×

জাতীয়

শেখ হাসিনা হার্ডলাইনে

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৩ অক্টোবর ২০১৯, ১১:০২ এএম

শেখ হাসিনা হার্ডলাইনে
ক্যাসিনো কাণ্ডসহ বিভিন্ন অনিয়মের বিরুদ্ধে হার্ড লাইনে রয়েছেন শেখ হাসিনা। এ শুদ্ধি অভিযানে ধরা পড়তে যাচ্ছেন একাধিক রাঘব বোয়াল। আসন্ন কাউন্সিলে বাদ পড়তে পারেন অন্তত ১৫ জন মন্ত্রী-এমপি। সম্মেলনের মাধ্যমে একটি পরিচ্ছন্ন, ত্যাগী, দক্ষ, যোগ্য নেতৃত্ব তৈরি করতে চান দলীয়প্রধান। সেই সঙ্গে সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ-মাদকমুক্ত দেশ গড়ার নির্বাচনী প্রতিশ্রুতির বাস্তবায়ন করতে চান প্রধানমন্ত্রী। এ ক্ষেত্রে অপরাধী নিজ পরিবারের কেউ হলেও ছাড় পাবে না বলে কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন তিনি। সম্প্রতি ছাত্রলীগের শীর্ষ দুই নেতার অপসারণ, ক্যাসিনো ব্যবসায় সাবেক যুবলীগ নেতার আটক এবং সরকারের চলমান অভিযান ঝড় তুলেছে সব মহলে। কেন্দ্র থেকে তৃণমূল নেতাকর্মীদের কেউ কেউ আতঙ্কগ্রস্ত হলেও অভিযানকে সাধুবাদ জানিয়েছেন অনেকেই। দেশের বাইরেও প্রশংসিত হচ্ছেন শেখ হাসিনা। বৈষম্য দূর করতেই শুদ্ধি অভিযান মন্তব্য করে ভয়েস অব আমেরিকাকে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের দলের কে, কী সেটা আমি দেখতে চাই না। আমার আত্মীয় পরিজন আমি দেখতে চাই না। কে কত বেশি উচ্চবিত্ত সেটা আমি দেখতে চাই না। অনিয়ম যেখানে আছে, দুর্নীতি যেখানে আছে, বা আমাদের দেশকে ফাঁকি দিয়ে যারা কিছু করতে চাচ্ছে, তাদের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত থাকবে। তিনি বলেন, আমি জানি এটা খুব রিস্কি। এতে কোনো সন্দেহ নেই। অবৈধ সম্পদ অর্জনের অসুস্থ প্রতিযোগিতা করে মুষ্টিমেয় লোক। কিন্তু এর প্রভাবটা চলে যাচ্ছে বিভিন্ন পর্যায়। সেখান থেকে দেশটাকে তো রক্ষা করতে হবে। শুদ্ধি অভিযানের আরো ‘গরম’ খবর : আওয়ামী লীগের সম্মেলন এবং দুর্নীতিবিরোধী অভিযান নিয়ে রাজনীতির মাঠে থাকা নানা গুঞ্জনের মাঝে আরো গরম খবর আসছে বলে জানিয়েছেন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার সঙ্গে তার সাক্ষাতের পর এই গরম খবর পাবেন বলেও জানান কাদের। তিনি বলেন, যখন খবরটা পাবেন তখন দেখবেন। তিনি বলেন, অপরাধীদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নানাভাবেই নেয়া যায়। পদ কেড়ে নেয়াসহ পদাবনতি দেয়াও সাংগঠনিক ব্যবস্থা। এ ধরনের শাস্তি তো গত নির্বাচনে মনোনয়ন ও মন্ত্রিসভা গঠনের মধ্য দিয়ে অনেকেই পেয়েছেন। চলমান অভিযানের মধ্যে যুবলীগ ঢাকা দক্ষিণের সভাপতি ইসমাইল চৌধুরী সম্রাটকে নিয়ে একটা ধোঁয়াশা সৃষ্টি হয়েছে। তিনি কী গ্রেপ্তার হয়েছেন নাকি বিদেশে চলে গেছেন? এ বিষয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ধৈর্য ধরুন, অপেক্ষা করুন, দেখতে পাবেন। শুদ্ধি অভিযানের এই ‘গরম’ খবর নিয়ে প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. আবদুর রাজ্জাক ভোরের কাগজকে বলেন, দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সবসময়ই জিরো টলারেন্স। দলে শুদ্ধি অভিযান চলছে। ইতোমধ্যে কারো কারো বিরুদ্ধে দুদক অনুসন্ধান করছে। দলীয়প্রধান চাঁদাবাজ, দুর্নীতিবাজ, শৃঙ্খলাভঙ্গকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে বদ্ধ পরিকর। কাউন্সিলের আগে বাদ পড়ছেন একাধিক মন্ত্রী-এমপি : গত দশ বছরে ডাকসাইটে নেতাদের ফুলের তোড়া, নৌকা উপহার দিয়ে মুজিব কোট গায়ে চাপিয়েছেন বিএনপি-জামায়াতের অসংখ্য নেতাকর্মী। সুসময়ের কোকিলের আনাগোনায় কোনটাসা দুঃসময়ের ত্যাগীরা। সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, আওয়ামী লীগের টানা দুই মেয়াদে দলের বেশি ক্ষতি করেছে অনুপ্রবেশকারীরা। এখনই দাঁড় টেনে না ধরলে এদের কুকর্মে সরকারের উন্নয়ন চাপা পড়ে নৌকার সলিল-সমাধি ঘটবে। সম্মেলনের আগেই এদের তালিকা তৈরি হচ্ছে। আঙুল ফুলে বটবৃক্ষ হওয়া এসব অনুপ্রবেশকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার পাশাপাশি এদের হাতে নৌকা তুলে দেয়া মন্ত্রী-এমপিদেরও শাস্তির আওতায় আনা হবে। বিতর্কিত, শৃঙ্খলাভঙ্গ, অনুপ্রবেশকারী ও বিদ্রোহীদের সহযোগিতা করার অপরাধে সম্মেলনে বাদ পড়তে যাচ্ছেন প্রায় ১৫ জন মন্ত্রী-এমপি। এ ব্যাপারে প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. আবদুর রাজ্জাক বলেন, কাউকে ছাড় নয়, সবার আমলনামা প্রধানমন্ত্রীর কাছে আছে। স্বচ্ছ ইমেজ, দক্ষ নেতৃত্ব নির্বাহী কমিটিতে স্থান পাবেন। অভিযুক্তরা কমিটিতে ঠাঁই পাবেন না। সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, অপকর্মের জড়িত, অভিযুক্ত কাউকে আমরা দলের নেতৃত্বে আনব না। যাদের ক্লিন ইমেজ ও উজ্জ্বল ভাবমূর্তি আছে তারাই নির্বাহী কমিটিতে আসবেন। পারফরমেন্সের ভিত্তিতে এবার নতুন কমিটি গঠন করা হবে। তিনি বলেন, আমাদের সাংগঠনিক সফর শুরু হয়েছে। ২১ সেপ্টেম্বর থেকে জেলাওয়ারি প্রতিনিধি সম্মেলন হচ্ছে। ২০১২ সালের আগে যেসব জেলা-উপজেলা কমিটির মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে গেছে, সেখানে আগে সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। এরপর অন্যগুলো হবে। আমাদের ১০ ডিসেম্বরের মধ্যে সব শেষ করার টার্গেট রয়েছে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App