×

সাময়িকী

তোমার যে ফুল

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৩ অক্টোবর ২০১৯, ০৭:৫১ পিএম

তোমার যে ফুল

১৩ই আশ্বিনের রাত্রি যাচ্ছে বা ফুরাচ্ছে। ১৩ই ভাদ্র শীতের জন্ম হয়ে গেছে। পাক্কা এক মাসের শিশু শীত এখন। সেটা বোঝা যাচ্ছে অল্প ঠাণ্ডায়। তবে শীতের ঠাণ্ডা না এ, বৃষ্টিজনিত আর্দ্রতার ঠাণ্ডা। বহুদিন পর একটা বৃষ্টির দিন গেছে আজ। ঝুপঝুপ বৃষ্টি। কুকুর বেড়াল বৃষ্টি। বিরতিহীন বৃষ্টির শো অফ। হাইনজুনি বেলাটা দেখার মতো ছিল। অল্পক্ষণের জন্য বৃষ্টি ধরেছিল এবং আশ্চর্য কিছু রং ফুটেছিল আকাশে। মেঘের অনেক রং। হাইনজুনি বেলা ঠিক সন্ধ্যাবেলা না। বোঝা যায় না, ধরা যায় না সন্ধ্যাবেলার এমন আগের একটুক্ষণ। হাইনজুনি বেলা বলে চর কাঁকড়ার মানুষরা। ঢাকা থিয়েটারের নাটক ছিল ‘চর কাঁকড়ার ডকুমেন্টারি’। রাস্তায় সেই নাটক দেখেছিল সে। পথনাটক। দেখে চর কাঁকড়া গিয়েছিল। চর কাঁকড়ার কিছু মানুষের সঙ্গে এখন তার সম্পর্ক আছে। তাদের একজন হলো গাজী কালু। পাগলা গাজী কালুর সঙ্গে তার সম্পর্ক? মায়ার বলা যায়। কোনো রকম বিভ্রম না, জটিলতাহীন জটিল-কুটিল মায়ার। অসম বয়স্ক তারা অত্যন্ত শেয়ারিং। তার বর্তমান দুরবস্থার কথা সে কিছু বলেছে গাজী কালুকে। গাজী কালু শুনে দুঃখিত হয়নি, বিটকেলে ভাবে আনন্দিত হয়েছে। গাজী কালু কেন গাজী কালু? গাজী কালুর নানু তাকে গাজী কালু ডাকেন বলে। গাজী কালুর ছোট তিন ভাই আছে, তারা তাকে ডাকে দাদাভাই, গাজী কালুদের বুয়া সুইটি আখতারের মেয়ে মেঘলা, ১২-১৩ বছর পরে নিশ্চিত মিস ইউনিভার্স কি মিস ওয়ার্ল্ড হবে, সে গাজী কালুকে ডাকে বড়মামা। গাজী কালু ছেলে না মেয়ে। কালো রঙের এক রূপবতী। বয়স ২১ হবে এই অক্টোবরে। ১৩ই অক্টোবর। এই গাজী কালু তাকে ডাকে? মিস্টার এন্ডারসন। ‘দ্য মেট্রিক্স’ মুভির দ্য ওয়ান, নিও উরফে মিস্টার এন্ডারসন। গাজী কালুকে একদিন বলেছিল সে, এই পৃথিবীতে তার সবচেয়ে প্রিয় প্রশ্নটা হচ্ছে, ‘মেট্রিক্স’ মুভির, ‘হোয়াই মিস্টার এন্ডারসন? হোয়াই? হোয়াই?’ সেই থেকে গাজী কালু তাকে মিস্টার এন্ডারসন ডাকে। টেক্সট পাঠায়। গুড মর্নিং, মিস্টার এন্ডারসন। গুড নাইট, মিস্টার এন্ডারসন। আচ্ছা সে মিস্টার এন্ডারসন। মিস্টার এন্ডারসন এখন কী করছে? রাত এখন ক’টা? দু’টার কম না। মিস্টার এন্ডারসন মাত্র ‘ম্যান অন ফায়ার’ মুভিটা দেখে শেষ করেছে আরেকবার। এরকম কিছু মুভি আছে, বার বার, অনেকবার সে দেখে। ছয়টা মুভি আছে টপচার্টে এখন। ১. ‘কিল বিল,’ ২. ‘দ্য মেট্রিক্স’, ৩. ‘রেসিড্যান্ট ইভিল,’ ৪. ‘ম্যান অন ফায়ার’, ৫. ‘লুসি’ এবং ৬. ‘বিএফজে’। ‘বিএফজে’ যেমন কাল রাতেও দেখেছে। এখন? মিডিয়া প্লেয়ারে জেন মেডিটেশন এন্ড হিলিং মিউজিক দিয়ে গাজী কালুর বানানো একটা জয়েন্ট ধরাল মিস্টার এন্ডারসন। গাজী কালু সেরা জয়েন্ট নির্মাতা। মিস্টার এন্ডারসনের ক্ষমতা থাকলে সে জামাইকার বব মার্লে মিউজিয়ামের কিউরেটর বানিয়ে দিত গাজী কালুকে। কাজী কালু কি সজাগ এখনো? থাকার কথা। তার ফরাসি প্রেমিক ফোন করবে আজ। জেরেমি কান্দ্রে। চমৎকার বাংলা বলে ছেলেটা। প্রমিত না একেবারে খাইসি-গেসি বাংলা। ‘গ্রাম ছাড়া ঐ রাঙামাটির পথ’, সম্পূর্ণ গান সে রেকর্ড করে শুনিয়েছে গাজী কালুকে। গাজী কালু শুনিয়েছে মিস্টার এন্ডারসনকে। মিস্টার এন্ডারসন চমৎকৃত হয়েছে। ‘তোর বয়ফ্রেন্ড হিসেবে মসিয়ো জেরেমিকে আমি লাইক দিলাম।’ ‘কত পার্সেন্ট?’ ‘সিক্সটি ফাইভ। মন খারাপ করিস না। আরো থারটি ফাইভ পার্সেন্ট মসিয়ো জেরেমি দ্রুত গেইন করে ফেলতে পারবে।’ ‘বলছ?’ ‘বলছি মানে? লিখে দিতে পারি।’ ‘টেক্সট করে দিও। অভ্র টাইপে। তোমার হাতের লেখা অত্যন্ত খারাপ।’ মিস্টার এন্ডারসনের একটা মোবাইল ফোন আছে। স্মার্টফোন-আইফোন না, অতি সস্তা সেট। সেটাও অফ থাকে বলতে গেলে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ৩৯ ঘণ্টা! এখন খুলল। গাজী কালুকে কল দিল এবং গাজী কালু একবারেই কল ধরল। চীৎকার করে উঠল, ‘কী আশ্চর্য! মিস্টার এন্ডারসন!’ মিস্টার এন্ডারসন বলল, ‘ঘুমাসনি তুই?’ ‘আমি তোমার কী হই মিস্টার এন্ডারসন? তুমি যখন একটা প্যাঁচা, আমি নিশ্চয় একটা প্যাঁচানি হই। ঘুমাব কেন? হোয়াই মিস্টার এন্ডারসন? হোয়াই? হোয়াই? হি! হি! হি!’ ‘তুই এখন কোথায়?’ ‘দরজা খুলে দেখো।’ ‘কী!’ ‘কষ্ট করে উঠে তোমার ঘরের দরজা খুলে দেখো, মিস্টার এন্ডারসন।’ ‘মানে কী? তুই!’ ‘দরজা খুলে দেখো।’ মিস্টার এন্ডারসন উঠে দরজা খুলে বিস্ময়ের সঙ্গে গাজী কালুকে দেখল। ‘এত রাতে তুই! কোত্থেকে তুই?’ ‘কী করি বলো?’ ‘কী করবি মানে? কোত্থেকে তুই?’ ‘আগে লেট মি গেট ইন প্লিজ।’ ‘অ, হ্যাঁ, হ্যাঁ।’ গাজী কালু ঘরে ঢুকল এবং মিস্টার এন্ডারসন তাকে ভালো করে দেখল। জলপাই সবুজ রঙের টি-শার্ট, কালো ট্রাউজারস আর স্লিপার পরে আছে। হাতে আইফোন। ঝুপ করে ম্যাট্রেসে বসে পড়ল এবং চোখ বড় করে গাজী কালু বলল, ‘বিরাট ঘটনা।’ মিস্টার এন্ডারসন বলল, ‘কী?’ গাজী কালু বলল, ‘জয়েন্ট! দাও আগে।’ ‘না। তুই আগে ঘটনা বল।’ ‘ওরে বাবা! সে তো এক হিস্ট্রি অব সিভিলাইজেশন। বলতে বলতে জয়েন্ট শেষ হয়ে যাবে।’ বলে খুবই করুণ একটা দুঃখিনী মুখ করল গাজী কালু। মিস্টার এন্ডারসন বলল, ‘টাউট! ধর!’ আনন্দিত গাজী কালু হস্তগত জয়েন্টে টান দিয়ে বলল, ‘আমি তো স্লিপওয়াকার, ১২টায় ঘুমিয়ে পড়েছিলাম। ঘুমের মধ্যে কখন যে উঠে হাঁটতে শুরু করে দিয়েছি। হাঁটতে হাঁটতে অ্যাপার্টমেন্ট থেকে রাস্তায়-।’

‘কী সর্বনাশ!’ ‘হ্যাঁ-এ-এ। নাজমুল ভাই না দেখলে কী হতো, বলো?’ ‘নাজমুল ভাই?’ ‘আরে রুমানা দিদির জামাই। পুলিশের এসআই না সে!’ ‘অ।’ ‘তারপর শোনো, পুলিশের গাড়িতে তুমি কখনো উঠেছ?’ ‘না।’ ‘এত বছর ধরে জয়েন্ট টানো, পুলিশ একবারও তোমাকে ধরেনি? দুঃখজনক কথা।’ ‘ধরেছে। গাড়িতে ওঠায়নি। তোকেও নিশ্চয় ক্রিমিনাল হিসাবে ওঠায়নি।’ ‘তা ওঠায়নি। তবে বললাম না, পুলিশের গাড়ি। পুলিশের গাড়ি হলো পুলিশের গাড়ি। ব্যাপারই আলাদা। উঠলেই তুমি ক্রিমিনাল মাইন্ড।’ ‘ঘুমের মধ্যে তোকে তোর নাজমুল ভাই এখানে নামিয়ে দিয়ে গেছে?’ ‘ঘুমের মধ্যে নামিয়ে দিয়ে যাবে কেন? কী আশ্চর্য! কথা তো শেষ করতে দাও না! বলছিলাম, পুলিশের গাড়িতে উঠতেই আমার ঘুম কেটে গিয়েছিল। নাজমুল ভাই বলল আমি নাকি মগবাজার ফ্লাইওভারে হাঁটছিলাম।’ ‘তা পুলিশের গাড়ি তোকে এখানে ড্রপ করে গেল কেন?’ ‘আমি নাজমুল ভাইকে বলেছি বলে।’ ‘অ।’ ‘তুমি কি বিরক্ত নাকি? বিরক্ত হলে বলো, চলে যাই।’ ‘আরে না।’ ‘তুমি কি কাজ করছিলে নাকি? তুমি কাজ করো তাহলে। আমারও কাজ আছে। কবিতা বানাব। আমি কোনো ঘরে থাকব বলে দাও।’ মিস্টার এন্ডারসনের ফ্ল্যাটে বেডরুম তিনটা। দুইটাই ফাঁকা। ড্রয়িংরুমের পরের রুমটাতে গাজী কালু থাকবে। সে আগেও এই রুমে থেকেছে। লুপিতা থাকলে লুপিতার ঘর হতো এটা। আরো একটা জয়েন্ট তারা টানল। এর ওর কূটনামী করল, হা হা করল হি হি করল। ‘ফ্লাইং মেক্সিকান এয়ারওয়েজ’ ফিল। গাজী কালু বলল, ‘মিস্টার এন্ডারসন, তুমি আর বিয়ে করো না।’ মিস্টার এন্ডারসন বলল, ‘মাথা খারাপ!’ ‘প্রেমও করো না।’ ‘প্রেম করা যায়। আমি কোনো সাধুসন্তটা বল?’ ‘দরকার কী, হ্যাঁ? বিয়ে প্রেম সংসার বাচ্চা বিয়ানো! তোমার শিক্ষা সম্পূর্ণ হয়নি। সম্পূর্ণ করার চেষ্টা করে দেখ। প্রেম করলে আমি অবশ্যই খুন করব তোমার প্রেমিকাকে। বিয়ে করলে অবশ্যই খুন করব তোমার বউকে।’ ‘সে কী! কেন? তারা আবার কী দোষ করল?’ ‘অ বাবা! সিমপ্যাথিও গ্রো করে গেছে ওর মধ্যে! কে, বলো?’ ‘আরে দূর! বলেছি না আমি ভয় পেয়ে গেছি। সম্পর্কের ক্ষেত্রে আমার ব্যাডলাক খারাপ। কী করব?’ ‘প্রমিত বাংলাভাষী শিক্ষয়িত্রীর পর তোমার আর কোনো রিলেশন হলো না?’ ‘না।’ ‘ভালো হয়েছে। শিক্ষয়িত্রী খাণ্ডারনি ছিল। প্রমিত বাংলাভাষী রাবিন্দ্রিক খাণ্ডারনি। হি! হি! হি! বেঁচে গেছ তুমি। দেখেছি তো। এজন্য বলি, স্টে সিঙ্গেল ডোন্ট মিঙ্গেল এন্ড বি হ্যাপি। একা থাকো, আনন্দে বাঁচো।’ ‘তুই কি একা থাকবি নাকি?’ ‘নিশ্চয়।’ ‘দেখা যাবে।’ ‘ঠিক আছে দেখো। আমি ঘুম পাই।’ ‘তুই ঘুম পাস? আচ্ছা ঘুম পা।’ ‘বনো নুই, মসিয়ো এন্ডারসন।’ ‘কী?’ ‘জেরেমির ভাষা। শুভ রাত্রি।’ ‘শুভ সকাল কী?’ ‘বঁ জুখ।’ ‘বনো নুই, গাজী কালু।’ লুপিতার ঘরে ঢুকে দরজা লক করে দিল গাজী কালু। আজব মিল। গাজী কালু এবং লুপিতার। টাইম টুইন তারা। একই বছরের একই দিনে জন্মেছে। শনিবার, ১৩ই অক্টোবর। গোয়িং ২১ লুপিতা কাজ করে নাসায়। ১৯ বছর হয়ে গেল তাকে ফিজিক্যালি দেখে না মিস্টার এন্ডারসন। ২ বছর ৩ মাস বয়েসের লুপিতাকে নিয়ে তাসনুভা চলে গিয়েছিল, জুনায়েদের কাছে আমেরিকায়। ফিরেনি আর। তাসনুভা জুনায়েদের বাচ্চা কাচ্চা হয়নি। সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটে আছে তারা। তাসনুভা, লুপিতা। তাসনুভা অত্যন্ত সক্রিয়। দেশের নানা কিছু নিয়ে ঝাঁঝালো পোস্ট দেয়। মিস্টার এন্ডারসনকে এসব বলে লোকজন। মিস্টার এন্ডারসন দেখে না কারণ কোনো প্রকার সোশ্যাল নেটওয়ার্কিংবাজিতে নেই সে। পছন্দ করে না এত যোগাযোগ। অতএব, সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং-এর কোনো দরকার নেই তার। গুটিয়ে গেছে এবং নিয়েছে নিজেকে। শুধু লুপিতা যদি একবার দেশে ফিরত! পরির মতো দেখতে হয়েছে লুপিতা। গাজী কালু বলেছে। ফেসবুকে গাজী কালুর সঙ্গে আছে লুপিতা। ৮ বছর আগে লুপিতার সঙ্গে একবার ফোনে কথা বলেছিল মিস্টার এন্ডারসন। ওই একবারই। লুপিতা একটা কথাই বলেছে। আমি তোমাকে হেইট করি। রিনরিনে মিষ্টি লুপিতার কণ্ঠস্বর কী তীক্ষè হয়ে গিয়েছিল। গাজী কালু বুদ্ধিমতী মেয়ে। মিস্টার এন্ডারসন তার মেয়ে সম্পর্কে যা যা জানতে চায় বলে। মিস্টার এন্ডারসন বললে নিশ্চয় মেয়ের পিকচার গ্যালারির ছবিও দেখাত। কিন্তু সেটা কখনই দেখাতে বলে না মিস্টার এন্ডারসন। পিকচার গ্যালারির ছবি দেখবে না, তার মেয়ের সঙ্গে অবশ্যই তার অন্তত একবার দেখা হোক চায় সে। গাজী কালু দায়িত্ব নিয়েছে। সেই ব্যবস্থা করে দেবে সে। আবার কল দিল মিস্টার এন্ডারসন। গাজী কালুকে। ‘ঘুমিয়ে পড়েছিস?’ ‘না। বলো।’ ‘লুপিতার সঙ্গে আমার দেখা করিয়ে দিবি না তুই?’ ‘দেবো তো! আরে!’ ‘আরে না। কবে দেখা করিয়ে দিবি? আমি মরে গেলে?’ ‘তোমার কী মনে হয়? তুমি কবে মরবে?’ ‘আজ রাতে যদি মরে যাই?’ ‘আজ রাতে? আজ রাতে মরে যেও না। কাল সকালে তোমার সঙ্গে দেখা হবে লুপিতার। আমি এখন ঘুমাই। তুমিও ঘুমাও।’ বলে ফোনের লাইন কেটে দিল গাজী কালু। মিস্টার এন্ডারসন অল্প হাসল। বাচ্চা একটা! কাল সকালেই লুপিতার সঙ্গে সে দেখা করিয়ে দেবে! তার নিজের ঘটনাটা কী? স্লিপ ওয়াক, নাজমুল ভাই, বানানো গল্প। তা হলে? দিন রাত কিছু ব্যাপার না কখনই, যখন তখন মিস্টার এন্ডারসনের ফ্ল্যাটে অনুপ্রবেশ করার অধিকার আছে গাজী কালুর। দোহাই কেন তবে স্লিপ ওয়াকের? পুলিশের এসআই নাজমুল ভাইয়ের? পাগলি! ঘুম ধরল মিস্টার এন্ডারসনেরও। ‘মেট্রিক্সের’ দ্য ওয়ান, নিও তো না সে, অতি সাধারণ একজন মানুষ। পাবলিকের অংশ। তার বউ তাকে ছেড়ে চলে গেছে এবং সে আর সংসার করেনি। পরির মতো একটা মেয়ে আছে তার। মেয়েটা তাকে হেইট করে। কেন? তাসনুভার ইনফ্লুয়েন্স? ফজরের আজান হলো মহল্লার মসজিদে। ঘুমিয়ে পড়ল এবং পরদিন দুপুর ১২টায় ঘুম থেকে উঠল মিস্টার এন্ডারসন। অনির্বচনীয় এক অনুভূতি নিয়ে। লুপিতা কি ঘুম থেকে উঠেছে? কাল রাতে দেশে ফিরেছে মেয়েটা। ১৯ বছর পর। হযরত শাহজালাল বিমান বন্দরে তার ফ্লাইট ল্যান্ড করেছে রাত ১টায়। মিস্টার এন্ডারসন তাকে রিসিভ করতে গিয়েছিল। রাস্তা ফাঁকা ছিল অত রাতে। বিমানবন্দর থেকে বাসায় ফিরতে তাদের মাত্র ৪১ মিনিট লেগেছে। বাপ বেটি রাত জেগেছে আরো। ১৯ বছরের গল্প ফুরায় সহজে? কফি বানিয়ে মেয়েকে ডাকবে, মিস্টার এন্ডারসন একটা সিগারেট ধরাতে গিয়েও ধরাল না। দরজা খুলে গেল লুপিতার ঘরের। হলুদ একটা নাইট ড্রেস পরে আছে লুপিতা। অপরূপা এক হলুদ পরি মনে হচ্ছে। মিস্টার এন্ডারসনকে দেখে সে হাসল, ‘মর্নিং, বাপ।’ ‘মর্নিং, বেটি!’ দুপুর ১২টা। এখন কি সকাল? তাদের সকাল। ফোন বাজল মিস্টার এন্ডারসনের। গাজী কালু কলিং...। মিস্টার এন্ডারসন ধরল, ‘তুই? কোথায়?’ ‘কেন? বাসায়!’ গাজী কালু হাসল। মিস্টার এন্ডারসন বলল, ‘হাসির কী হলো?’ গাজী কালু বলল, ‘বঁ জুখ, মসিয়ো এন্ডারসন।’

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App