×

জাতীয়

পুরান ঢাকার ‘থিম’ পূজায় বাংলার চিরায়ত রূপ

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ১১:১৫ এএম

পুরান ঢাকার ‘থিম’ পূজায় বাংলার চিরায়ত রূপ
আর মাত্র কয়েকদিন পরই মাতৃরূপে দেবী দুর্গা অধিষ্ঠিত হবেন মণ্ডপে মণ্ডপে। শুরু হবে বাঙালি সনাতন ধর্মাবলম্বীদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গোৎসব। দুর্গাপূজা উপলক্ষে সারাদেশে এখন চলছে উৎসবের আমেজ। প্রতিমা শিল্পীরা মাটির প্রতিমার গায়ে বুলাচ্ছেন রংতুলির আঁচড়। ফুটিয়ে তুলছেন দেবীর অবয়ব। প্রতি বছর পুরান ঢাকার শাঁখারী ও তাঁতীবাজারের বিভিন্ন অস্থায়ী মণ্ডপে দেবী দুর্গার আরাধনা করে মহল্লার ক্লাবগুলো। এসব ক্লাবের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো প্রতিদ্বন্দ্বী, সংঘমিত্র, নতুন কুঁড়ি, নব কল্লোল, সূর্যতারা। এদের মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বী ক্লাবই প্রতি বছর একটি ‘থিম’কে কেন্দ্র করে পূজার আয়োজন করে থাকে। এ বছর শরতের গ্রামবাংলার চিরায়ত রূপ তুলে ধরে পূজার মণ্ডপ ও প্রতিমা গড়েছে শাঁখারীবাজারের প্রতিদ্ব›দ্বী ক্লাব। ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক উৎপল কুমার ঘোষ শেখর ভোরের কাগজকে বলেন, এ বছর আমাদের ক্লাবের পূজার ৪৮তম বর্ষপূর্তি হচ্ছে। প্রতি বছরই আমরা এক একটি থিমকে কেন্দ্র করে প্রতিমা নির্মাণ করি। সেই অনুযায়ী মণ্ডপের সজ্জা হয়ে থাকে। এ বছরও আমরা একটি থিম নির্ধারণ করেছি। এ বছর প্রতিমা নির্মাণ করা হয়েছে গ্রামীণ নারীর আদলে। মণ্ডপের সাজসজ্জায় ফুটিয়ে তোলা হবে শরৎ কালের গ্রাম বাংলার চিরায়ত চিত্র। মণ্ডপ সাজানো হবে কাশফুল, নদী, দিগন্ত, আকাশ, ভোরের সূর্যোদয় এমন আবহ দিয়ে। সরেজমিনে দেখা গেছে, শাঁখারীবাজার ও তাঁতীবাজারের অস্থায়ী মণ্ডপগুলোতে এখনো অনেকটা কাজ বাকি। ৩ অক্টোবর থেকে এসব মণ্ডপে তোলা হবে প্রতিমা। হাতে আর মাত্র কয়েকটা দিন। তাই এলাকাজুড়ে হাতুড়ি পেড়েকের ঠুকঠাক শব্দ। আশপাশে চেয়ার পেতে বসে আয়োজকরা ডেকোরেটর কর্মচারীদের কাজের নির্দেশ দিচ্ছেন। তবে ভিড় ছিল প্রতিমা সাজসজ্জার জিনিসপত্র বিক্রির দোকানগুলোতে। দেবীর গহনা, হাতের শাঁখা-পলা, মালা, নূপুর, মুকুট, তীর, ধনুক, চক্র, গদা, খড়গ, ত্রিশূল, অসুরের অস্ত্র, দেবীর শাড়ি, ব্লাউজের কাপড়, মাথার চুল কিনতে রাজধানীসহ আশপাশের বিভিন্ন এলাকা থেকে শাঁখারীবাজারে ভিড় করছেন আয়োজকরা। সাজঘর, পোশাকঘর, নাগ ভাণ্ডার, পদ্ম ভাণ্ডার, লক্ষ্মী ভাণ্ডারসহ বিভিন্ন দোকানে থরে থরে সাজানো আছে এসব জিনিস। ক্রেতাদের চাহিদা মেটাতে রীতিমতো হিমশিম খেতে হচ্ছে দোকানদারদের। কাগজ, পুঁতি, কাপড়, সোলাসহ বিভিন্ন উপকরণ ও আকারের মালা বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে দুই হাজার টাকায়। তবে ‘বৈজয়ন্তি’ মালার দাম একটু বেশি। এ মালার বিশেষত্ব হলো পাঁচ ধরনের সুগন্ধি ফুল দিয়ে এটি দেবী দুর্গার গলার জন্য তৈরি করা হয়। এর মালার দাম শুরুই হয় এক হাজার টাকা থেকে। পাটের তৈরি চুল দেড়শ থেকে আড়াইশ টাকা, প্রতিমার মাথার মুকুট ৫০ থেকে এক হাজার টাকা, এক জোড়া শাঁখা দুইশ থেকে হাজার টাকা, দুর্গার দশ অস্ত্র দেড়শ থেকে দেড় হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া সোলার তৈরি বিভিন্ন নকশার কাজও বিক্রি হচ্ছে দেদারছে। অস্থায়ী মণ্ডপ সজ্জার কাজে এসব নকশা ব্যবহার করা হয়। আকার ভেদে এসব নকশা বিক্রি হচ্ছে একশ থেকে তিন হাজার টাকা পর্যন্ত। শাঁখারীবাজারের প্রবেশ মুখে নির্মাণ করা হচ্ছে বড় তোড়ন। তোড়ন নির্মাণকর্মী সোহরাব আলম জানান, দুই দিনের মধ্যেই তোড়ন নির্মাণ কাজ শেষ হবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App