×

জাতীয়

বিতর্কমুক্ত ছাত্রলীগের কমিটি কতদূর?

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৮ অক্টোবর ২০১৯, ১২:৩৪ পিএম

বিতর্কমুক্ত ছাত্রলীগের কমিটি কতদূর?
অর্থ কেলেঙ্কারি, দুর্নীতিসহ বিভিন্ন অভিযোগে ছাত্রলীগ থেকে পদত্যাগে বাধ্য হয়েছিলেন সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন ও সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী। এ সংকট কাটিয়ে ছাত্রলীগে নতুন নেতৃত্ব আসলেও কেন্দ্রীয় কমিটিতে পদপ্রাপ্ত বিতর্কিতদের ব্যাপারে এখনো পর্যন্ত কোনো সুনির্দিষ্ট ঘোষণা আসেনি। ফলে পদবঞ্চিতদের পদায়নের ব্যাপারে জটিলতা থেকেই যাচ্ছে। সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য জানাতে না পারলেও এ বিষয়ে কাজ করছেন বলে ভোরের কাগজকে জানিয়েছেন ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয়। চলতি বছরের ১৩ মে ছাত্রলীগের ৩০১ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করেছিলেন ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদ থেকে সদ্য পদত্যাগকৃত দুই নেতা রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন ও গোলাম রাব্বানী। এর পরপরই পদবঞ্চিত ও প্রত্যাশিত পদ না পাওয়া ছাত্রলীগের একাংশ এই কমিটির বিরুদ্ধে বিক্ষোভ শুরু করে। তাদের অভিযোগ ছিল- কমিটিতে যোগ্য ও ত্যাগীদের পরিবর্তে বিবাহিত, মাদক ব্যবসায়ী, বয়সোত্তীর্ণ, হত্যা মামলার আসামি, বিএনপি-জামায়াতের সমর্থক, মাঠের রাজনীতিতে নিষ্ক্রিয়, চাকরিজীবীসহ বিভিন্ন অভিযোগে অভিযুক্তদের পদায়ন করা হয়েছে। গত ১৫ সেপ্টেম্বর ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব নিয়েছেন আল নাহিয়ান খান জয় ও লেখক ভট্টাচার্য। এরপর ১৬ দিন পেরিয়ে গেলেও কমিটি পুনর্গঠন নিয়ে দৃশ্যত কোনো অগ্রগতি দেখা যায়নি। বিতর্কিত ১৯ জনের পদ শূন্য করার পর সেগুলোতে বঞ্চিতদের পদায়নের কথা থাকলেও বাস্তবে এখনো পর্যন্ত তা দেখা যায়নি। তবে পদবঞ্চিতরা আস্থা রাখছেন নতুন কমিটির ওপর। আন্দোলনকারী ছাত্রলীগ নেতা ও ছাত্রলীগের বিগত কমিটির প্রচার সম্পাদক সাইফ বাবু ভোরের কাগজকে বলেন, নতুন নেতৃত্বের সঙ্গে আমাদের প্রতিনিয়ত যোগাযোগ হচ্ছে। তারা আমাদের আশ্বস্ত করেছেন। আমরাও আমাদের পক্ষ থেকে তাদের যথেষ্ট সহযোগিতা করছি। তাদের সঙ্গে কথা বলে যথেষ্ট আন্তরিক মনে হয়েছে। তারাও নতুন দায়িত্ব পেয়েছেন এবং প্রধানমন্ত্রীও দেশে নাই। তিনি দেশে আসলে খুব দ্রুত এ বিষয়ের সমাধান হবে বলে আমি বিশ্বাস করি। বিতর্কমুক্ত ছাত্রলীগ আন্দোলনের মুখপাত্র ও ছাত্রলীগের সাবেক কর্মসূচি ও পরিকল্পনা বিষয়ক সম্পাদক রাকিব হোসেন জানান, নতুন নেতৃত্ব তাদের পদায়নের ব্যাপারে ইতিবাচক ও সহযোগিতামূলক আচরণ করছেন। তাই তারা নতুন নেতৃত্বকে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করছেন এবং নিয়মিত মধুর ক্যান্টিনে আসা যাওয়া করছেন। তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে পদবঞ্চিত এক নেতা ভোরের কাগজকে বলেন, এই সমস্যা সমাধান না হওয়ার পেছনে অন্যতম কারণ ছাত্রলীগের তদারকির দায়িত্বে থাকা আওয়ামী লীগের চার জ্যেষ্ঠ নেতার (জাহাঙ্গীর কবীর নানক, আবদুর রহমান, বাহাউদ্দিন নাছিম এবং বিএম মোজাম্মেল) অসহযোগিতা। সদিচ্ছা থাকলে তারা আরো আগেই এর সমাধান করতে পারতেন। কারণ, এ বিষয়ে যেখানে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর স্পষ্ট নির্দেশনা আছে, সেখানে তো এ নিয়ে দেরি হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। তিনি আরো বলেন, নতুন নেতৃত্ব যদি আগের নেতৃত্ব থেকে শিক্ষা না নেয় তবে তাদেরও একই পরিণতি হবে। এ বিষয়ে ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় ভোরের কাগজকে বলেন, আমাদের সর্বোচ্চ অভিভাবক হলেন শেখ হাসিনা। আমরা দায়িত্ব পাওয়ার পর তার সঙ্গে একবার বসার সুযোগ হয়েছে। বর্তমানে তিনি দেশে নেই। তিনি ফিরলে আমরা তার সঙ্গে এ বিষয় নিয়ে কথা বলব। তার নির্দেশনামতো আমরা এ বিষয়ে কাজ করব। তবে এজন্য আমাদের কিছু সময় লাগবে, যা আমরা পদবঞ্চিতদের জানিয়েছি। তারাও এ ব্যাপারে ইতিবাচক মনোভাব দেখিয়েছে। আশা করি এ বিষয়ে আমরা দ্রত একটি যৌক্তিক সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারব। শোভন-রাব্বানীর করা কমিটির বিতর্কিত ১৯ জনের তালিকা এখনো হাতে পাননি বলে জানিয়েছেন ছাত্রলীগের শীর্ষ এ নেতা। তিনি বলেন, যারা বিতর্কিত আছে, তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগগুলোর ব্যাপারে গোয়েন্দা সংস্থার মাধ্যমে আমরা কাজ করছি। তাদের প্রতিবেদন পেলেই আমরা ব্যবস্থা নেব। শোভন-রাব্বানী কমিটির বিতর্কিত ১৯ জনের পাশাপাশি পদবঞ্চিত ১০৫ জনের তালিকাও বিবেচনা করা হবে কিনা- এমন প্রশ্নের জবাবে জয় বলেন, কারো বিরুদ্ধে তো অভিযোগ করলেই হবে না, তার প্রমাণও থাকতে হবে। তবে আমাদের টার্গেট থাকবে কোনো বিতর্কিত ব্যক্তি যেন কমিটিতে না থাকেন। পদবঞ্চিতদের ব্যাপারে তিনি বলেন, তদন্ত প্রতিবেদনের ভিত্তিতে বিতর্কিত যাদের অভিযোগ প্রমাণিত হবে তাদের পদ শূন্য ঘোষণা করা হবে এবং তাদের স্থানে যোগ্যতার ভিত্তিতে পদবঞ্চিতদের পদায়ন করা হবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App