ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) গ ইউনিটে ব্যবসায়িক শিক্ষা বিভাগে সম্মান ১ম বর্ষ ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে মেধা তালিকায় ৮৫৬তম স্থান দখল করে ভর্তির সুযোগ পেয়েছে ঝিনাইদহের তানিয়া। অভাবকে জয় করে এইচএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়েও উচ্চশিক্ষা নিয়ে সংশয় তৈরি হওয়া সেই শিক্ষার্থী দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপিঠ ঢাবিতে ভর্তি হওয়ার যোগ্যতা অর্জন করল। ঝিনাইদহের কাঞ্চননগর এলাকার শিক্ষার্থী তানিয়া সুলতানা এসএসসি ও এইচএসসিতেও জিপিএ-৫ পেয়ে এলাকায় আলোড়ন সৃষ্টি করে। সে ওই এলাকার মৃত কামাল হোসেনের মেয়ে। বাবার মৃত্যুর পর অভাবের সংসারে তানিয়ার লেখাপড়ার ভবিষ্যৎ নিয়ে সংশয় তৈরি হলে স্থানীয় বীরদর্পণ পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ হয়। এরপর তাকে সহযোগিতার জন্য দানশীল অনেকেই এগিয়ে আসেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আমেরিকা প্রবাসী শৈলকুপার এক শিক্ষানুরাগী সংবাদ প্রকাশের পরপরই তানিয়ার লেখাপড়ার দায়িত্ব নেন। তানিয়া সুলতানা ভোরের কাগজকে জানান, অভাবি পরিবারের হলেও তার ভ্যানচালক বাবার ইচ্ছে ছিল যে কোনোভাবেই মেয়েকে উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত করবে, ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ে পড়াবে। ৩ বছর আগে ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে তার বাবা মারা যান। আজ সে উচ্চ শিক্ষার সুযোগ পেয়েছে, বিভিন্ন মানুষ সহযোগিতার হাত বাড়িয়েছে। তবে বাবা কামাল হোসেন দেখে যেতে পারল না মেয়ের এই সাফল্য। তানিয়া ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পাওয়ায় খুশি স্থানীয়রাও। এলাকার অনেকেই জানায়, মেয়েটি এমন অভাবের সংসারে বাস করেও লেখাপড়া চালিয়ে যাওয়ায় তারা খুশি। এলাকার বাসিন্দা আব্দুল মজিদ বলেন, শুধু টাকা-পয়সা, বাড়ি-গাড়ি থাকলেই লেখাপাড়া করা যায় এমন ধারণা ভেঙে দিয়েছে অদম্য তানিয়া। তানিয়া একদিন দেশের মুখ উজ্জ্বল করবে। তানিয়া ঝিনাইদহের কাঞ্চননগর স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে কৃতিত্বের সঙ্গে এসএসসি ও এইচএসসি পাস করে। তার বাবা কামাল হোসেন ভ্যানচালক ছিলেন। মা আছিয়া বেগম এখনো অন্যের বাড়িতে কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করেন। এ দম্পতির একমাত্র সন্তান তানিয়া সুলতানা।