×

আন্তর্জাতিক

জাতিসংঘে আগ্রাসী ইমরান, তীব্র নিন্দা ভারতের

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ১১:৩৯ এএম

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান বলেছেন, তিনি যুদ্ধের বিরুদ্ধে। তবে শেষ পর্যন্ত দুই পরমাণু শক্তিধর দেশ পাকিস্তান ও ভারত পরস্পরের বিরুদ্ধে যুদ্ধে লিপ্ত হলে পুরো বিশ্বকেই এর ফল ভোগ করতে হবে। গত শুক্রবার নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৪তম অধিবেশনে দেয়া বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। ইমরান খান বলেন, কাশ্মির থেকে যখন বিধিনিষেধ তুলে নেবে ভারত, তখন সেখানে রক্তের বন্যা বয়ে যেতে পারে! তবে তার এসব বক্তব্যের তীব্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে ভারত জানায়, একটি আন্তর্জাতিক মঞ্চে দাঁড়িয়ে ইমরান খান যে ভাষায় ভারতকে আক্রমণ করেছেন তা একজন রাষ্ট্রপ্রধানের পক্ষে কোনোক্রমেই শোভন নয়। এ ধরনের মন্তব্য তাকে ধ্বংসের মুখে টেনে নিয়ে যেতে পারে বলে মন্তব্য করেন ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ফার্স্ট সেক্রেটারি বিদিশা মৈত্র। ইমরানের ওই ভাষণের পরপরই বিক্ষোভ শুরুর আশঙ্কায় ভারত শাসিত কাশ্মিরে লোকজনের চলাফেরায় নতুন বিধিনিষেধ আরোপ করেছে প্রশাসন। তবে গতকাল শনিবার বিদ্রোহীদের সাথে অন্তত তিনটি স্থানে পৃথক সংঘর্ষের ঘটনায় তিন বিক্ষোভকারী ও এক সেনাসহ মোট চারজনের নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। নিয়ন্ত্রণরেখার কাছে সেনাদের লক্ষ্য করে বিদ্রোহী হামলার পাল্টা জবাবে সেনারা গুলি চালালে এ ঘটনা ঘটে। খবর ডন, আনন্দবাজার। সাধারণ পরিষদে ১৫ মিনিটের বেশি সময় ধরে ভাষণ দেন ইমরান খান। তার বক্তব্যের বেশিরভাগ সময়জুড়ে ছিল অধিকৃত কাশ্মিরের স্বায়ত্তশাসন বাতিলসহ অঞ্চলটিতে ভারতীয় নীতির কঠোর সমালোচনা। তিনি বলেন, যখন কোনো পারমাণবিক শক্তিধর দেশ শেষ অবধি লড়াই চালিয়ে যায় তখন এর পরিণাম মানচিত্রের সীমানা ছাড়িয়ে যায়। দুই পরমাণু শক্তিধর দেশের লড়াইয়ের প্রভাব পুরো দুনিয়ার ওপর পড়ে। গোটা বিশ্বকেই এর ফল ভোগ করতে হয়। এ বিষয়ে ভারতীয় কর্মকর্তা বলেন, এটি খুবই দুঃখজনক যে, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী গোটা বিশ^কে আড়াআড়িভাবে ভাগ করে দেয়ার চেষ্টা করছেন। জাতিসংঘ মঞ্চকে তিনি অন্যায়ভাবে ব্যবহারের চেষ্টা করছেন। যে ধরনের শব্দ তিনি প্রয়োগ করেছেন তাতে তার মধ্যযুগীয় মানসিকতার প্রতিফলন ঘটেছে। একবিংশ শতকে এ ধরনের আচরণ অনভিপ্রেত। ইমরান তার ভাষণে দাবি করেন, পাকিস্তানে কোনো জঙ্গি সংগঠন নেই। এটি জাতিসংঘের জন্য একটি পরীক্ষা। এ জন্য সবার আগে ভারতকে দখলকৃত কাশ্মিরে আরোপ করা কারফিউ তুলে নিতে হবে, সব বন্দিদের মুক্তি দিতে হবে। এ প্রসঙ্গে ইমরানকে কটাক্ষ করে বিদিশা বলেন, জাতিসংঘে তালিকাভুক্ত ১৩০ জন জঙ্গি যে তাদের দেশে নেই, সেটি কি বুকে হাত দিয়ে বলতে পারবে তারা? ওসামা বিন লাদেনকে যারা আশ্রয় দেয়, তাদের মুখে এ দাবি মানায় না। ভারতের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ আনেন ইমরান। এর জবাবে ভারতের ভাষ্য, যে দেশে সংখ্যালঘুদের অবস্থা শোচনীয়, তারা যেন ভারতকে মানবাধিকারের পাঠ দিতে না আসে। কাশ্মির নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে বারবার দেনদরবার করেও যখন কোনো লাভ আদায় করতে পারেনি পাকিস্তান তখনই ভারত বুঝেছিল যে, জাতিসংঘের মঞ্চকে কাজে লাগানোর চেষ্টা করবেন ইমরান। কিন্তু রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে তার কণ্ঠে যে আক্রমণের সুর শোনা গেল, তা শুনে বিশ্ব স্তম্ভিত বলে জানায় ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। বিশ্বের সামনে বক্তব্য রাখতে গিয়ে সরাসরি চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে ইমরান বলেন, আমি কোনো হুমকি দিচ্ছি না। কিন্তু বিশ্ব কেও ভাবতে হবে তারা ১৩০ কোটি মানুষের ভারতীয় বাজার তোষণ করবে নাকি নিরাপরাধ নির্যাতিত মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় লড়বে। এ সময় তিনি নরেন্দ্র মোদিকেও আক্রমণ করেন। গুজরাট দাঙ্গা থেকে শুরু করে আরএসএসের প্রসঙ্গ তুলে তাকে ফ্যাসিস্ট হিসেবে অভিহিত করেন।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App