প্রধানমন্ত্রী ভারতে গিয়ে যেসব চুক্তি সই করেছেন তার ওপরে কোনো ভরসা নেই বলে মন্তব্য করেছেন গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক রেজা কিবরিয়া। তিনি বলেন, এ সরকারের ওপর আমাদের যেমন ভরসা নেই, তেমনি দেশের মানুষেরও ভরসা নাই।

শনিবার (০৫ অক্টোবর) রাতে বেইলি রোডে গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেনের বাসায় দলের প্রেসিডিয়াম বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের তিনি একথা বলেন।

রেজা কিবরিয়া বলেন, জনগণের স্বার্থ রক্ষা করার মত এ সরকারের দক্ষতা বা ইচ্ছা আছে কি না সেটা নিয়ে আমাদের সন্দেহ আছে।

প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরে সেই দেশের সঙ্গে করা চুক্তির বিষয়ে রেজা কিবরিয়া বলেন, চুক্তির পুরো বিষয়টা আমাদের জানা নেই। পানি বন্টনের টেকনিক্যাল বিষয়গুলো না জেনে বলা যাবে না। এটা নিয়ে কিছু বলতে চাই না। সাধারণভাবে বলতে চায়, বর্তমান সরকার দেশের মানুষের স্বার্থ রক্ষা করতে পুরোপুরি ব্যর্থ।

পররাষ্ট্রনীতিতে পুরোনো রোহিঙ্গা সমস্যা রয়েছে বলে উল্লেখ করে গণফোরাম সাধারণ সম্পাদক বলেন, পানি পাওয়ার ব্যাপারে, ব্যবসা-বাণিজ্য, ট্রানজিট বিষয়ে তারা ব্যর্থ। দেশের মাটিতে যেমন তারা ব্যর্থ, পররাষ্ট্রনীতিতেও তাদের ব্যর্থতা দেখা যায়।

এর আগে শুক্রবার (৪ অক্টোবর) এক অনুষ্ঠানে রেজা কিবরিয়া বলেন, শিগগিরই দেশে আর একটা নির্বাচন হবে। তার বক্তব্যের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি বিষয়টি ওভাবে বলিনি। বর্তমান সরকারের সব খাতের ব্যর্থতায় মোটামুটিভাবে রাষ্ট্র কলাপস্ এর মধ্যে নিয়ে যাচ্ছে। তারা প্রত্যেক ক্ষেত্রে ফেইল করছে, সেটা দেশের মানুষ আগে টের না ফেলেও এখন বুঝে গেছে। আমার ধারণা যে হয়তো কোনও আন্দোলনের জন্য না, তাদের ব্যর্থতার জন্য ক্ষমতা ছেড়ে একটা সুষ্ঠু নির্বাচন দিয়ে মানুষকে সন্তষ্ট করতে চেষ্টা করবে। সেটা খুব তারাতারি হবে। কিন্তু যেভাবে বলা হয়েছে ঠিক সেভাবে আমি বলিনি। তবে আমার ধারণা একটা সুষ্ঠু নির্বাচন করে একটা শক্তিমান সরকার যে সরকারের জনসমর্থন আছে সেই সরকার বাংলাদেশে একদিন হবে। তাতে বেশি দেরি হবে না।

জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট এর বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে জানতে চাইলে রেজা কিবরিয়া বলেন, নির্বাচনের আগে গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক একজন ছিলেন। তিনি তার মতো কাজ করেছেন। আমি আমার মতো করছি। ঠিক আগের মতো তো হবে না। আমাদের মধ্যে আলোচনা চলছে। এখনও বলতে পারবো না। তবে এখন পর্যন্ত আমরা সবাই একই পথে আছি। ব্যর্থ সরকারকে সরানোর ব্যাপারে আমাদের কারও দ্বিমত নাই।

জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের ব্যানারে ৩০ ডিসেম্বরের সমাবেশের বিষয়ে কি সিদ্ধান্ত হয়েছে জানতে চাইলে গণফোরাম সাধারণ সম্পাদক বলেন, সেটা অনেক বড় আকারে হবে। তবে তার আগে অনেক কিছু ঘটতে পারে। হয়তো সরকার ক্ষমতায় থাকবে না। আমরা যা প্লান করি আর আল্লাহ কি চান সেটা দেখাতে পারবো না। সেটার অনেক সময় আছে। সেটা নিয়ে এখন কিছু ভাবছি না।

বৈঠকে চলমান দুর্নীতি দমনের অভিযান নিয়েও আলোচনা হয়েছে বলে উল্লেখ করে কিবরিয়া বলেন, চতুর্থ-পঞ্চম শ্রেণীর কয়েকজন নেতা ধরলেই আমরা উৎফুল্লু হয়ে যাব এটা যেন সরকার না ভাবে। প্রথম-দ্বিতীয়-তৃতীয় স্তরের নেতাদের যখন ধরতে শুরু করবে, যারা ব্যাংক-শেয়ার বাজার থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা লূট করেছে। যারা বিলিয়নস অব ডলার বিদেশে পাচার করে নিয়ে গেছে তাদের বিরুদ্ধে যখন একশন নেবে তখন আমরা স্বাগত জানাবো।

ড. কামাল হোসেনের সভাপতিত্বে বৈঠক উপস্থিত ছিলেন নির্বাহী সভাপতি অধ্যাপক আবু সাইয়িদ, অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, প্রেসিডিয়াম সদস্য মেজর জেনারেল (অব.) আমসা আমিন, অ্যাডভোকেট মোহসিন রশীদ, মোকাব্বির খান প্রমুখ।