×

জাতীয়

সম্প্রীতির বন্ধন আরো শক্তিশালী করতে হবে

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৫ অক্টোবর ২০১৯, ১০:২২ পিএম

সম্প্রীতির বন্ধন আরো শক্তিশালী করতে হবে

বনানী পূজামণ্ডপে সেমিনার

সম্প্রীতির বন্ধন আরো শক্তিশালী করতে হবে

বনানী পূজামণ্ডপে সেমিনার

গুলশান-বনানী এলাকা সম্প্রীতির মিলন মেলায় পরিনত হয়েছে। আমরা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছি। মুসলমানরাই শুধু মুক্তিযুদ্ধ করেনি। এদেশের হিন্দু ও নৃগোষ্ঠির মানুষও মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারন করেই সাম্য ও সহমর্মিতা নিয়েই এগিয়ে যেতে হবে। শনিবার (৫ অক্টোবর) সন্ধ্যায় গুলশান-বনানী সার্বজনীন পূজা ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে মন্ডপ প্রাঙ্গনে ‘মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশ ও ধর্মীয় সম্প্রীতি’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে সাংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ এমপি বলেন, আমি এই পূজামন্ডপে এসে সম্প্রীতির একটি ছোঁয়া পেয়েছি। পূজামন্ডপের কারুকার্যেও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির অপূর্ব সম্মীলন ঘটানো হয়েছে। ৭৫ সালে জাতির জনককে হত্যার মধ্য দিয়ে সম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট হয়। ২০০১ সালে ভোটের রাতে ফলাফল ঘোষনার সঙ্গে সঙ্গে জোট সরকার লোকজন দেশব্যাপী হত্যা, নারী নির্যাতন, অগ্নিসংযোগের মাধ্যমে যে নারকীয় অবস্থার সৃষ্টি করে তা আমাদের মন থেকে মুছে যায়নি। কিন্তু ৪৬ সালের পর কিছুটা সময় ছ্ড়াা আমাদের ৫ হাজার বছর আগের সম্প্রীতি বিনষ্ট হয়নি। প্রতিমন্ত্রী আরো বলেন, আমার নিবাতকবতহর্চনী এলাকায় ৫০ হাজার হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ আজ ১০৩টি পূজা মন্ডপে উৎসবের আমেজে শারদীয় দূর্গাপূজা উদযাপন করছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আজ দেশে নিরাপত্তা নিশ্চিত হওয়ায় এটা সম্ভভ হচ্ছে। যতদিন তিনি প্রধানমন্ত্রী থাকবেন ততদিন এদেশে সব মানুষের নিরাপত্তা থাকবে।

[caption id="attachment_167998" align="alignnone" width="700"] বনানী পূজামণ্ডপে সেমিনার[/caption]

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্ণর অধ্যাপক ড. আতিউর রহমান তার বক্তব্যের বিভিন্ন অংশে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, ভাষাবিদ ডক্টর মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ ও বঙ্গবন্ধুর বিভিন্ন সময়ের উধ্বৃতি তুলে ধরে বলেন, সম্প্রীতির ডাকে আমি আবারো এই পূজামন্ডপে এসেছি। ৭২ এর সংবিধানের চারটি মূলনীতির মধ্যে ধর্মনিরপেক্ষতার কথা বলা হয়েছে। প্রতিটি নীতির মধ্যে সম্প্রীতির বানি রয়েছে। সাম্য ও সহমর্মিতাকে প্রধান হিসাবে বলঅ হয়েছে। তারপরেও অনেক সময় ধর্মকে ব্যবহার করে সমাজকে কলুষিত করে তোলা হয়েছে। আমাদেরকে সাম্প্রদায়িকতা পরিহার করতে হবে। ৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধকালে বলা হয়েছে মানুষ মানুষের জন্য। কিন্তু ৭৫ সালের পর অঅমাদের নানামূর্খী চ্যালেঞ্জে পড়তে হয়েছে। ৯৬ সালে শেখ হাসিনা এসে হিন্দু ও নৃগোষ্ঠির মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করেন। ২০০১ সালে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ভেঙ্গে খান খান হয়ে যায়। কিন্তু আজ যে দূর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে তা মুক্তিযুদ্ধেরই প্রতিফলন। আমরা সম্প্রীতি নিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছি।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ওয়াল্ড ইউনিভার্সিটির ভিসি অধ্যাপক ড. আব্দুল মান্নান চৌধুরী বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা লালন করেছি বলেই মুক্তিযুদ্ধে গিয়েছিলাম। এই মুক্তিযুদ্ধে শুধু মুসলমানরাই অংশ নেয়নি। হিন্দুরাও আমার মতো একই চেতনা ধারন করে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছে। নৃগোষ্ঠির মানুষও অংশ নিয়েছে। বাঙ্গালী ও মানুষের মধ্যে কোন বিচ্যুতি নেই। মানবিক বাংলাদেশ সৃষ্টির জন্য বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে মুক্তিযুদ্ধ করেছিলাম। সত্যিকারের একজন মুসলমানের কাছ থেকে সাম্প্রদায়িকতা বহু দূরে অবস্থান করে।

অনুষ্ঠানের সভাপতি ড. প্রতিমা পাল মজুমদার বলেন, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও ধর্মনিরপেক্ষতাকে সংবিধানের অন্যতম স্তম্ভ¢ করা হয়েছে। এই সম্প্রীতি ৭৫ এর ১৫ আগষ্ট বঙ¦বন্ধুকে হত্যার পর বিনষ্ট হয়। সম্প্রীতি ভেঙ্গে পড়ে। আমরা বহুদিন সম্প্রীতির অভাবে ভুগেছি। গুলশান-বনানীর পূজা আজ সম্প্রীতির মিলন মেলায় পরিনত হয়েছে। এই মেলার গন্ডি আগামীতে আরো বড়া আকারে করার ইচ্ছে আছে।

অনুষ্ঠানের সঞ্চালক দৈনিক ভোরের কাগজ সম্পাদক শ্যামল দত্ত বলেন, সম্প্রীতির বন্ধনকে আরো শক্তিশালী করতে হবে। আমাদেরকে সাম্প্রদায়িকতা পরিহার করে সামনে এগিয়ে যেতে হবে।

অনুষ্ঠান শেষে এক মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও আরতি প্রতিযোগীতা অনুষ্ঠিত হয়।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App