×

সম্পাদকীয়

সর্বাত্মক প্রস্তুতি নিয়ে মোকাবেলা করতে হবে

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৪ অক্টোবর ২০১৯, ১২:০৩ পিএম

দেশের উত্তর-পূর্ব ও মধ্যাঞ্চলে পানি বাড়ছে প্রতি মুহূর্তে। কোথাও কোথাও তা বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এবার বন্যা ভয়াবহ রূপ নিতে পারে বলে আশঙ্কা জানানো হয়েছে বিভিন্ন আবহাওয়া পূর্বাভাসে। এটা আমাদের জন্য শঙ্কার ব্যাপার বৈকি। পরিস্থিতি মোকাবেলায় সরকার ও সংশ্লিষ্টদের প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি গ্রহণ জরুরি। পত্রপত্রিকার রিপোর্ট জানাচ্ছে, দেশের প্রায় সর্বত্র প্রতিদিন কম-বেশি বৃষ্টিপাত হচ্ছে। ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, আসাম, ত্রিপুরা, মিজোরাম ও মেঘালয়ে প্রবল বৃষ্টিপাত অব্যাহত রয়েছে। ফলে উজান থেকে নেমে আসা ঢলের মাত্রাও ক্রমাগত বাড়ছে। পদ্মা ও তার শাখা নদীতে পানি বাড়ছেই। ইতোমধ্যে কয়েকটি নদীর পানি বিপদসীমা অতিক্রম করেছে। আবার কোথাও কোথাও ছুঁই ছুঁই করছে সীমারেখা। ১৬ বছর পর পাবনার পাকশী হার্ডিঞ্জ পয়েন্টে বিপদসীমা অতিক্রম করে সাত সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। কুষ্টিয়ায় পদ্মার পানি অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ধসে পড়েছে ২০০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত বাঁধ। ফলে হুমকিতে রয়েছে শিলাইদহের কুঠিবাড়ী। পদ্মার অব্যাহত তাণ্ডবে ভাঙনের মুখে দৌলতদিয়া লঞ্চ ও ফেরিঘাটে একই সঙ্গে বিঘ্ন হচ্ছে ফেরি চলাচল। অসময়ের এমন বন্যায় সীমাহীন দুর্ভোগে পড়েছে সাধারণ মানুষ। এদিকে পানি বেড়ে যাওয়ার পাশাপাশি শুরু হয়েছে নদী ভাঙন। হঠাৎ নদীর পানি বেড়ে যাওয়ায় তা নদীর ক‚ল উপচে চরাঞ্চলের নিম্নাঞ্চলে প্রবেশ করছে। এতে ফসলি জমি তলিয়ে যাচ্ছে। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় নদী পাড়ের মানুষের মধ্যে শঙ্কা ক্রমেই বাড়ছে। চরাঞ্চলে যোগাযোগ ব্যবস্থা সম্পূর্ণ ভেঙে পড়েছে। সেখানকার ঘরবাড়ি পানির নিচে। দেখা দিয়েছে বিশুদ্ধ পানি ও খাবার সংকট। ডায়রিয়াসহ পানিবাহিত রোগের লক্ষণ এখনো দেখা না গেলেও অচিরেই আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে নদ-নদীর পানি উপচে বন্যার পদধ্বনি কেবল নয়, এমন পরিস্থিতি আমাদের জন্য দুর্ভাবনার। সামনে ভয়াবহ বন্যার যে আশঙ্কা করা হচ্ছে তা আমলে নিয়েই সরকারের এখন থেকে পরিস্থিতি মোকাবেলায় ব্যবস্থা নেয়া উচিত। বন্যার মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগ এড়ানো আমাদের সাধ্যাধীন নয়। তবে যথাযথ প্রস্তুতি নিলে মানুষের দুর্ভোগ, ক্ষয়ক্ষতি নিশ্চয় নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব। নদী ভরাট হওয়ার কারণে যেমন বেড়েছে ভাঙন, তেমনি সামান্য ঢলে দুক‚ল উপচে আকস্মিক বন্যা ঘটায়। নদ-নদীর নাব্য রক্ষা করে একদিকে যেমন বন্যার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব, তেমনি সম্ভব ভাঙন ঠেকানো। আমরা জানি ড্রেজিং নিয়ে সরকারের ‘মহাপরিকল্পনা’ রয়েছে। কিন্তু বাস্তবায়নের খুব বেশি অগ্রগতি দেখা যাচ্ছে না। বন্যার সময় বাঁধ একটা বড় আশ্রয়স্থল। যেভাবে বাঁধ ভাঙছে, তাতে সব বাঁধকে এখন নিরাপদ আশ্রয় মনে করা যাচ্ছে না। তারপর রয়েছে খাদ্য সংকট। আমরা আশা করছি, বন্যার্তদের জন্য পর্যাপ্ত খাদ্য সহায়তা দেয়ার সংস্থান করবে সরকার। বিশুদ্ধ পানি, ওষুধপত্র এবং চিকিৎসাসেবাও প্রস্তুত রাখা দরকার। সরকার ও প্রশাসন এ বিষয়ে সচেতনতা ও দায়িত্বশীলতার পরিচয় দেবে, এটাই আমরা প্রত্যাশা করি।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App