×

মুক্তচিন্তা

একা নন প্রধানমন্ত্রী, তবে...

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ১০:৫২ পিএম

আওয়ামী লীগের জন্য এখন ঘুরে দাঁড়ানোর একটি অনুকূল পরিবেশ তৈরি হয়েছে যখন দুর্নীতিবাজ, দুর্বৃত্ত বলে পরিচিতরা দলে পদ-পদবি পাওয়ার জন্য ভিড়ছে না বা ঠেলাঠেলি করছে না। তারা আপনা আপনি চিহ্নিত হয়ে গেছেন যে, তারা আদর্শের জন্য নয় ব্যক্তি স্বার্থেই আওয়ামী লীগে ছিলেন বা এসেছিলেন। অবশ্যই দুর্নীতির বিরুদ্ধে অভিযান চলমান থাকবে। সেই অভিযানে দুর্নীতিবাজরা আপনা থেকেই ছিটকে পড়বে।

দুর্নীতির বিরুদ্ধে গত ১৮ সেপ্টেম্বর অভিযান শুরুর পর থেকে অনেকে আশঙ্কা করছেন যে, এই অভিযান যতবেশি চলতে থাকবে ততবেশি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দল এবং সরকারে নিঃসঙ্গ হয়ে পড়তে পারেন। এই আশঙ্কা কারো কারো কাছে যথার্থ মনে হতে পারে, তবে আওয়ামী লীগ সরকার এবং সচেতন মহলে শেখ হাসিনার অবস্থানের সঙ্গে একাত্ম হওয়ার মতো অসংখ্য মানুষ রয়েছেন যারা ডাক পেলে একাত্তরের মতো তার পাশে এসে দাঁড়াতে দেরি করবেন বলে মনে হয় না।

আওয়ামী লীগ ২০০৯ সালে ক্ষমতায় আসার পর দুর্নীতির বিষয়টি প্রথমদিকে ততটা দৃশ্যমান হয়নি। কারণ ২০০৭-০৮ সালে দেশে সেনাসমর্থিত সরকার দুর্নীতির বিরুদ্ধে মাঠে নেমেছিল, তাতে বাড়াবাড়িও তারা অনেককিছু করেছিল। তবে শেখ হাসিনার নতুন সরকার আসার পর বেশ কিছুদিন নেতাকর্মীদের মধ্যে দুর্নীতির প্রতি আসক্তির মনোভাব তেমন দেখা যায়নি। তারপরও বিপুল জনসমর্থন নিয়ে সরকার গঠিত হওয়ার পর নেতাকর্মীদের মধ্যে যে উচ্ছ্বাস ছিল তা থেকে বিচ্যুতির ছোটখাটো ছিদ্র তৈরি হতে থাকে যা দেখে গণমাধ্যমে আমরা অনেকেই আওয়ামী লীগকে এ বিষয়ে মনোযোগ দেয়ার কথা লিখেছিলাম। তখন অনেকেই হয়তো ভেবেছিলেন যে, ছোটখাটো দুর্নীতি আপনা থেকেই রোধ করার উদ্যোগ আওয়ামী লীগ নেবে। কিন্তু পরবর্তী সময়ে দেশে সরকারবিরোধী নানা আন্দোলন এবং যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ইত্যাদিকে কেন্দ্র করে সরকার এবং আওয়ামী লীগের মনোযোগ অনেকটাই রাজপথের দিকে ছিল। তবে সেই সময় দলে বড় ধরনের কোনো দুর্নীতির প্রবণতা মানুষের চোখে পড়েনি। কিছু কিছু স্থানীয় নেতাকর্মী বলে পরিচয়দানকারী ব্যক্তি গোপনে চাঁদাবাজির মতো কিছু অপকর্মের সঙ্গে জড়িত ছিল। দুর্নীতির সঙ্গে জড়িয়ে পড়ার প্রবণতা দ্বিতীয় মেয়াদে সরকার ক্ষমতায় আসার পর ব্যাপকভাবে বেড়ে যায়। তখন নানাভাবে বলার চেষ্টা করা হয়েছিল যে, আওয়ামী লীগের নাম ভাঙিয়ে ছাত্রলীগ যুবলীগসহ অনেকেই অর্থবিত্তের পেছনে দৌড়াচ্ছেন, নানা ধরনের বৈধ-অবৈধ ব্যবসা, চাঁদাবাজি, সরকারি, ব্যক্তি মালিকানা জায়গা সম্পত্তি, প্রতিষ্ঠান ইত্যাদিতে প্রভাব বিস্তার, কোথাও কোথাও দখলদারিত্ব প্রতিষ্ঠা করা শুরু করেছে। এ নিয়েও দলকে অনেকেই সতর্ক হওয়ার, মনোযোগ দেয়ার, দুর্নীতিবাজদের হটিয়ে আদর্শবানদের দলে জায়গা করে দেয়ার নানা ধরনের পরামর্শ গণমাধ্যমে দিয়েছেন। তখন থেকে যদি আওয়ামী লীগ এই বিষয়গুলোর প্রতি মনোযোগী হতো, দলকে দুর্বৃত্তদের কবল থেকে মুক্ত করার উদ্যোগ নিত তাহলে আওয়ামী লীগ সম্পর্কে আজ যেসব কথা বলতে হচ্ছে, শুনতে হচ্ছে এসব হয়তো বলতে বা শুনতে হতো না। দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসায় সমাজের ওঁৎ পেতে থাকা দুর্নীতিবাজ, চাঁদাবাজ, টেন্ডারবাজ, ভূমিদস্যু, ক্যাসিনো দস্যুসহ বিভিন্ন অপরাধী ব্যক্তি ও গোষ্ঠী আওয়ামী লীগের বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনে পদ-পদবি বাগিয়ে নেয়ার মহড়ায় মেতে ওঠে। ধারণা করা হয়ে থাকে এখন যেসব দুর্বৃত্ত, সম্রাট, রাজা-বাদশা, পাইক-পেয়াদার কথা শোনা যাচ্ছে এদের আওয়ামী লীগের বিভিন্ন সংগঠনে অনুপ্রবেশের বাঁধভাঙা জোয়ার ২০১৫-১৬ সালের দিকেই শুরু হয়। অঙ্গ সংগঠন নামে পরিচিত দলের পদ-পদবিগুলো যারা লাভ করলেন তাদের অতীত, রাজনৈতিক ভূমিকা কেন দেখা হয়নি, যাচাই-বাছাই করা হয়নি কিংবা কাদের সুপারিশে আওয়ামী লীগের মতন একটি সংগঠনের অঙ্গ সংগঠনে পদ-পদবি দেয়ার ক্ষেত্রে সুযোগ করে দেয়া হলো, কিসের বিনিময়ে তা করা হলো সেটি এখন নানাভাবে আলোচিত হচ্ছে। এই মুহূর্তে ধারণা করা হচ্ছে আওয়ামী লীগের অনেক অঙ্গ সংগঠনের পদ-পদবি লাভের ক্ষেত্রে দলীয় রাজনীতির চাইতে বিশেষ কোনো ব্যক্তি-গোষ্ঠীর স্বার্থ, ইচ্ছা-অনিচ্ছা ইত্যাদি প্রাধান্য পেয়েছিল। এভাবে তো আওয়ামী লীগের মতো কোনো রাজনৈতিক দলের অঙ্গ সংগঠনের রাজনীতি চলতে পারে না। কিন্তু এভাবেই তো মনে হয় সবকিছু চলে এসেছে।

প্রত্যেকটি সংগঠনেরই যারা নেতা থাকেন তাদের দায়দায়িত্ব অনেক বেশি থাকে। মনে হয় এই বিষয়গুলো এসব সংগঠন মোটেও গুরুত্বের সঙ্গে দেখেনি। সে কারণে দুর্নীতির বিরুদ্ধে সূচিত অভিযানের শুরুতেই এমন চিত্র ফুটে ওঠায় সচেতন মহল ভীষণভাবে আশ্চর্যান্বিত হয়েছেন। বুঝা গেছে মূল দল আওয়ামী লীগ যেসব অনুমোদিত অঙ্গ সংগঠন কিংবা অনুমোদনবিহীনভাবে পরিচয় দানকারী সংগঠনের ব্যাপারে তেমন কোনো নজরদারি প্রতিষ্ঠা করেনি। ফলে এই সংগঠনগুলো কীভাবে চলেছে, কী কাজ করছে সে বিষয়ে মূল দলের কাছে কোনো প্রতিবেদন নিয়মিতভাবে উপস্থিত করা হয়নি। আদৌ আওয়ামী লীগে এ ধরনের কোনো ব্যবস্থা আছে কিনা তা আমাদের কাছে জানা নেই। তবে আওয়ামী লীগের মতো বিশাল রাজনৈতিক দলের এতসব সম্পাদক-উপসম্পাদক থাকা সত্ত্বেও কেন অধীনস্ত সংগঠনগুলোর বিষয়ে মূল দলের নিয়ন্ত্রণ থাকবে না সেটি বোধগম্য নয়। মনে হয় এরই খেসারত এখন মূল দলকে দিতে হচ্ছে। তবে আওয়ামী লীগ যেহেতু এখন শেখ হাসিনার শুদ্ধি অভিযান, দুর্নীতিবিরোধী অভিযান ইত্যাদিকে নিঃসংকোচে সমর্থন দান করছে সেহেতু দ্রুত সব অঙ্গ সংগঠনের ব্যাপারে খোঁজখবর নিয়ে ব্যত্যয় ঘটার মতো যা কিছু নজরে আসবে তার ব্যাপারে দলের আদর্শ, শৃঙ্খলা ও গঠনতন্ত্র মোতাবেক ব্যবস্থা নেয়ার উদ্যোগ এখনি জরুরি হয়ে দাঁড়িয়েছে। দলে এবং অঙ্গ সংগঠনে গত কয়েক বছরে যেসব ব্যক্তি কোনো ধরনের শৃঙ্খলা পরিপন্থি কাজ করেছেন বলে মনে হবে সেটি তদন্ত শেষে নিয়মানুযায়ী ব্যবস্থা নিতে কোনো ধরনের দ্বিধা করা উচিত নয়।

গত কয়েক বছর ধরে মাঠের রাজনীতিতে আওয়ামী লীগ সক্রিয় ছিল বলে মনে হয়নি। কিছু দিবস পালন, আলোচনা অনুষ্ঠান, পদ-পদবি ব্যবহার করা ইত্যাদির বাইরে দলীয় কর্মকাণ্ড সম্প্রসারিত হয়নি। সাধারণ মানুষের কাছে যাওয়া, খোঁজখবর নেয়া, সরকার কর্তৃক প্রদত্ত সুযোগ-সুবিধা সাধারণ মানুষ যথাযথভাবে পাচ্ছে কি পাচ্ছে না, স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতারা সাধারণ মানুষের কাছে ঠিকমতো যাচ্ছে কি যাচ্ছে না, সরকারের দেয়া সুযোগ-সুবিধা বণ্টনে দলীয় নেতাকর্মীরা বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে কিনা, দুর্নীতি হচ্ছে কিনা এসব বিষয়ে কেন্দ্রীয় কিংবা জেলা পর্যায়ের নেতারা কখনো এলাকাগুলোতে প্রকাশ্যে কিংবা গোপনে খোঁজখবর নিতেন বলে মনে হয় না। ফলে তৃণমূলের নেতাকর্মীদের মধ্যে অনেকেই রাজনীতির আদর্শ ধারণ করার চাইতে ব্যক্তিগত স্বার্থসিদ্ধিতেই জড়িয়ে পড়ে। প্রায় সর্বত্রই এই অভিযোগটি অনেক আগে থেকেই উচ্চারিত হয়ে আসছিল। জনগণের কাছে থেকে এরাই আওয়ামী লীগকে তাদের কর্মকা-ের কারণে বিচ্ছিন্ন করে ফেলছিল। এদের অনেকেরই অতীত রাজনীতি আওয়ামী লীগ না হওয়া সত্ত্বেও স্থানীয় নেতাদের ম্যানেজ করার মাধ্যমে তারা আওয়ামী লীগের নেতা বলে পরিচিত হয়ে ওঠেন। ফলে দেশের উন্নয়ন ঘটাতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যেসব পরিবর্তন জনজীবনে আনতে সক্ষম হয়েছেন তা মানুষ স্বীকার করলেও স্থানীয় পর্যায়ে কোনো কোনো নেতার দুর্নীতি, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে প্রভাব বিস্তার, আঙুল ফুলে কলাগাছ হওয়ার কারণে আওয়ামী লীগের জনপ্রিয়তা যেভাবে বৃদ্ধি পাওয়ার কথা ছিল তা হয়নি। এ ধরনের ফিরিস্তি অনেকই দেয়া যাবে। তেমন বর্ণনা দিয়েই অনেকে হতাশা ব্যক্ত করেন এই বলে যে, দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রীর এই অভিযানে আওয়ামী লীগের ভেতরে এবং বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনের মধ্যে যেসব নেতাকর্মী রয়েছে তাদের অনেকেই এই অভিযোগে অভিযুক্ত হতে পারেন। সে ক্ষেত্রে তারাই শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে নানা ধরনের ষড়যন্ত্র পাকাতে পারে। এসব আশঙ্কাকে উড়িয়ে না দিয়েও বলতে পারি দুর্বৃত্ত, দুর্নীতিবাজ ও সন্ত্রাসীরা তখনই বেপরোয়া-বেসামাল থাকে যখন তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয় না। যখনই অভিযানের উদ্যোগ নেয়া হয় তখনই তাদের স্বরূপটি সর্বত্র উন্মোচিত হয়ে পড়ে। তারা কীভাবে পালিয়ে বেড়ায় সেটি গত কয়েকদিনের অভিযানের ঘটনা থেকেই প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে। ঢাকার বিভিন্ন ক্লাবে এখন আর সেসব ‘বীরদের’ আসা-যাওয়া হচ্ছে না, এমনকি আওয়ামী লীগের বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনের অফিসেও অনেকের উপস্থিতি প্রায় নেই, অফিসে উপস্থিত নেতাকর্মীর সংখ্যা কমে আসছে বলে শোনা যাচ্ছে। এটি কী ইঙ্গিত করে। আমার তো মনে হয় আওয়ামী লীগের এখন সুযোগ এসেছে দলের সৎ, নির্ভীক, আদর্শবান ও নিষ্ঠাবান কর্মী কারা তাদের চিনে নিতে। যারা দলকে ব্যবহার করে নিজেদের স্বার্থ উদ্ধার করেছে তাদের তো আওয়ামী লীগে প্রয়োজন নেই। তাদের প্রয়োজন ছিল আওয়ামী লীগের। যেহেতু আওয়ামী লীগ এখন সরকারে আছে তাই যা কিছু অপরাধ, দুর্নীতি, অন্যায়, চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি করা হয়েছে তা সরকার দলের নাম ভাঙিয়ে করা হয়েছে। হয়তো এরা দলের কিছু নেতাকর্মীকে সুবিধা দিয়েছে। যারা নিয়েছেন তারাও সমান অপরাধ করেছেন। তারা আদর্শের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে পারেননি। আর যারা ফিরেছেন তারাই দলের পোড় খাওয়া নেতাকর্মী বলে পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন। এরা বিরোধী দলে থাকার সময় দলের রাজনীতিকে এগিয়ে নেয়ার জন্য ত্যাগ স্বীকার করেছেন। সরকারে থাকার সময় লোভ-লালসার ঊর্ধ্বে থেকে, দলের পদ-পদবি পেয়ে না পেয়ে দলের হয়ে থাকার পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন এমন নেতাকর্মীরাই এখন শেখ হাসিনার পাশে দাঁড়াবেন। এটি নিশ্চিত করে বলা যায় যারা দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনার বিশ্বাস ভঙ্গ করেছেন তাদের ব্যাপারে দল সিদ্ধান্ত নিতে পারে। তবে আওয়ামী লীগের জন্য এখন ঘুরে দাঁড়ানোর একটি অনুকূল পরিবেশ তৈরি হয়েছে যখন দুর্নীতিবাজ, দুর্বৃত্ত বলে পরিচিতরা দলে পদ-পদবি পাওয়ার জন্য ভিড়ছে না বা ঠেলাঠেলি করছে না। তারা আপনা আপনি চিহ্নিত হয়ে গেছেন যে, তারা আদর্শের জন্য নয় ব্যক্তি স্বার্থেই আওয়ামী লীগে ছিলেন বা এসেছিলেন।

অভিযানের শুরুর পর থেকে দেশে দুর্নীতির বিরুদ্ধে যে জনমত তৈরি হয়েছে তাকে এগিয়ে নেয়ার জন্য শেখ হাসিনা দল, সরকার, প্রশাসনসহ সর্বত্র মানুষের সমর্থনকে কাজে লাগানোর একটি অপার সুযোগ পেয়েছেন। দলের সৎ, ত্যাগী, আদর্শবান এবং যোগ্য মানুষগুলোকে সামনে নিয়ে আসার এখনই তার সুযোগ এসেছে। তিনি তাদের ব্যবহার করে আওয়ামী লীগকে আগামী দিনের জন্য নতুনভাবে ঢেলে সাজাতে পারেন। একইসঙ্গে বহু বঙ্গবন্ধুর অনুসারী মুক্তিযুদ্ধের আদর্শের বিশ্বাসী মানুষ এই সমাজ ও বিভিন্ন পেশায় ছিলেন এবং আছেন যারা আদর্শের রাজনীতির অপেক্ষায় ছিলেন, আওয়ামী লীগে রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হওয়ার ক্ষেত্রে তাদের অনেক বাধা ছিল। এখন শেখ হাসিনা দলীয় প্রধান হিসেবে সেসব যোগ্য, সৎ এবং মেধাবী মানুষদের, তরুণদের মূল দল আওয়ামী কিংবা অনুমোদিত অঙ্গ সংগঠনগুলোতে স্থান করে দিতে পারেন। যুবলীগ এক সময় আওয়ামী যুবকদের সংগঠন ছিল। সেই ভাবমূর্তি এখন আর সংগঠনটির নেই। দলের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করতে পারে দল এবং দেশের জন্য আওয়ামী লীগও বঙ্গবন্ধুর আদর্শ বাস্তবায়নে কাজ করতে পারেন এমন যোগ্য যুবকদের সেই সংগঠনে যুক্ত করতে পারেন। কৃষকলীগে কৃষক ছাড়া অন্যদের স্থান হওয়ার সুযোগ আছে কি? এই বিষয়গুলো নিয়ে দলীয় প্রধান এবং তার বিশ্বস্ত ঘনিষ্ঠরা এখনি নতুন করে ভাবনাচিন্তা করবেন, সিদ্ধান্ত নিবেন সেটি সবার আশা।

অবশ্যই দুর্নীতির বিরুদ্ধে অভিযান চলমান থাকবে। সেই অভিযানে দুর্নীতিবাজরা আপনা থেকেই ছিটকে পড়বে। দুর্বৃত্তরা আইনের কাছে সোপর্দ হবে। সেভাবেই সামনের দিনগুলো যদি ঠিক করা হয় তাহলে শেখ হাসিনার পাশে মুক্তিযুদ্ধের আদর্শের প্রকৃত অনুসারীদের সম্মিলন ঘটতে দেরি হওয়ার কথা নয়। দলে এখন থেকে কারা থাকবেন, আসবেন, কী কাজ করবেন সবই যেন পরিষ্কার থাকে। দলের ভেতরে জবাবদিহির বিধিবিধান কার্যকর থাকতে হবে। আওয়ামী লীগের রাজনীতির প্রচার ও প্রসার যেন নেতাকর্মীদের মধ্যে অব্যাহত থাকে। দলের অভ্যন্তরে রাজনীতির চর্চা না থাকলে দল কীভাবে লাইনচ্যুত হয়ে যায় সেটি নতুন করে বলার থাকে না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভয় নেই, ভয় তিনি করেনও না তবে এই অভিযান শুরুর পর তাকে যেভাবে নিঃসঙ্গ সরকারপ্রধান হিসেবে চিত্রায়িত করা হয়ে থাকে বাস্তবে মনে হয় তেমন আশঙ্কার কারণ নেই। যারা ইতিহাসের এই পর্বে ভূমিকা রাখার জন্য যোগ্য তাদেরই যথাস্থানে সুযোগ করে দেয়া হোক।

মমতাজউদ্দীন পাটোয়ারী: অধ্যাপক (অবসরপ্রাপ্ত), ইতিহাসবিদ ও কলাম লেখক।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App