪ পিএম

চুক্তি বাতিল করে ফাহাদের পক্ষে প্রমাণ দিন: রিজভী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্দেশ্যে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, প্রধানমন্ত্রীকে বলবো-জাতীয় স্বার্থবিরোধী চুক্তির প্রতিবাদ করতে গিয়ে লাশ হতে হলো আবরার ফাহাদকে। সেই চুক্তি বাতিল করে প্রমাণ দিন-আপনি আবরারের পক্ষে, ভারতের আবদারের পক্ষে নন। তিনি বলেন,গণমাধ্যমের কাছে জেনেছি আজ প্রধানমন্ত্রী সংবাদ সম্মেলন করে বক্তব্য দিবেন-জাতির সামনে বক্তব্য দেয়ার আগে সকল দেশবিরোধী চুক্তি বাতিল করবেন কিনা জানতে চাই। বুধবার ( ৯ অক্টোবর) দুপুরে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। রিজভী বলেন,বুয়েটের মেধাবী ছাত্র শহীদ আবরার ফাহাদের বর্বরোচিত ও নৃশংস হত্যাকাণ্ডের পর যখন দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল, মানববন্ধন, প্রতিবাদ সমাবেশ ও আধিপত্যবাদ বিরোধী গগনবিদারী শ্লোগানে উত্তাল তখন সরকার ছাত্রদেরকে নিরস্ত করার জন্য নানা ছলছাতুরির আশ্রয় নিচ্ছে। সরকার প্রধান থেকে শুরু করে সরকারের মন্ত্রীরা নানা রকম বক্তব্য দিচ্ছেন। যে কারণে আবরারকে নির্মম নির্যাতনের মাধ্যমে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে সেদিক থেকে দৃষ্টি ফেরাতে মরিয়া হয়ে ওঠেছে সরকার। তিনি বলেন,আবরারের স্ট্যাটাসের পিছনে কারণই ছিল দেশবিরোধী চুক্তির বিরোধীতা ও সত্য ইতিহাস তুলে ধরা। আর দেশবিরোধী চুক্তিটি করেছেন বর্তমান মিডনাইট ভোটের সরকার। আবরার খুনের দায় সরকার এড়াতে পারে না। দেশবিরোধী চুক্তি বাতিল ছাড়া আবরারের আত্মা শান্তি পাবে না। রিজভী বলেন, এখন সময় এসেছে স্বৈরাচারের বিচারের। যারা নিজেদের ক্ষমতা আঁকড়ে রাখার জন্য একের পর এক দেশবিরোধী চুক্তি করে দেশের সব কিছু অন্যের হাতে তুলে দিচ্ছে তাদের বিচার করতে হবে। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ কিংবা শেখ হাসিনা নিজেদের সমালোচনা কিছুটা সহ্য করতে পারলেও ভারত নিয়ে কোন সমালোচনা হলেই তারা সেটা সহ্য করতে পারে না। ন্যায্য হিস্যার কথা বললেও আওয়ামী লীগ সরকার তেলে-বেগুনে জ্বলে ওঠে। বাংলাদেশের ন্যায্য পাওনা পাওয়ার কোন অধিকার নেই, ন্যায্য হিস্যার দাবি তোলাটাও যেন ভয়ংকর অপরাধ। আবরার ফাহাদ আওয়ামী শাসকগোষ্ঠীর কাছে অপরাধী, কারণ সে আওয়ামী লীগের বন্ধু রাষ্ট্রের বাংলাদেশের প্রতি আচরণের সত্য ইতিহাস তুলে ধরেছিল। এজন্য তাকে জীবন দিতে হলো। এসময়ের শ্রেষ্ঠ দেশপ্রেমিক আবরার ফাহাদ। মৃতুঞ্জয়ী আবরার ফাহাদ দেশের জন্য জীবন দিয়ে মৃত্যুকে জয় করেছে। এদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষার যুদ্ধের প্রধান প্রেরণা হয়ে থাকবে আবরার ফাহাদ। আবরার ফাহাদ আমাদের প্রাণের পতাকা। আবরার হত্যা প্রসঙ্গে রিজভী আরো বলেন,যার রুমে যার উপস্থিতিতে আবরারকে নির্যাতন করে হত্যা করা হয় সেই অমিত সাহার বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। এজাহারে তার নাম নেই, তাকে বহিস্কারও করেনি ছাত্রলীগ। শেরেবাংলা হলের ২০১১ নম্বর রুম তথা টর্চার সেলটি অমিত সাহার। তাকে বাঁচাতে বুয়েট প্রশাসন ও বিতর্কিত পুলিশ কর্মকর্তা ব্যতিব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। অথচ প্রথম আলোসহ অধিকাংশ পত্রিকার খবরে বলা হয়েছে:’ আবরারকে মারার সময় অমিত সাহা সেখানে উপস্থিত ছিল এবং সে মারামারিতে অংশ নেয়।’ মৃত্যু নিশ্চিত হওয়ার পর অন্যরা লাশ নিয়ে গেলেও অমিত সাহা তার রুমেই ছিল।’কক্ষের ভেতরে যখন আবরার এর ওপর অকথ্য টর্চার চলে তখন পুলিশ খবর পেয়েও কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। তাকে বাঁচানোর জন্য এখন নানারকম অপতৎপরতায় লিপ্ত হয়েছে একটি গোষ্ঠী। রিজভী বলেন,শহীদ আবরার ফাহাদের নির্মম মৃত্যু কোন বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। এটি ক্ষমতাসীনদের খুনের সংস্কৃতির ধারাবাহিক চর্চার একটি অংশ মাত্র। আজ তাই, বাংলাদেশের মানুষের পক্ষের মানুষের ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ গড়ে তোলার সময় এসেছে। এই অন্ধকারের সরকারের হাত থেকে দেশকে মুক্ত করে মানুষের অধিকার মানুষের হাতে ফিরিয়ে দিতে ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধের বিকল্প নেই। তিনি বলেন,আন্দোলনরত ছাত্রদের দাবীর সাথে আমরাও অবিলম্বে অমিত সাহাকে গ্রেফতারের দাবী জানাচ্ছি। একই সাথে ছাত্রদের প্রতিটি দাবীর সাথে একাত্মতা ঘোষনা করছি। ‘একটা ভুল ধারণা তৈরি হচ্ছে যে, বাংলাদেশ ভারতকে গ্যাস দিয়ে দিচ্ছে। কিন্তু বিষয়টি হচ্ছে বিদেশ থেকে আমদানি করা গ্যাস প্রক্রিয়াজাতকরণ শেষে তা ভারতে রপ্তানি হবে।’পররাষ্ট্র মন্ত্রী আব্দুল মোমেন এর এমন বক্তব্য উল্লেখ করে বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন,কি হাস্যকর যুক্তি ! ভারতের সাথে স্বামী-স্ত্রী সম্পর্ক তৈরী করা এই মন্ত্রী মহোদয়কে বলতে চাই-বিদেশ থেকে গ্যাস এনে আমাদের প্রক্রিয়া করে ভারতে রপ্তানী করতে হবে কেন? ভারত নিজে কি প্রক্রিয়া করতে জানে না? আপনি যেখান থেকে গ্যাস আনবেন সেখান থেকে ভারত নিজেইতো গ্যাস নিতে পারে, আপনাকে কেন দিতে বলবে ? সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কবির মুরাদ, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুল আউয়াল খান, সেলিমুজ্জামান সেলিম, আব্দুস সালাম আজাদ, সহ-দপ্তর সম্পাদক মুহাম্মদ মনির হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App