×

জাতীয়

ছাড় পাবে না সম্রাট চক্রের গডফাদাররা

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৭ অক্টোবর ২০১৯, ১০:২৪ এএম

বাজছে যুদ্ধের দামামা। এ যুদ্ধ মাফিয়া ডন ও গডফাদারদের বিরুদ্ধে। নেতৃত্বে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শুরু হয়েছিল শোভন-রাব্বানীকে বহিষ্কারের মাধ্যমে। শাখা-প্রশাখা বিস্তার হয় সন্ত্রাস-মাদক ও জুয়া-ক্যাসিনো অভিযানে। সুশাসনের পক্ষে দৃঢ় অবস্থানে প্রধানমন্ত্রী। সাফ জানিয়েছেন, অপরাধী পরিবারের সদস্য হলেও ক্ষমা নেই। সরকারপ্রধানের নির্দেশে মাঠে তৎপর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর জালে আটকা পড়ছে বড় বড় রুই-কাতলা। বেরিয়ে আসছে থলের বিড়াল। সংশ্লিষ্টরা জানান, উন্নয়ন নিশ্চিতে দুর্নীতির বিরুদ্ধে অভিযান চলমান থাকবে। ছাড় পাবে না কোনো গডফাদার। যে কোনো মূল্যে এই শুদ্ধিযুদ্ধে জয়ী হতে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

ক্যাসিনোকাণ্ডে আলোচিত নাম ঢাকা মহানগর যুবলীগ দক্ষিণের সভাপতি ইসমাইল চৌধুরী সম্রাট ও তার প্রধান সহযোগী একই সংগঠনের সহসভাপতি এনামুল হক আরমান গ্রেপ্তারের পর চলমান অভিযান আরো বেগবান হয়েছে। এর আগে অবৈধ ক্যাসিনো চালানোর অভিযোগ এবং লাইসেন্সবিহীন অস্ত্র ও মাদকসহ আটক করা হয় ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খালেদ মাহমুদ ভ‚ঁইয়াকে। এরপর বেরিয়ে আসে ক্যাসিনোর সঙ্গে জড়িত আরো অনেক রাঘববোয়ালের নাম। গ্রেপ্তার হন যুবলীগ নেতা ও টেন্ডারবাজ ব্যবসায়ী জি কে শামীম। অভিযান চলে ইয়ংমেনস ক্লাব,

মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, ঢাকা ওয়ান্ডার্স ক্লাব, ঐতিহ্যবাহী ক্লাব মোহামেডান, আরামবাগ, দিলকুশা ও ভিক্টোরিয়া ক্লাবে। উদ্ধার ক্যাসিনো ও জুয়ার সরঞ্জাম। বেরিয়ে আসে অজানা অনেক তথ্য। এরপর রাজধানীর ক্লাবগুলোর ভেতরে জুয়ার স্বর্গরাজ্যের কথা জানতে পারেন দেশবাসী। ক্লাবে অবৈধ ক্যাসিনো বসানোর অপরাধে গ্রেপ্তার করা হয় মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের ডিরেক্টর ইনচার্জ ও বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের পরিচালক (বিসিবি) লোকমান হোসেন ভূঁইয়াকে। বিপুল পরিমাণ টাকা ও স্বর্ণসহ আটক হন রাজধানীর গেন্ডারিয়া থানা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি এনামুল হক ও সাধারণ সম্পাদক রূপন ভূঁইয়া। গ্রেপ্তার হয়েছেন মাফিয়া ডন সেলিম প্রধান। সূত্রমতে, শিগগিরই আটক হচ্ছেন চট্টগ্রামের আরেক যুবলীগ নেতা বাবর। এ ছাড়া ইতোমধ্যেই যুবলীগ চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরীর দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। তলব করা হয়েছে তার ব্যাংক হিসাব। সূত্রমতে, প্রায় সারাদেশের এক হাজার নেতাকর্মীর দুর্নীতির তথ্য প্রধানমন্ত্রীর হাতে দিয়েছে বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা। এদের প্রত্যেকেই শাস্তির আওতায় আনা হবে।

এ ব্যাপারে আওয়ামী লীগ প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. আব্দুর রাজ্জাক ভোরের কাগজকে বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ ক্ষেত্রে জিরো টলারেন্স। একজন দুর্নীতিবাজ থাকলেও সরকারের অভিযান চলবে। দল বলে কোনো ক্ষমা নেই। গডফাদার, ডন, মাফিয়া বলে কিছু নেই। অন্যায়কারীর একটাই পরিচয়, সে অন্যায়কারী। তার শাস্তি নিশ্চিতে শেখ হাসিনা বদ্ধ পরিকর।

দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, এ অভিযান চলছে, চলবে। এটা কোনো দল, ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অভিযান নয়। যারা দুর্বৃত্তায়নের সঙ্গে জড়িত তাদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। দুর্নীতি ও দুর্বৃত্তায়নের সঙ্গে জড়িতরা কেউ ছাড় পাবে না। যতক্ষণ পর্যন্ত দুর্নীতির চক্র ভেঙে দিতে না পারব ততক্ষণ এ অভিযান চলবে। যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ বলেন, ক্যাসিনোর সঙ্গে কোনো রাজনৈতিক দলের সম্পর্ক নেই। তবে সংশ্লিষ্টতা খুঁজলে বিএনপি এর দায় এড়াতে পারে না। ক্যাসিনোর সঙ্গে জড়িতরা আওয়ামী লীগের হলেও তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। শেখ হাসিনা কাউকে ছাড় দেন না। র‌্যাবের ডিজি বেনজীর আহমেদ বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে আমরা একটি ভাইব্র্যান্ট ডেমোক্রেসি এবং অর্থনৈতিভাবে সমৃদ্ধ দেশে পরিণত হতে যাচ্ছি। এ রকম পরিবেশে দেশে কারো হাওয়া হওয়ার কারণ নেই। পাশাপাশি বলতে চাই, এ দেশের সবাই সমান নাগরিক অধিকার ভোগ করবেন, এটা যেমন সত্যি, তেমনি দয়া করে কেউ অবৈধ বা বেআইনি কাজে লিপ্ত হবেন না।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App