×

খেলা

গিনেস বুকে নাম লেখাতে চান রানী হামিদ

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ১১:০৭ এএম

গিনেস বুকে নাম লেখাতে চান রানী হামিদ
ওয়ালটন গ্রুপের পৃষ্ঠপোষকতায় এবং বাংলাদেশ দাবা ফেডারেশনের আয়োজনে মার্সেল রেফ্রিজারেটর ৩৯তম জাতীয় মহিলা দাবা চ্যাম্পিয়নশিপের পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান গতকাল দুপুরে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের পুরনো ভবনের তৃতীয় তলার দাবা ক্রীড়া কক্ষে অনুষ্ঠিত হয়। এবার প্রতিযোগিতায় অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন বাংলাদেশ আনসারের আন্তর্জাতিক মহিলা মাস্টার রানী হামিদ। ৯ ম্যাচে তার পয়েন্ট সাড়ে ৮। চ্যাম্পিয়ন রানী হামিদ নগদ পঁচিশ হাজার টাকা, ট্রফি ও ওয়ালটন সামগ্রী পুরস্কার জিতেছেন। তিনি ৭৬ বছর বয়সেও জাতীয় দাবায় চ্যাম্পিয়ন হয়ে এতটাই উচ্ছ¡সিত যেন এই প্রথম চ্যাম্পিয়ন হওয়ার স্বাদ পেয়েছেন। তবে জাতীয় নারী দাবায় এটি তার ২০তম শিরোপা। ৩৯তম জাতীয় মহিলা দাবা চ্যাম্পিয়নশিপে ৯ রাউন্ড সুইস লিগ পদ্ধতির এই জাতীয় মিটে ৫৮ জন খেলোয়াড় ছিলেন এবার। গত পরশু শেষ রাউন্ডে রানী হামিদ জিতেছেন মানিকগঞ্জের মহিলা ফিদে মাস্টার নাজরানা খান ইভার বিপক্ষে। এ ছাড়া ৮ পয়েন্ট নিয়ে জনতা ব্যাংক অফিসার ওয়েলফেয়ার সোসাইটির আন্তর্জাতিক মহিলা মাস্টার শারমীন সুলতানা শিরিন রানার্সআপ হয়েছেন। ৭ পয়েন্ট নিয়ে টাইব্রেকিং পদ্ধতিতে এলিগেন্ট ইন্টারন্যাশনাল চেস একাডেমির আহমেদ ওয়ালিজা তৃতীয় ও মানিকগঞ্জের নজারানা খান ইভা হয়েছেন চতুর্থ। সাড়ে ৬ পয়েন্ট নিয়ে এলিগেন্ট ইন্টারন্যাশনাল চেজ একাডেমির মহিলা ফিদে মাস্টার নোশিন আঞ্জুম পঞ্চম। ৬ পয়েন্ট নিয়ে ষষ্ঠ থেকে দশম মহিলা ক্যান্ডিডেট মাস্টার সামিহা শারমীন সিম্মী, তাসনিয়া তারান্নুম অর্পা, বগুড়ার উম্মে তাসলিমা প্রতিভা তালুকদার, এলিগেন্ট ইন্টারন্যাশনাল চেজ একাডেমির ওয়াদিফা আহমেদ ও ইশরাত জাহান দিবা। গত চার দশক ধরে দাবার নিয়মিত মুখ রানী হামিদ। তিনি ১৯৪৪ সালে ২৩ ফেব্রুয়ারি সিলেট জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা সৈয়দ মমতাজ আলী পেশায় পুলিশ কর্মকর্তা ও মা মোসাম্মাৎ কামরুন্নেসা খাতুন ছিলেন গৃহিণী। চার ভাই ও চার বোনের মধ্যে রানী হামিদ তৃতীয়। খেলাধুলার প্রতি তার স্বামী মোহাম্মাদ আবদুল হামিদের আগ্রহ ও উৎসাহ থাকায় তিনি দাবা খেলার প্রতি জোর দেন। রানী হামিদ ১৯৭৬ সালে প্রথম মহসিন দাবা প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেন। সে সময় তার সঙ্গে ঢাকা মেডিকেল কলেজের ছাত্রী দীপ্তি ও বীথিসহ কয়েকজন নারী দাবা খেলায় অংশগ্রহণ করেছিলেন। এরপর ১৯৭৭ সালে নবদিগন্ত সংসদ দাবা ফেডারেশন নারীদের জন্য প্রথমবারের মতো আলাদাভাবে দাবা প্রতিযোগিতার আয়োজন করে। পরবর্তীতে ১৯৭৮ ও ১৯৭৯ সালেও একই আয়োজন হয় এবং তিনবারই রানী হামিদ চ্যাম্পিয়ন হন। এরপর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি তাকে। একের পর এক জাতীয় ও আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেন এবং কৃতিত্ব দেখান। নিজের ক্যরিয়ার নিয়ে কথা বলতে গিয়ে রানী হামিদ বলেছেন এত দিন খেলা চালিয়ে যাবেন তা আগে ভাবেননি। এমনকি ভবিষ্যৎ সাফল্য দিয়ে গিনেস বুকে নাম লেখাতে চান তিনি। বুদ্ধির ব্যয়ামে ৭৬ বছর বয়সেও দাবার বোর্ডে অপ্রতিরোধ্য রানী হামিদ। এ বয়সে এখনো তিনি দুর্দান্ত খেলে চ্যাম্পিয়ন হচ্ছেন। রানী হামিদ বলেন, আমার বযস এখন তো ৭৬ চলছে। আমি এখনো আনন্দ নিয়ে খেলছি। ১৯৭৭ সালে ঢাকায় মেয়েদের দাবা শুরু হয়। সেটা বেসরকারিভাবে। আমি তখন পুরোপুরি গৃহিণী। তবুও খেলায় চলে এলাম। এরপর ১৯৭৯ সালে প্রথম নারী চ্যাম্পিয়নশিপের শুরু থেকে খেলে প্রথম ছয়বার টানা চ্যাম্পিয়ন হই। জাতীয় মিটে ২০টা শিরোপা বোধ হয় বিশ্ব রেকর্ড। আমি আসলে নিশ্চিত না। ৭৬ বছর বয়সে একজন চ্যাম্পিয়ন হয়ে গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে নাম তুলেছে। আমি তাকে সরিয়ে ৭৭ বছর বয়সে চ্যাম্পিয়ন হয়ে গিনেস বুকে নাম লেখাতে চাই। তাই আগামী বছরটাও খেলার ইচ্ছা রাখি।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App