×

মুক্তচিন্তা

ক্যাম্পাসে শিক্ষার পরিবেশ নিশ্চিত করুন

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ১০:২৭ পিএম

সম্প্রতি সাতটি বিশ্ববিদ্যালয়ে বেশকিছু ইস্যুতে অস্থিরতা সৃষ্টি হয়েছে। জাতীয় রাজনীতিতে যখন মোটামুটি স্থিতিশীল অবস্থা বিরাজ করছে, ঠিক সে সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ছোটখাটো ঘটনায় অস্থিরতা আমাদের ভাবিয়ে তুলেছে। এমতাবস্থায় সাধারণ শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকরা উদ্বিগ্ন ও দুশ্চিন্তাগ্রস্ত। এটা প্রশমন করতে না পারলে শিক্ষার্থীদের ফের সেশনজটের কবলে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। উত্তপ্ত ক্যাম্পাসগুলো শান্ত করতে সব পক্ষকে যৌক্তিক অবস্থানে থেকে দ্রুত সমস্যার সমাধানে উদ্যোগী হতে হবে। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে যে সমস্যা ও অস্থিরতা লক্ষ করা যাচ্ছে, তা সুনির্দিষ্ট কোন কারণে ঘটেছে তা বলা যায় না। একেকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে একেকটি কারণে বিদ্যমান সমস্যা তৈরি হয়েছে। এই সাতটি বিশ্ববিদ্যালয়ে সাত রকম আন্দোলন হচ্ছে। এগুলো হচ্ছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, দিনাজপুরের হাজী দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ও বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়। এসব বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনোটিতে উপাচার্যের বিরুদ্ধে শিক্ষকদের, আবার কোনোটিতে উপাচার্যের স্বৈরাচারী মনোভাবের বিরুদ্ধে, কোনোটিতে যৌন নিপীড়ন নিয়ে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন চলছে। তবে আন্দোলনের রকমফের হলেও সব উপাচার্যই প্রায় একইরকম ‘দমননীতি’ প্রয়োগ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে চাইছেন। কিন্তু এতে পরিস্থিতি আরো ঘোলাটে হয়ে শিক্ষার পরিবেশই নষ্ট হচ্ছে। প্রচলিত আইন অনুসারে দেশের রাষ্ট্রপতি এসব বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য। শিক্ষা মন্ত্রণালয় শুধু রাষ্ট্রপতির দপ্তরকে সাচিবিক কাজগুলো করে দেয়। যদিও বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর অস্থিরতা নিরসনের দায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ওপরই বর্তায়। অথচ উচ্চশিক্ষায় এ জাতীয় অস্থিরতা বিরাজ করলেও শিক্ষা মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে এখনো নিষ্ক্রিয় হয়ে আছে বলে অভিযোগ উঠেছে। শুধুমাত্র ব্যতিক্রম দেখছি গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরবিপ্রবি) ক্ষেত্রে। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের বিতর্কিত উপাচার্য প্রফেসর ড. খোন্দকার নাসিরউদ্দিনকে প্রত্যাহার করার সুপারিশ করার পর রবিবার রাতে তিনি ক্যাম্পাস ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন। ক্ষমতার অপব্যবহারসহ নানা অভিযোগে আলোচিত উপাচার্য নাসিরের পদত্যাগ দাবিতে আন্দোলন করছিলেন শিক্ষার্থীরা। নাসিরকে প্রত্যাহারের বিষয়টিকে শিক্ষার্থীরা প্রাথমিকভাবে জয় হিসেবেও দেখছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে যে ঘটনাই ঘটুক না কেন, তা সমাধানের দায়িত্ব মূলত প্রশাসনের ওপরই বর্তায়। উচ্চশিক্ষায় এ রকম উত্তাল পরিস্থিতি দ্রুত নিয়ন্ত্রণে আনতে শিক্ষা মন্ত্রণালয় নিজে অথবা বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) মাধ্যমে সমাধান সূত্র বের করা উচিত। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, চাওয়া বা দাবিগুলো শুনতে হবে এবং যতদূর সম্ভব যৌক্তিক দাবিগুলো মেনে নিতে হবে। শিক্ষার্থীদের আস্থায় নিয়ে যদি বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনা করা যায়, তাহলে কোনো সমস্যা হওয়ার কথা নয়। আমরা আশা করব, যেসব বিশ্ববিদ্যালয়ে অস্থিতিশীলতা দেখা দিয়েছে সেসব প্রতিষ্ঠানের সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে দ্রুত অচলাবস্থার অবসানে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করবে প্রশাসন।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App