×

জাতীয়

উন্নতি হচ্ছে, স্বীকৃতিও মিলছে

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ১১:১৭ এএম

উন্নতি হচ্ছে, স্বীকৃতিও মিলছে
উন্নয়নের ছোঁয়ায় বদলে গেছে দেশ, বদলে গেছে জীবন। রাজধানী থেকে প্রত্যন্ত অঞ্চল- শেখ হাসিনার নেতৃত্বে গত ১০ বছরে বিস্ময়কর অগ্রগতিতে বিস্মিত বিশ্ব। উন্নতির স্বীকৃতিও মিলছে। ইতোমধ্যেই বিশ্বের সেরা দেশের তালিকায় থাকার স্বীকৃতি দিয়েছে বিশ্বব্যাংক, এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকসহ একাধিক আন্তর্জাতিক সংস্থা। বিশ্বব্যাংকের ‘ইজ অব ডুয়িং বিজনেসে’ সবচেয়ে বেশি উন্নতি করেছে- এমন ২০টি দেশের তালিকায় রয়েছে বাংলাদেশ। এবার ‘চ্যাম্পিয়ন অব স্কিল ডেভেলপমেন্ট ফর ইয়ুথ অ্যাওয়ার্ড’ এবং ‘ভ্যাকসিন হিরো’ পুরস্কার পেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এসব স্বীকৃতি এবং পুরস্কার একদিকে যেমন বহির্বিশে^ বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করেছে, তেমনি আগামী দিনে নেতৃত্বস্থানীয় দেশগুলোর কাতারে বাংলাদেশকে নিয়ে যাবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। এদিকে বাংলাদেশের উন্নয়ন ও সাফল্য সর্বত্রই প্রশংসিত হচ্ছে জাতিসংঘে। জাতিসংঘের ৭৪তম সাধারণ অধিবেশনে তরুণদের কর্মমুখী শিক্ষায় অবদানের জন্য ইউনিসেফের সম্মানসূচক পদক ‘চ্যাম্পিয়ন অব স্কিল ডেভেলপমেন্ট ফর ইয়ুথ অ্যাওয়ার্ড’ বিশ্বের সব শিশু-তরুণকে উৎসর্গ করে শেখ হাসিনা বলেন, তরুণদের কর্মসংস্থান ও নিরাপদ বাংলাদেশ গড়তে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে সরকার। এ ছাড়া টিকাদান কর্মসূচিতে ব্যাপক সফলতার জন্য গ্লোবাল অ্যালায়েন্স ফর ভ্যাকসিনেশন ও ইমিউনাইজেশনের (জিএভিআই) মর্যাদাপূর্ণ ‘ভ্যাকসিন হিরো’ পুরস্কার দেশবাসীকে উৎসর্গ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ভ্যাক্সিনেশনের জন্য বাংলাদেশের কঠোর পরিশ্রম আজ বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সহায়তা নিয়ে সার্বজনীন স্বাস্থ্যসেবার অধীনে ইমুনাইজেশনে সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। সংশ্লিষ্টদের মতে, শুধু ভ্যাক্সিনেশনের ক্ষেত্রেই নয়, দেশের ওষুধশিল্পে এক নীরব বিপ্লব ঘটেছে। চাহিদার ৯৮ শতাংশ ওষুধ এখন দেশেই তৈরি হচ্ছে। ইউরোপ-আমেরিকাসহ বিশ্বের ১৫০টি দেশে বাংলাদেশের তৈরি ওষুধ রপ্তানি হচ্ছে। বেড়েছে সাক্ষরতার হার। মেধাবৃত্তি ও উপবৃত্তি পাচ্ছে ২০ দশমিক ৩ মিলিয়ন শিক্ষার্থী। দেশে বিদ্যুৎ চাহিদা পূরণে ২০৩০ সাল পর্যন্ত দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। পাওয়ার সিস্টেম মাস্টার প্ল্যান ২০১০ (পিএসএমপি) অনুযায়ী, ২০২১ সালের মধ্যে ২৪ হাজার মেগাওয়াট, ২০৩০ সালের মধ্যে ৪০ হাজার এবং ২০৪১ সালের মধ্যে ৬০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের পরিকল্পনা রয়েছে। দেশে বর্তমানে বিদ্যুতের আওতাধীন রয়েছেন ৯২ ভাগ মানুষ। ২০২১ সালের মধ্যে শতভাগ মানুষকে বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় আনার টার্গেট সরকারের। বিশেষ নজর দেয়া হয়েছে সামাজিক নিরাপত্তার দিকে। বয়স্ক ভাতাভোগীর সংখ্যা এখন ৪৪ লাখ করা হয়েছে। বিধবা ও স্বামী নিগৃহীতা মহিলা ভাতা ভোগীর সংখ্যা ১৭ লাখ। অসচ্ছল প্রতিবন্ধী ভাতাভোগীর সংখ্যা ১০ লাখ থেকে ১৫ লাখ ৪৫ হাজারে উন্নীত করা হয়েছে। প্রতিবন্ধী ছাত্রছাত্রীদের উপবৃত্তির সংখ্যা ৯০ হাজার থেকে বাড়িয়ে করা হয়েছে ১ লাখ। উপবৃত্তির হার প্রতিটি স্তরে ৫০ টাকা করে বাড়ানো হয়েছে। প্রাথমিক স্তরে ৭শ টাকা থেকে ৭শ ৫০ টাকা, মাধ্যমিক স্তরে ৭শ ৫০ টাকা থেকে ৮শ টাকা এবং উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে ৮শ ৫০ টাকা থেকে ৯শ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। তৃতীয় লিঙ্গের জনগোষ্ঠীর জাীববনমান উন্নয়নে এ কর্মসূচির আওতায় উপকারভোগীর সংখ্যা ছয় হাজারজনে উন্নীত করা হয়েছে। এ ব্যাপারে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান ভোরের কাগজকে বলেন, বাংলাদেশের এখন সুসময়। প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে দেশকে কয়েকটি বিশেষ অঞ্চলে ভাগ করে উন্নয়নের মহাপরিকল্পনা হাতে নেয়া হয়েছে। এরমধ্যে রয়েছে- বদ্বীপ অঞ্চল, হাওর অঞ্চল, পার্বত্য অঞ্চল। প্রতিটি অঞ্চলের আঞ্চলিক বৈশিষ্ট্য সমুন্নত রেখে উন্নয়ন করা হবে। এদিকে অজপাড়া গাঁ থেকে মহাবিশ্ব- সর্বত্র চলছে ডিজিটাল সরকারের ডিজিটাল পথচলা। সারাদেশে পাঁচ হাজার ২৭৫টি ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টার এবং ৮ হাজার ২০০ ই-পোস্ট থেকে ২০০ ধরনের ডিজিটাল সেবা পাচ্ছেন জনগণ। দেশে মোবাইল ফোন ব্যবহারকারীর সংখ্যা এখন ১৩ কোটিরও বেশি। ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা সাড়ে আট কোটি। এ ব্যাপারে তথ্য ও যোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহেমদ পলক ভোরের কাগজকে বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বীকৃতিস্বরূপ পরপর পাঁচবার তথ্যপ্রযুক্তি খাতে বিশ্বের সবচেয়ে সম্মানজনক ‘ওয়ার্ল্ড সামিট অন ইনফরমেশন সোসাইটি (ডাবি্উএসআইএস)’ পুরস্কার পেয়েছে বাংলাদেশ। উন্নয়নের গুরুত্বপূর্ণ সূচক নারীর ক্ষমতায়নেও পিছিয়ে নেই বাংলাদেশ। এজন্য আন্তর্জাতিক পর্যায়ে একাধিক স্বীকৃতি মিলেছে। জানতে চাইলে নারীনেত্রী ও মানবাধিকার কর্মী আইনজীবী সালমা আলি বলেন, নারীর ক্ষমতায়নে বাংলাদেশের অগ্রগতি চোখে পড়ার মতো। তবে এই ক্ষমতায়ন সর্বস্তরে নিশ্চিত হয়নি। বিভিন্ন ক্ষেত্রে নারীর অংশগ্রহণ বাড়লেও নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে নারীর উপস্থিতি এখনো অনেক কম। তাই নারীর ক্ষমতায়ন প্রতিষ্ঠায় যেতে হবে আরো বহুদূর।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App