×

মুক্তচিন্তা

বিশ্বজুড়ে ডিজিটাল প্রযুক্তির অসাধারণ প্রসার

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৫ অক্টোবর ২০১৯, ০৮:৫৭ পিএম

বাংলাদেশে ইতোমধ্যে বায়োমেট্রিক ভেরিফিকেশনের মাধ্যমে সব মোবাইল গ্রাহকের রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করা হয়েছে। এ ছাড়াও জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধনের কার্যক্রম ডিজিটালাইজেশনের আওতায় আনা হচ্ছে। মেয়ে শিশুদের সরকার কর্তৃক প্রদত্ত শিক্ষাবৃত্তি মায়েদের রেজিস্টার্ড সিমের বিপরীতে প্রদান করা হয়ে থাকে। ফলে কমনওয়েলথের অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশের অগ্রগতি প্রণিধানযোগ্য।

দ্বিতীয়বার মোবাইল বিশ্ব কংগ্রেসে গিয়ে টের পেলাম যে প্রথমবারে বিশ্ববাসীর সঙ্গে যে ডিজিটাল বিপ্লবের সূচনা দেখেছিলাম তা এক বছরেই অনেক সম্প্রসারিত হয়ে গেছে। যদিও আলোচনার ধারা ২০১৮ সালের মতোই ৫জি এবং চতুর্থ শিল্পবিপ্লবকেন্দ্রিকই ছিল তথাপি প্রযুক্তির নতুন দ্বার দৃশ্যমান হতে লাগল। সুযোগটা আমিও কাজে লাগালাম। যেখানেই যাদের পেলাম, যারাই তাদের প্রযুক্তি দেখানোর আমন্ত্রণ করল সেখানেই গেলাম, কথা বললাম ও প্রযুক্তি দেখলাম। একইভাবে আমরা অংশ নিলাম অনেক প্রতিষ্ঠানের গোলটেবিল বৈঠকে। এখন অনুভব করি গোলটেবিল বৈঠক বা দ্বিপক্ষীয় বৈঠক; সবই আমাদের জ্ঞান অর্জনের জন্য অতি জরুরি ছিল। APAC ডিজিটাল ইকোনমিক রাউন্ড টেবিল : মোবাইল ওয়ার্ল্ড কংগ্রেস ২০১৯ চলাকালীন জিএসএমএ কর্তৃক APAC ডিজিটাল ইকোনমিক রাউন্ড টেবিল বৈঠক আয়োজন করা হয়। ওই রাউন্ড টেবিলের মূল উপপাদ্য বিষয় ছিল- How the mobile industry can accelerate digital economic growth: National digital policies and regional frameworks in Asia। বৈঠকে বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের চেয়ারম্যান মো. জহুরুল হক উপস্থিত ছিলেন। এতে বিটিআরসির চেয়ারম্যান মূলপ্রতিপাদ্য বিষয়ের ওপর তার বক্তব্য উপস্থাপন করেন। রাউন্ড টেবিলে এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলের নীতিনির্ধারকরা, রেগুলেটরসহ বিভিন্ন উচ্চ পর্যায়ের সরকারি এবং খাত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। সেশনে অত্র অঞ্চলের ন্যাশনাল ডিজিটাল এজেন্ডা বাস্তবায়ন এবং সমন্বিত পরিকল্পনার মাধ্যমে তা এগিয়ে নেয়ার বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। বর্ণিত সেশনে আমি জিএসএমএ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর প্রদান করি। বিটিআরসির চেয়ারম্যান ব্যতীত মালয়েশিয়া, ভারত, সিঙ্গাপুর, মিয়ানমার, জাপানসহ বিভিন্ন দেশের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের কর্মকর্তা এবং রেগুলেটররা বক্তব্য রাখেন। বিটিআরসির চেয়ারম্যান তার বক্তব্যে বাংলাদেশের টেলিকম খাতের জন্য গৃহীত বিভিন্ন নীতিমালা ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা তুলে ধরেন। Making every women visible: Accelerating access to digital identity for women and girls in the Commonwealth—বর্ণিত রাউন্ড টেবিল সেশনে কমনওয়েলথভুক্ত দেশসমূহের বিভিন্ন প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন। সেশনে জিএসএমএ কর্তৃক বিভিন্ন রিসার্স থেকে মা ও মেয়ে শিশুদের বিষয়ে নীতিনির্ধারণ সংক্রান্ত প্রতিবন্ধকতাসমূহ দূরীকরণের আহ্বান জানানো হয়। রাউন্ড টেবিলের বক্তারা কমনওয়েলথভুক্ত বিভিন্ন দেশের মেয়েদের ডিজিটাল আইডেন্টি না থাকায় যেসব সমস্যায় পতিত হয় সে বিষয়ে আলোকপাত করেন। এতে জানা যায় যে, ২৫০ মিলিয়ন মা ও শিশুর কোনো ধরনের অফিসিয়াল আইডেন্টি না থাকায় তাদের অধিকার রক্ষা সম্ভব হচ্ছে না। অধিকারসমূহের মধ্যে স্বাস্থ্যসেবা, ভোট প্রদান, শিক্ষা, আর্থিক সেবাসমূহ, চাকরি এবং সামাজিক নিরাপত্তা ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। এ বিষয়ে আমি জানিয়েছি যে, বাংলাদেশে ইতোমধ্যে বায়োমেট্রিক ভেরিফিকেশনের মাধ্যমে সব মোবাইল গ্রাহকের রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করা হয়েছে। এ ছাড়াও জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধনের কার্যক্রম ডিজিটালাইজেশনের আওতায় আনা হচ্ছে। মেয়ে শিশুদের সরকার কর্তৃক প্রদত্ত শিক্ষাবৃত্তি মায়েদের রেজিস্টার্ড সিমের বিপরীতে প্রদান করা হয়ে থাকে। ফলে কমনওয়েলথের অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশের অগ্রগতি প্রণিধানযোগ্য। অর্থাৎ ডিজিটাল আইডেন্টির ক্ষেত্রে মা ও মেয়ে শিশুদের জন্য বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক গৃহীত ব্যবস্থা তাদের নাগরিক অধিকার প্রয়োগে যথাযথ ভূমিকা রাখছে। রাউন্ড টেবিলে কমনওয়েলথভুক্ত বিভিন্ন দেশের মন্ত্রী, টেলিকম রেগুলেটর, সমাজকর্মী ও জিএসএমএর প্রতিনিধিরা বক্তব্য রাখেন। World Economic Forum Private Roundtable: Creating a Shared Digital Future-ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের বর্ণিত রাউন্ড টেবিল মূলত ২০১৯ সালের দাভোস এ অনুষ্ঠিতব্য বার্ষিক সভায় গৃহীত সিদ্ধান্ত মোতাবেক নিম্নোক্ত দুটি বিষয় বস্তু নিয়ে আলোচনা করা হয় : 1. Building an inclusive and Trustworthy Digital Future. 2. Investing in the Digital Network of Tomorrow. বর্তমানে বিশ্বের ৪৫ ভাগ মানুষ মনে করে যে, প্রযুক্তি তাদের জীবনযাত্রা সহজ ও সুন্দর করেছে। তবে ডিজিটাল ভবিষ্যৎ বিনির্মাণে প্রযুক্তির বিশ্বাসযোগ্যতা সবার কাছে বড় প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ ছাড়াও সবার জন্য ব্রডব্যান্ড কানেকটিভিটির সুফল এবং সমাজব্যবস্থা উন্নয়নে ও জিডিপি প্রবৃদ্ধিতে ব্রডব্যান্ডের ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়। বাংলাদেশের প্রতিনিধিদলের পক্ষ থেকে গুরুত্বপূর্ণ এ সভায় আমি এক্ষেত্রে বাংলাদেশের অবস্থান তুলে ধরেছি এবং ভবিষ্যতে আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক সহায়তার ভিত্তিতে কার্যক্রম এগিয়ে নেয়া হবে মর্মে সবাইকে আশ্বস্ত করেছি। ওই রাউন্ড টেবিলে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের পক্ষে Derek Halloran, Head of Digital Economy & Society and ICT Industry, GSMA এর পক্ষে Mats Granryd, Director General মূল বিষয়সমূহ উপস্থাপন করেন। যার উপরে বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিরা তাদের মতামত ব্যক্ত করেন। GTI Summit : মোবাইল ওয়ার্ল্ড কংগ্রেস চলাকালীন গত ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ তারিখে চায়না মোবাইল কর্তৃক আয়োজিত GTI অর্থাৎ Global TD-LTE Initiative Summit অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলনে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের টেকনোলজি লিডাররা উপস্থিত ছিলেন। তন্মধ্যে জিএসএমের চেয়ারম্যান ও ওরেঞ্জ গ্রুপের সিইও, স্যামসাংয়ের প্রেসিডেন্ট ও সিইও, অ্যারিকসনের প্রেসিডেন্ট ও সিইও, হুয়াওয়ের রোটেটিং চেয়ারম্যান, কোয়ালকমের প্রেসিডেন্ট, স্প্রিন্টের সিটিও, এমআইআইটি চায়নার চিফ ইঞ্জিনিয়ার ও সৌদি আরবের যোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক মন্ত্রী বক্তব্য প্রদান করেন। মূলত ফাইভ জিকে কেন্দ্র করে এবারের এ আয়োজনে, কীভাবে দ্রুততম সময়ের মধ্যে ফাইভ জি ইকোসিস্টেম তৈরি করা যায় এবং কত দ্রুততম সময়ের মধ্যে ফাইভ জি চালু করা যায় সে বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়। ইন্টারপোলের সঙ্গে বৈঠক : মোবাইল ওয়ার্ল্ড কংগ্রেস চলাকালীন বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের নেতা হিসেবে ইন্টারপোলের কর্মকর্তাদের সঙ্গে আমি বৈঠকে মিলিত হই। বৈঠকে উভয়পক্ষ নিরাপদ ইন্টারনেট, ডিজিটাল নিরাপত্তা, ডিজিটাল নিরাপত্তার হুমকি ইত্যাদি বিষয়ে আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী একসঙ্গে কাজ করার আগ্রহ ব্যক্ত করি। এ সময় সফরকারী দলে অন্তর্ভুক্ত বিটিআরসির চেয়ারম্যানসহ, ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ, টেলিযোগাযোগ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। ZTE Corporation-এর সঙ্গে বৈঠক ও প্যাভিলিয়ন পরিদর্শন : মোবাইল ওয়ার্ল্ড কংগ্রেস চলাকালীন বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের নেতা হিসেবে আমার নেতৃত্বে বাংলাদেশ প্রতিনিধিদল ZTE Corporation-এর প্যাভিলিয়ন পরিদর্শন করি এবং তথ্যপ্রযুক্তি ও টেলিযোগাযোগ খাতের নতুন নতুন উদ্ভাবিত প্রযুক্তি ও সেবা অবলোকন করি। এ সময় প্যাভিলিয়নের সভাকক্ষে ZTE এর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রকল্পে ZTE এর কার্যক্রম নিয়ে দ্বিপাক্ষিক সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় ZTE এর পক্ষ থেকে জানানো হয় যে, বাংলাদেশে ফোর টায়ার ন্যাশনাল ডাটা সেন্টারের কার্যক্রম ৫ মার্চ ২০১৯-এর মধ্যে সুসম্পন্ন করা হবে। এ সময় আমি ZTE কর্তৃক প্রদত্ত সফটওয়্যারের সার্টিফিকেশন ও কার্যক্রমের দীর্ঘসূত্রতার বিষয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করলে ZTE কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে জিরো টলারেন্স অবলম্বনপূর্বক বাংলাদেশ সরকারের সব নিয়মনীতি মেনে চলার আশ্বাস প্রদান করেন। এ ছাড়াও প্রতিনিধিদলকে জানানো হয় যে, বিটিসিএলের এমওটিএন প্রজেক্টের প্রথম ব্যাচের যন্ত্রপাতি ইতোমধ্যে বাংলাদেশে পৌঁছেছে। এক্ষেত্রে প্রকল্পের কাজ ত্বরান্বিত করার লক্ষ্যে বিটিসিএল থেকে একটি ডেডিকেটেট টিম গঠনের অনুরোধ জানানো হলে আমি তাতে সম্মত হই। বৈঠককালে বিটিআরসির চেয়ারম্যান, ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, টেলিটক বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক, টেলিযোগাযোগ অধিদপ্তর ও বিটিআরসির কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। ZTE-এর পক্ষে গ্রুপ সিইও জু জিয়াংসহ এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। Huawei Technologies-এর প্যাভিলিয়ন পরিদর্শন ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক : মোবাইল ওয়ার্ল্ড কংগ্রেস চলাকালীন আমার নেতৃত্বে বাংলাদেশ প্রতিনিধিদল Huawei Technologies-এর প্যাভিলিয়ন পরিদর্শন করে এবং তাদের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে মিলিত হন। এ ছাড়াও Huawei কর্তৃপক্ষ একটি বিশেষজ্ঞ পরিচালিত সেশনের আয়োজন করেন যেখানে বাংলাদেশের টেলিযোগাযোগ খাতের আগামী দিনের কর্মপরিকল্পনা, প্রযুক্তির ব্যবহার, বিভিন্নি রকম সীমাবদ্ধতা সর্বোপরি সম্ভাবনার বিষয়সমূহ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। বাংলাদেশ প্রতিনিধিদল ও হুয়াওয়ের মধ্যে অনুষ্ঠিত বৈঠক দুটিতে হুয়াওয়ের দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের সিইও মি. উ ওয়েইতাও এবং হুয়াওয়ের প্রধান কার্যালয়ের ভিপি মি. ঝু ঝিবিংসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। এ সময় বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলকে ধারণা দেয়া হয় যে, বাংলাদেশে ৪জি স্মার্টফোন পেনিট্রেশন রেট এখনো অনেক কম, যা দ্রুত বাড়ানো প্রয়োজন। লো ডিভাইস পেনিট্রেশন সম্পর্কে বলতে গিয়ে আমি হুয়াওয়েকে স্থানীয় উৎপাদনের ব্যাপারে বিবেচনা করতে বলি। এ সময় হুয়াওয়ের পক্ষ থেকে অপারেটর ভর্তুকি/কিস্তির মাধ্যমে সিমকার্ড লক হ্যান্ডসেট বিক্রয়ের ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অনুরোধ জানানো হয়। যা ইতোমধ্যে থাইল্যান্ড এবং অন্যান্য দেশে খুব কার্যকর প্রমাণিত হয়েছে। এ ছাড়াও কীভাবে ২.৬ গিগাহার্টজ স্পেকট্রাম এবং ডব্লিউএসআইএস ((WTTX)) ব্যবসার মডেল ব্যবহার করে সফলতা পাওয়া যেতে পারে মর্মে জানানো হয়। এক্ষেত্রে হুয়াওয়ে কর্তৃপক্ষ শ্রীলঙ্কার উদাহরণ উল্লেখ করেন। আমি এ সময় সর্বপ্রথম কোনো দেশ ৫জি চালু করবে এবং টেলিটক বাংলাদেশের অবস্থান কীভাবে শক্ত করা যায় মর্মে জানতে চাই। হুয়াওয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয় হাই ভ্যালু গ্রাহক এবং হোম ইউজাররা প্রথম ৫জি সাবস্ক্রাইব করবে এবং টেলিটকের জন্য ২.৬ গিগাহার্জ স্পেকট্রাম ব্যান্ড ব্যবহার ও ডব্লিউটিটিএক্স ব্যবসা বিবেচনা করতে হবে। এ সময় বিটিআরসির সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান যে, ২.৬ গিগাহার্টজ এ বর্তমানে পর্যাপ্ত স্পেকট্রাম রয়েছে যা ৫জি রেডি নেটওয়ার্ক নির্মাণের জন্য টেলিটককে দেয়া যেতে পারে। আমি এ সময় হুয়াওয়েকে টেলিটকের বর্তমান পরিস্থিতির ওপর ভিত্তি করে আগামী এক মাসের মধ্যে একটি বিস্তারিত স্পেকট্রাম এবং নেটওয়ার্ক বিবর্তন পরিকল্পনা প্রস্তুতপূর্বক ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগে প্রেরণের জন্য অনুরোধ জানাই। এ ছাড়াও আমি জানিয়েছি যে, ৫জি ধাপে ধাপে নিশ্চিত করা হবে, কারণ এটা এমন নয় যে, চালু করার প্রথমদিনেই পুরোপুরি বিস্তৃত করা যাবে। সভায় Huawei কর্তৃক প্রস্তাবিত ইডিসি প্রকল্পের তাৎপর্য সম্পর্কে আমাকে বিস্তারিত অবহিত করা হয় এবং প্রকল্পটির অগ্রাধিকার ভিত্তিতে কার্যক্রম গ্রহণের জন্য অনুরোধ জানানো হয়। এ বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে মর্মে আমি আশ্বস্ত করেছি। শহর ও গ্রামের মধ্যে যোগাযোগের দূরত্ব কমানোর জন্য গ্রামাঞ্চলে কাভারেজকে বিশেষ গুরুত্ব দেয়ার বিষয়ে সভায় আলোচনা করা হয়। এক্ষেত্রে ৫জির মাধ্যমে দ্রুত হাইস্পিড ব্রডব্যান্ড সেবা দেয়া সম্ভব মর্মে জানানো হয়। আলোচনায় জানানো হয় ৭০% এরও বেশি ট্রাফিক ইনডোর থেকে আসে। তাই ৫জি প্রযুক্তির ইনডোর সিস্টেমের জন্য হুয়াওয়েকে স্বল্প মূল্যের ডিভাইস সরবরাহ সম্ভব কিনা তা জানতে চাওয়া হয়। এক্ষেত্রে ইনডোর সিস্টেমকে গুরুত্বসহকারে বিবেচনা করার পরামর্শ দেয়ার পাশাপাশি এ বিষয়ে সিঙ্গাপুর, হংকং কিংবা চীনের ব্যবসায়িক মডেলের বিস্তারিত ও ৫জি ব্যবহারকারীর প্রস্তুতি পরিকল্পনা সরবরাহ করতে বলা হয়। এ ছাড়াও সভায় জানানো হয়, ভিডিও হলো মোবাইল সেবার মূল বিষয় এবং স্বল্পদৈর্ঘ্য ভিডিও অন্যান্য দেশে অনেক জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। হুয়াওয়ে ভিডিওর ব্যবসাকে উৎসাহিত করার পরামর্শ দেয়। আমি বলেছি, ভিডিও উৎসাহিত করা হচ্ছে এবং অন্যান্য ছোট ভিডিও সামগ্রী বিষয়ক প্ল্যাটফর্ম যেমন টিকটক বা এ ধরনের অ্যাপগুলোর বিষয়বস্তুর (কনটেন্ট) গুণগতমান নিশ্চিত করার জন্য অ্যাপ কোম্পানিগুলোর দায়িত্বে¡র কথা গুরুত্বসহকারে বলা হয়েছে। বৈঠককালে বিটিআরসি চেয়ারম্যান, ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, টেলিটক বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক, টেলিযোগাযোগ অধিদপ্তর ও বিটিআরসির কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

মোস্তাফা জব্বার : তথ্যপ্রযুক্তিবিদ ও কলাম লেখক।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App