×

জাতীয়

গোলাপ ফুল উপহার দিয়ে ছাত্রীকে ধর্ষণের চেষ্টা!

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৪ অক্টোবর ২০১৯, ১২:৩৮ পিএম

গোলাপ ফুল উপহার দিয়ে ছাত্রীকে ধর্ষণের চেষ্টা!
মানিকগঞ্জের সিংগাইর উপজেলায় ছাত্রী ধর্ষণ চেষ্টায় অভিযুক্ত শিক্ষককে বহিষ্কার করেছে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি। এলাকাবাসীর প্রতিবাদের মুখে ওই শিক্ষককে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করা হয়। এ ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। সাতক্ষীরায় প্রতিবন্ধী কিশোরী ও নারায়ণগঞ্জে শিশু ধর্ষণের মামলায় ২ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জে মসজিদের মক্তবের শিক্ষকের বিরুদ্ধে প্রাক-প্রাথমিক শ্রেণির ৫ বছরের শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনার পর থেকে অভিযুক্ত শিক্ষক পলাতক রয়েছেন। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলায় শিশু যৌন নিপীড়নকারীকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেছেন স্থানীয় জনতা। পরে তাকে মামলাসহ আদালতে পাঠায় পুলিশ। নিচে এ সম্পর্কে আমাদের প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর সিংগাইর (মানিকগঞ্জ) : উপজেলার সাহরাইল উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী ধর্ষণ চেষ্টায় অভিযুক্ত শিক্ষক আশরাফুল ইসলাম শিরুকে অবশেষে বহিষ্কার করেছে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি। এলাকাবাসীর প্রতিবাদের মুখে গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ওই শিক্ষককে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করা হয় বলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাহেলা রহমত উল্লাহ নিশ্চিত করেন। সেই সঙ্গে তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এর আগে সকালে অভিযুক্ত শিক্ষকের মামা ও স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মো. হাবিবুর রহমানকে স্কুলের ভেতরে ২ ঘণ্টা অবরুদ্ধ করে রাখেন বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা। তারা মামা-ভাগিনা ও প্রধান শিক্ষক এ কে এম নজরুল ইসলামের শাস্তির দাবিতে এলাকাবাসী ও শিক্ষার্থীদের ব্যানারে ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেন। খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাহেলা রহমত উল্লাহ ও ওসি খোন্দকার ইমাম হোসেন ঘটনাস্থলে গিয়ে জড়িতদের শাস্তির আশ্বাস দিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। সিংগাইর উপজেলা সহকারী মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. মনিরুজ্জামান খাঁন বলেন, শিক্ষক আশরাফুল ইসলামকে সাময়িক বরখাস্তের পাশাপাশি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত রিপোর্টের ভিত্তিতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়ার সুপারিশ করা হবে। এ ব্যাপারে সিংগাইর থানার ওসি খোন্দকার ইমাম হোসেন বলেন, ঘটনাটি নিয়ে আমি ও সার্কেল এসপি ছায়া তদন্ত করছি। লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে। উল্লেখ্য, গত মঙ্গলবার সাহরাইল উচ্চ বিদ্যালয়ের ইংরেজি শিক্ষক মো. আশরাফুল ইসলাম শিরু ওই স্কুলের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রীকে নোট দেয়ার কথা বলে টিফিনের সময় বাসায় ডেকে নেন। শিক্ষার্থীকে গোলাপ ফুল উপহার দিয়ে প্রেমের প্রস্তাব দেন। সেই সঙ্গে জড়িয়ে ধরে ধর্ষণের চেষ্টা করেন। এ সময় ওই ছাত্রীর চিৎকারে বাইরে অবস্থান করা ২ সহপাঠী তাকে উদ্ধার করে। সাতক্ষীরা : প্রতিবন্ধী কিশোরীকে ধর্ষণের দায়ে জেলার কালীগঞ্জের এক যুবককে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। বৃহস্পতিবার সাতক্ষীরার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক হোসনে আরা আক্তার এ রায় ঘোষণা করেন। এ ছাড়া আদালত তাকে ৩ লাখ টাকা জরিমানা করেছে। জরিমানা না দিলে তাকে আরো এক বছর কারাগারে থাকতে হবে। সাজাপ্রাপ্ত আনসার আলী (২৯) কালীগঞ্জ উপজেলার চাচাই গ্রামের আরশাদ আলীর ছেলে। আসামি পলাতক রয়েছে। ওই আদালতের পিপি জহুরুল হায়দার বাবু মামলার নথির বরাতে জানান, আরশাদ আলীর বাড়িতে এক বাকপ্রতিবন্ধী কিশোরী কাজ করতেন। ২০১৩ সালের ৫ এপ্রিল আরশাদ আলীর ছেলে আনসার আলী (২৯) তাকে ধর্ষণ করে। ধর্ষণের ফলে ওই কিশোরীর ছেলে হয়। এ ঘটনায় কিশোরীর ভাই কালীগঞ্জ থানায় আনসার আলীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। তদন্ত করে থানার এসআই নকীব আয়জুল হক তার বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেন। তিনি বলেন, ডিএনএ টেস্টসহ ৪ জনের সাক্ষ্য নিয়ে আদালত আনসারকে দোষী সাব্যস্ত করে এ শাস্তি দেন। আসামি আটকের দিন থেকে তার শাস্তি কার্যকর হবে। নারায়ণগঞ্জ : জেলায় শিশু ধর্ষণ মামলায় ফিরোজ মিয়া (৩৪) নামে এক ব্যক্তিকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মোহাম্মদ শাহীন উদ্দীন আসামির উপস্থিতিতে এ রায় দেন। দণ্ডপ্রাপ্ত ফিরোজ মিয়া বরিশালের ডাকুয়া নারায়ণপুর এলাকার মৃত আমির হোসেনের ছেলে। সে পরিবার নিয়ে ফতুল্লা থানার ফরাজিকান্দা এলাকায় বসবাস করে। মামলার বরাত দিয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের স্পেশাল পাবলিক প্রসিকিউটর রকিব উদ্দিন জানান, ২০১৫ সালের ১৪ মার্চ সকালে একই বাড়ির ভাড়াটিয়া ফিরোজ মিয়া শিশুটিকে টিভি দেখার কথা বলে ডেকে নিয়ে ধর্ষণ করে। জরিমানার ৫০ হাজার টাকা আদায় করে ভুক্তভোগী শিশুর পরিবারকে দেয়ার নির্দেশ দেন আদালত। দেওয়ানগঞ্জ (জামালপুর) : দেওয়ানগঞ্জে মসজিদের মক্তবের শিক্ষকের বিরুদ্ধে প্রাক-প্রাথমিক শ্রেণির ৫ বছরের এক শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। গত বুধবার সকালে উপজেলার বাহাদুরাবাদ ইউনিয়নের ভাঙার গ্রাম জামে মসজিদে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের শিশু ও গণশিক্ষা কর্মসূচি পরিচালিত মক্তবে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার পর থেকে অভিযুক্ত শিক্ষক মনিরুল ইসলাম (৪০) পলাতক রয়েছেন। মনিরুল ইসলাম বাহাদুরাবাদ ইউনিয়নের ভাঙার গ্রামের মো. শুক্কুর আলীর ছেলে। অভিযোগে জানা গেছে, উপজেলার বাহাদুরাবাদ ইউনিয়নের ভাটিপাড়া গ্রামের দরিদ্র এক গার্মেন্টস কর্মীর মেয়ে। সকালে ওই মক্তবের শিক্ষক মনিরুল ইসলাম কিছুক্ষণ পাঠদান করার পর অন্যান্য শিশুদের মসজিদের সামনের কামরাঙ্গা গাছ থেকে কামরাঙ্গা খাওয়ার কথা বলে মসজিদ থেকে বাইরে যেতে বলে। সহপাঠীরা বাইরে গেলে শিক্ষক মনিরুল ওই শিক্ষার্থীকে মসজিদের ভেতরে নিয়ে ধর্ষণ করেন। এ সময় যৌনাঙ্গ দিয়ে রক্তপাত শুরু হলে শিশুটি কান্নাকাটি করতে থাকে। একপর্যায়ে শিক্ষক মনিরুল কৌশলে শিক্ষার্থীদের ছুটি দিয়ে দ্রুত মসজিদ থেকে কেটে পড়েন। স্বজনরা খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে এসে রক্তাক্ত অবস্থায় শিশুটিকে উদ্ধার করে দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসকের পরামর্শে বুধবার রাত ১টার দিকে জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়। জামালপুর জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক (আরএমও) ডা. মো. ফেরদৌস হাসান জানান, পুলিশের পক্ষ থেকে শিশুটির ডাক্তারি পরীক্ষার কোনো আবেদন করা হয়নি। পুলিশের আবেদন পেলেই শিশুটির ডাক্তারি পরীক্ষা করা হবে। তবে শিশুটির ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য কিছু আলামত সংগ্রহ করে রাখা হয়েছে। দেওয়ানগঞ্জ থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. মনিবুর রহমান জানান, বাহাদুরাবাদ ইউনিয়নে মসজিদে মক্তবের এক শিক্ষার্থী ধর্ষণের ঘটনাটি শুনেছি। শিক্ষকের পরিচয় পাওয়া গেছে। তাকে আটক করার চেষ্টা চলছে। অভিযোগ পেলেই মামলা দায়ের করা হবে। আখাউড়া (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) : উপজেলায় হেকিম মিয়া (২৪) নামে এক শিশু যৌন নিপীড়নকারীকে আটক করে পুলিশে দিয়েছেন স্থানীয় জনতা। ঘটনাটি ঘটে উপজেলার মনিয়ন্ধ ইউনিয়নের বড় গাঙ্গইল গ্রামে। যৌন নিপীড়নকারী হেকিম নেত্রকোনার বারহাট্টা উপজেলার জিতনপুর গ্রামের আব্দুর রাজ্জাক মিয়ার ছেলে। সে পেশায় একজন দিনমজুর। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে পুলিশ তাকে মামলাসহ আদালতে সোপর্দ করে। পুলিশ জানায়, আটক হেকিম উপজেলার মনিয়ন্ধ ইউনিয়নের বড় গাঙ্গইল গ্রামের একটি বাড়িতে বেশ কয়েকদিন ধরে দিনমজুরের কাজ করত। গত বুধবার দুপুরে বাড়ির মালিকের ৫ বছর বয়সী মেয়েকে আদর করার কথা বলে প্রথমে কোলে তুলে নেয় পরে শিশুটিকে সে যৌন নিপীড়ন শুরু করে। শিশুটির কান্নায় বাড়ির লোকজন ছুটে এসে শিশুটিকে উদ্ধার করে। পরে গ্রামবাসী হেকিম মিয়াকে গণপিটুনি দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করে। আখাউড়া থানার ওসি রসুল আহমদ নিজামী বলেন, আটক যৌন নিপীড়নকারী হেকিমকে হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App