×

জাতীয়

সম্রাটের উত্থান: পরশুরাম থেকে ক্যাসিনো

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৬ অক্টোবর ২০১৯, ১২:০৩ পিএম

সম্রাটের উত্থান: পরশুরাম থেকে ক্যাসিনো
ফেনীর পরশুরামের সাহেবনগর গ্রাম থেকে উঠে আসা সম্রাট সময়ের বদলে রাজধানীর আলোঝলমল ক্যাসিনো পাড়ার সম্রাট হয়ে ওঠেন। ছাত্ররাজনীতি থেকে যুবলীগের প্রভাবশালী নেতার মর্যাদা পান। তবে ক্যাসিনো বাণিজ্য আর জুয়ার নেশা তাকে ভুলপথে নিয়ে গেছে। সম্রাট ১৯৯০ সালে ছাত্রলীগের মাধ্যমে রাজনীতির জীবন শুরু করেন। তখন ছাত্রলীগের নেতা ছিলেন। সারাদেশে গর্জে ওঠা এরশাদবিরোধী আন্দোলনে সম্রাট রমনা অঞ্চলে সংগঠকের দায়িত্বে ছিলেন। এসব কারণে নির্যাতনসহ জেলও খাটতে হয় তাকে। এরপর থেকেই সাহসী সম্রাট হিসেবে পরিচিত হয়ে ওঠেন। এরশাদের পতনের পর ১৯৯১ সালে সম্রাট খ্যাতি পাওয়া ছাত্রলীগ নেতা সম্রাট বিরূপ পরিস্থিতিতে পড়েন। বিশেষ করে বিএনপি ক্ষমতায় আসার পর সম্রাটের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা হয়। এরপর ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর ধীরে ধীরে পরিস্থিতি পাল্টে যায়। যুবলীগের রাজনীতিতে ঢুকে পড়েন সম্রাট। ২০০১ সাল অবধি ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের সময় যুবলীগের প্রভাবশালী নেতা হিসেবে ব্যাপক পরিচিতি পান। সম্রাট ওয়ান ইলেভেনের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট পরিবর্তনের সময় যুবলীগের প্রথম সারির নেতায় পরিণত হন। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের পর ২০০৮ সালের নির্বাচনের মাধ্যমে ফের ক্ষমতায় আসে আওয়ামী লীগ। এরপর আবারো পরিস্থিতি পাল্টে যেতে থাকে সম্রাটের। উঁচু মহলের কিছু নেতার আশির্বাদে রাজনৈতিকভাবে প্রবল ক্ষমতার অধিকারী হতে থাকেন। দলীয় পদোন্নতিও হয় তার। দলীয় বড় বড় অনুষ্ঠানে হাস্যজ্জ্বল মুখ হিসেবে তার উপস্থিতি অবধারিত হতে থাকেন। এর মধ্যেই লোভ আর ক্ষমতায় অন্ধ হয়ে আধিপত্যের প্রসার ঘটাতে থাকেন। ক্যাসিনো চালানো, চাঁদাবাজি- টেন্ডারবাজিতে জড়িয়ে পড়েন। রাজধানীর মতিঝিলসহ দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকার সরকারি দপ্তর, ক্লাবসহ বিভিন্ন সংস্থার কর্মকাণ্ড তার নিয়ন্ত্রণে চলে আসে। গত ১৯ সেপ্টেম্বর অবৈধ ক্যাসিনো ব্যবসা চালানোর অভিযোগে দক্ষিণ যুবলীগের সাংগাঠনিক সম্পাদক খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়াকে গ্রেপ্তার করার পর বেরিয়ে আসে সম্রাটের অবৈধ সাম্রাজ্যের খবর। খালেদের ‘গুরু’ হিসেবে সম্রাটের নাম চলে আসে। বিভিন্ন গণমাধ্যমে সম্রাটকে ‘ক্যাসিনো সম্রাট’ হিসেবে উল্লেখ করা হতে থাকে। সম্রাটের ইশারায় ঢাকার ক্লাবগুলোতে চালানো ক্যাসিনো ব্যবসা থেকে নিয়মিত চাঁদা সংগ্রহ করেন তার সহযোগীরা। এ কাজ চালিয়ে যেতে প্রভাবশালীদের টাকা দিতেন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসে সম্রাট সম্পর্কে আরো চাঞ্চল্যকর তথ্য। একজন পেশাদার জুয়াড়ি হিসেবে সিঙ্গাপুরে তার ছিল নিয়মিত যাতায়াত। মাসের এক-তৃতীয়াংশ সময় জুয়া খেলতে সিঙ্গাপুরে কাটাতেন তিনি। সেখানকার মারিনা বে স্যান্ডস ক্যাসিনোতে সম্রাট বিশিষ্ট জুয়াড়ি হিসেবে ব্যাপক সমাদৃত। সিঙ্গাপুরে গেলে তাকে বিমানবন্দর থেকে বিলাসবহুল লিমুজিন গাড়িতে করে সেই ক্যাসিনোতে নিয়ে যাওয়া হতো।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App