×

শিক্ষা

ভিসি নাসিরের পদত্যাগ, আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০১ অক্টোবর ২০১৯, ১১:১৮ এএম

ভিসি নাসিরের পদত্যাগ, আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা
পদত্যাগ করেছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ড. খন্দকার নাসির উদ্দিন। রবিবার (২৯ সেপ্টেম্বর) রাতের আঁধারে ক্যাম্পাস থেকে পালিয়ে এসে সোমবার (৩০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিবের (বিশ্ববিদ্যালয়) কাছে পদত্যাগপত্র দাখিল করেছেন। সাদা কাগজে লিখিত পদত্যাগপত্রটি হাতে পাওয়ার পর শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব আবদুল্লাহ আল হাসান চৌধুরী শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনির কাছে হস্তান্তর করেন। সোমবার বিভিন্ন কর্মসূচি নিয়ে শিক্ষামন্ত্রী, শিক্ষা উপমন্ত্রী এবং মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব ব্যস্ত ছিলেন। অতিরিক্ত সচিব পদত্যাগপত্রটি সেখানে নিয়ে যান এবং মন্ত্রীর হাতে তুলে দেন। জানতে চাইলে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি উপাচার্যের পদত্যাগপত্র হাতে পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন। আইন অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি। আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসিদের সঙ্গে এক বৈঠকের মাঝে শিক্ষামন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসিদের একাডেমিক ও প্রশাসনিক নেতৃত্বের অনেক অভিজ্ঞতা থাকে। এসব বিষয় বিবেচনা করে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি হিসেবে রাষ্ট্রপতি তাদের নিয়োগ দিয়ে থাকেন। তারপরও কোথাও কোথাও ভিসিদের নিয়ে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা সৃষ্টি হয়। আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে আমরা সে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করি। অধ্যাপক নাসিরের বাড়ি গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলার সাতাশিয়া গ্রামে। ময়মনসিংহের বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়ার পর সেখানেই বায়ো টেকনোলজির শিক্ষক হিসেবে যোগ দিয়েছিলেন তিনি। ২০১৫ সালে তিনি বশেমুরবিপ্রবির উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ পান। নিজের জেলার বিশ্ববিদ্যালয়ে দায়িত্ব নেয়ার পর থেকে ক্ষমতার অপব্যবহারসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠছিল তার বিরুদ্ধে। এ নিয়ে লেখালেখিতে বাধা দেয়ার অভিযোগও তার বিরুদ্ধে ওঠে। একটি ফেসবুক পোস্টের জন্য গত ১১ সেপ্টেম্বর একটি দৈনিকের বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক ও আইন বিভাগের এক শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কার করার পর উপাচার্য নাসিরের বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। এর মধ্যেই ওই শিক্ষার্থী ও উপাচার্যের কথোপকথনের একটি অডিও ভাইরাল হয়, যেখানে ওই ছাত্রীকে বকাঝকা ও হুমকি-ধমকি দিতে শোনা যায় উপাচার্যকে। মেয়েটির বাবাকে নিয়েও তির্যক মন্তব্য করেন তিনি। ওই অডিও ছড়িয়ে পড়ার পর দেশজুড়ে উপাচার্যের সমালোচনার পাশাপাশি বিশ^বিদ্যালয়ে তার বিরুদ্ধে আন্দোলনও জোরদার হয়। বিক্ষোভের মুখে ১৮ সেপ্টেম্বর ওই শিক্ষার্থীর বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। পরদিন বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে ১৪টি বিষয়ে আশ্বাস দেয়া হয়, যার মধ্যে সাধারণ শিক্ষার্থীদের বাক?স্বাধীনতার নিশ্চয়তা, ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ ছাড়া বহিষ্কার না করা, অভিভাবকদের ডেকে এনে অপমান না করা এবং ফেসবুক পোস্ট ও কমেন্টকে কেন্দ্র করে কোনো শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার করা হবে না। তাতে সন্তুষ্ট না হয়ে শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে অনশনসহ আন্দোলন অব্যাহত রাখেন। এ আন্দোলন ঠেকাতে ২১ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করেন উপাচার্য। শিক্ষার্থীরা তার প্রতিবাদ করলে একদল বহিরাগত হামলা চালিয়ে অন্তত ২০ জনকে আহত করে। ওই হামলার জন্য উপাচার্যকে দায়ী করে পদত্যাগ করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের তিনজন সহকারী প্রক্টর। এদিকে উপাচার্যের পদত্যাগে এক দফা দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনও চলতে থাকে। এই পরিস্থিতিতে ঘটনা তদন্তে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে কমিটি করে ইউজিসি। সেই কমিটি রবিবার তাকে উপাচার্যের পদ থেকে প্রত্যাহারের সুপারিশ করে। এরপর রবিবারই সন্ধ্যার পর পুলিশ প্রহরায় বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস ছেড়ে যান তিনি।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App