×

জাতীয়

৮০১টি প্রতিমা নিয়ে দেশের বৃহত্তম পূজামণ্ডপ

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৪ অক্টোবর ২০১৯, ১১:৪১ এএম

৮০১টি প্রতিমা নিয়ে দেশের বৃহত্তম পূজামণ্ডপ
৮০১টি প্রতিমা নির্মাণ করে যে চমক তৈরি হয়েছে তাতে ছাপিয়ে গেছে রাজধানী ঢাকার জৌলুস। এর মাধ্যমে দেশের সবচেয়ে আলোচিত ও বড় দুর্গাপূজা হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে বাগেরহাটের শিকদারবাড়ীর পূজা। ২০১১ সাল থেকে ব্যক্তি উদ্যোগে ২৫১টি প্রতিমা নিয়ে শুরু হওয়া এই পূজায় এবার প্রতিমার সংখ্যা ৮০১টি। বছর বছর প্রতিমার সংখ্যা বেড়েই চলেছে। বাংলাদেশের আর কোনো মণ্ডপে এত বেশিসংখ্যক প্রতিমা নিয়ে দুর্গাপূজা হচ্ছে না। ‘ধর্ম যার যার উৎসব সবার’ এই স্লোগানকে ধারণ করে শুরু হওয়া শারদোৎসবে ইতোমধ্যেই মেতে উঠেছেন প্রত্যেকেই। বৃহস্পতিবার (৩ অক্টোবর) রামকৃষ্ণ মিশন ও মঠগুলোতে পূজার বোধন হলেও দেশের অন্য সব মণ্ডপে আজ শুক্রবার (৪ অক্টোবর) দেবীর বোধন এবং ষষ্ঠীপূজা হবে, যদিও গতকাল থেকেই ভিড় শুরু হয়েছে পূজামণ্ডপে। সেই পথ ধরেই বাগেরহাটের বিখ্যাত শিকদার বাড়ির পূজা দেখতে দর্শনার্থীরা যাত্রা শুরু করেছেন। আয়োজকদের দাবি, বাগেরহাটের দুর্গাপূজাই দেশের সবচেয়ে বড়। পূজার চার দিন এখানে প্রায় ৫০ লাখ ভক্ত দর্শনার্থীর সমাগম ঘটবে। বাগেরহাট সদর উপজেলার খানপুর ইউনিয়নের হাকিমপুর গ্রামে শিকদার বাড়ি। ২০১০ সাল থেকে শিকদার বাড়িতে ব্যক্তি উদ্যোগে দেশের বৃহত্তম দুর্গাপূজার আয়োজন করা হয়। ডা. দুলাল শিকদার নামে এক ব্যবসায়ী ২৫১ প্রতিমা নিয়ে এই পূজার আয়োজন করেন। এই আট বছর মহাধুমধামে পূজা হলেও এবার শিকদার বাড়ির পূজায় আনন্দ নেই। কারণ গত জুলাই মাসে এই পূজার মূল উদ্যোক্তা ডা. দুলাল শিকদার মারা গেছেন। পিতা মারা যাওয়ার পর তার তিন ছেলে পূজা বন্ধ করে দিতে চেয়েছিলেন, তবে মুরুব্বিদের মতানুসারে তারা পূজা চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। দুলাল শিকদারের ছেলে লিটন শিকদার জানান, ২০১৬ সালে মণ্ডপে প্রতিমার সংখ্যা ছিল ৬০১টি আর ২০১৭ তে ছিল ৬৫১টি। গত বছর এই মণ্ডপে ৭০১টি প্রতিমা তৈরি করা হয়েছে, আর এবার প্রতিমার সংখ্যা ৮০১। গত আষাঢ় মাস থেকে প্রতিমা তৈরির কাজ শুরু হয়েছে। কিন্তু গত জুলাই মাসে বাবা মারা যাওয়ায় আমাদের মনটা বড়ই খারাপ। গত ছয় মাস ধরেই প্রতিমা শিল্পীরা রাত-দিন পরিশ্রম করে তৈরি করেছেন ৮০১টি প্রতিমা। এসব প্রতিমায় ফুটে ওঠেছে সত্য, ত্রেতা, দ্বাপর ও কলি যুগের কাহিনী। ফুটিয়ে তোলা হয়েছে রামায়ণ ও মহাভারতের বিভিন্ন পৌরাণিক কাহিনী এবং দেব-দেবীর প্রতিরূপ। ফুটে ওঠেছে দেবদেবীর সৃষ্টির রহস্য। দর্শক আকৃষ্ট করতে মণ্ডপের পাশে পুকুরের মাঝে নৌকার ওপর স্থাপন করা হয়েছে ‘অষ্টসখীর মূর্তি’। রাতের বেলায় অত্যাধুনিক আলোকসজ্জায় অন্যরকম আবহ তৈরি হয় সেখানে। দর্শনার্থী ও ভক্তদের নিরাপত্তার জন্য সব ব্যবস্থা করেছে আয়োজক কর্তৃপক্ষ। ৪৮টি সিসি ক্যামেরার নিরাপত্তা বেষ্টনী দিয়ে ঘেরা হয়েছে মন্দির ও আশপাশের এলাকা। এদিকে লাখো দর্শকদের নিরবচ্ছিন্ন মোবাইল সংযোগের সুবিধার জন্য স্থাপন করা হয়েছে ভ্রাম্যমাণ মোবাইল টাওয়ার। জেলা পুলিশের পক্ষ থেকেও রাখা হয়েছে বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা। শতাধিক পুলিশ সদস্যের পাশাপাশি সাদা পোশাকে নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করবেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। দর্শনার্থীরা বলেছেন, মণ্ডপে ঘুরে প্রতিমা দেখে অভিভূত হয়েছি। সব ধর্মের মানুষ এই দুর্গোৎসবে মিলিত হবে। আশা করছি দেশের সেরা এ পূজামণ্ডপে দেশ-বিদেশের ভক্তরা ও দর্শনার্থীরা আসবেন। ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App