×

জাতীয়

প্রধানমন্ত্রীর দিল্লী সফরে ১০টিরও বেশি চুক্তি-সমঝোতা

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০২ অক্টোবর ২০১৯, ০৮:২২ পিএম

চার দিনের সফরে বৃহষ্পতিবার (৩ অক্টোবর) নয়াদিল্লী যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রথম দুইদিন তার সফরসূচি ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম কেন্দ্রিক। পরে শনিবার (৪ অক্টোবর) তিনি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে বৈঠকে বসবেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এ সফরকালে ১০ থেকে ১২টি সমঝোতা স্মারক সই হতে পারে বলে জানা গেছে।

এছাড়া এ সফরে তিস্তাসহ অভিন্ন নদীর পানিবণ্টন নিয়ে আলোচনা হবে বলেও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে। পরে বৃহষ্পতিবার (৩ অক্টোবর) সন্ধ্যায় তিনি নয়াদিল্লীতে বাংলাদেশ হাইকমিশন আয়োজিত এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠান ও নৈশভোজে যোগ দেবেন। এসময় তার সঙ্গে একটি উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধি দল থাকছে।

এদিকে বুধবার (২অক্টোবর) পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয় আয়োজিত এক সংবাদ সন্মেলনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বৃহষ্পতিবার চারদিনের সফরে ভারত যাচ্ছেন। প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরকালে ১০ থেকে ১২টি সমঝোতা স্মারক সই হতে পারে। এছাড়া এ সফরে তিস্তাসহ অভিন্ন নদীর পানিবণ্টন নিয়ে আলোচনা হবে বলেও সাংবাদিকদের জানান তিনি। এ সময় পররাষ্ট্র সচিব এম শহীদুল হকও উপস্থিত ছিলেন । সফর শেষে রবিবার (৫অক্টোবর) প্রধানমন্ত্রী ঢাকায় ফিরবেন বলে জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী ।

ড. মোমেন বলেন, প্রধানমন্ত্রী ৩-৪ অক্টোবর ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামে যোগ দেবেন। আগামী ৫ অক্টোবর ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে বৈঠক করবেন। বৈঠকে রোহিঙ্গা ইস্যু, আসামে নাগরিক তালিকা হালনাগাদ, তিস্তাসহ অভিন্ন নদীর পানি বন্টন বিষয়গুলো গুরুত্বপাবে। দুই প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে আলোচনা শেষে যুব ও ক্রীড়া, সংস্কৃতি, নৌ পরিবহন, অর্থনীতি, সমুদ্র গবেষণা, পণ্যের মান নির্ধারণ, বাণিজ্য, শিক্ষা, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি ও অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠাখাতে একাধিক সমঝোতা সই হতে পারে।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, দুই প্রধানমন্ত্রীর বৈঠকে সীমান্ত হত্যা প্রতিরোধ, উন্নয়ন-জ্বালানি খাতে সহযোগিতা, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন, বঙ্গবন্ধুর জন্ম শতবার্ষিকী ইত্যাদি নিয়েও আলোচনা হবে।

এছাড়া নয়াদিল্লীতে ঐতিহাসিক হায়দরাবাদ হাউসে শনিবার (৪অক্টোবর) বেলা সাড়ে ১১টা থেকে ১টা পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। পরে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সৌজন্যে আয়োজিত ভারতের প্রধানমন্ত্রীর মধ্যাহ্নভোজে যোগ দেবেন শেখ হাসিনা। এদিন বিকেলে শেখ হাসিনা ভারতের রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের সঙ্গেও সাক্ষাৎ করবেন।

এর আগে সকালে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। পরে শেখ হাসিনা রোববার (৫অক্টোবর) ভারতের কংগ্রেস পার্টির প্রধান সোনিয়া গান্ধীর সঙ্গেও বৈঠক করবেন।

এ ছাড়া জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবন ও কর্মভিত্তিক ফিচার ফিল্ম তৈরির বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনার জন্য ভারতের প্রখ্যাত চলচ্চিত্র পরিচালক শ্যাম বেনেগাল রোববার শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন। ভারতের ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদের সঙ্গেও প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাৎ সূচি রয়েছে বলে জানা যায়।

উল্লেখ্য, গত সপ্তাহে নিউইয়র্কে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বৈঠকের পর নয়াদিল্লীতে শনিবার তারা আনুষ্ঠানিক বৈঠকে বসবেন। ইতিমধ্যে নরেন্দ্র মোদি স্পষ্ট জানিয়েছেন, আসামে নাগরিক তালিকা হালনাগাদ নিয়ে বাংলাদেশের উদ্বেগের কিছু নেই। জম্মু ও কাশ্মির প্রশ্নে ভারতের সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ বিলোপ করাকে দেশটির অভ্যন্তরীণ বিষয় হিসেবে দেখছে বাংলাদেশ। আসন্ন এই বৈঠকে দুই দেশের ভবিষ্যৎ সম্পর্কের রূপরেখা এবং আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক পরিস্থিতি নিয়েও আলোচনা হবে।

অন্যদিকে প্রধানমন্ত্রীর এবারের সফরেও তিস্তার পানিবণ্টন চুক্তি নিয়ে বড় কোনো অগ্রগতি হয়তো হচ্ছে না এমনি মনে করছেন অনেকে। তবে তিস্তার বাইরে সাতটি নদীর পানিবণ্টন চুক্তি সইয়ের বিষয়টি দুই দেশ গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করছে বলে পররাষ্ট্রমন্ত্রনালয় সূত্রে জানা গেছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, নয়াদিল্লী ওই চুক্তি সইয়ের জন্য অঙ্গীকারবদ্ধ ও প্রস্তুত। কিন্তু তিস্তা নদীটি যেহেতু ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে, সে জন্য ওই রাজ্যের সম্মতি ছাড়া তিস্তার পানিবণ্টন চুক্তি করতে পারবে না ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার। তবে আগামী শনিবার নয়াদিল্লীর হায়দরাবাদ হাউসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে দুই দেশের শীর্ষ বৈঠকে ওই সাত নদীর পানিবণ্টনে চুক্তি সইয়ের জন্য তথ্য হালনাগাদ করার কাজ বেগবান করার তাগিদ দেয়া হবে। যৌথ বিবৃতিতেও এ বিষয়টি উল্লেখ থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।

এদিকে নয়াদিল্লীতে বাংলাদেশের হাইকমিশনার সৈয়দ মোয়াজ্জেম আলী বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরে দুই দেশের মধ্যে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন ও তিস্তার পানিবণ্টন বিষয়ে আলোচনার পাশাপাশি আটটি চুক্তি/সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষরিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। যোগাযোগ, সংস্কৃতি, কারিগরি সহযোগিতা, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ খাতে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হতে পারে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App