×

বিনোদন

সন্দেহের তীর সবার দিকেই

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ১২:২৯ পিএম

সন্দেহের তীর সবার দিকেই

‘সাপলুডু’ সিনেমার দৃশ্যে আরিফিন শুভ ও বিদ্যা সিনহা মিম

‘খেলতে হবে সবাইকে’ এমন স্লোগানে গতকাল শুক্রবার মুক্তি পেয়েছে ‘সাপলুডু’। থ্রিলার ঘরানার সিনেমাটি টিজার, ট্রেলার প্রকাশের পর থেকেই দর্শকের আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে। এর প্রধান তিন খেলোয়াড় গোলাম সোহরাব দোদুল, আরিফিন শুভ ও বিদ্যা সিনহা মিম ‘সাপলুডু’র গল্প শোনালেন মেলাকে। সঙ্গ দিলেন শিমুল আহমেদ
জনপ্রিয় ঘরোয়া খেলা সাপলুডু। এ খেলার নিয়ম বেশ মজার। মই বেয়ে দ্রুতই উপরে উঠে যাওয়া, আবার চ‚ড়ান্ত বিজয়ের মুহূর্তে সাপের কামড়ে পতন। জয় না পাওয়ার আগে কেউই বিজয়ী না, কেউ নিরাপদ না। এমন থিমেই নির্মিত হয়েছে সাপলুডু। নামকরণও একই কারণে। পরিচালক গোলাম সোহরাব দোদুল রহস্যের খোলস না খুলে বলেন, এ ছবিতে সবাইকে একটা সাপ তাড়া করে বেড়ায়। বের হতে চায়, পথ খুঁজে পায় না। সাপলুডু খেলায় কী হয়? শেষ পর্যন্ত খেলোয়াড় বিজয়ী হয়। এখানেও তাই ঘটবে। ‘খেলতে হবে সবাইকে’ এ স্লোগানের ব্যাপারে আরিফিন শুভ কিছুটা বললেন, ‘দোদুল ভাই যেমনটা বলছিলেন, আমাদের সবাইকে একটা সাপ মানে সন্দেহের তীর তাড়া করে বেরায়। এর থেকে বের হবার জন্য সবাইকেই খেলতে হয়।’ ‘সাপলুডু’র প্রয়োজনে পরিচালক গিয়েছিলেন টেকনাফ সীমান্তে। শুভর ভাষায়, ‘নাফ নদীতে ট্রলারে করে শুটিং করেছে। যেখানে দুই পাশে সীমান্তরক্ষীরা বন্দুক নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে। আর এমন লোকেশনই কিনা পরিচালকের পছন্দ হলো।’ এ সিনেমার গল্প যখন লেখা হয় তখন ওইভাবে কাউকে ভেবে নাকি পরিচালক কাহিনী লেখেননি। কাহিনী, চিত্রনাট্য লেখা শেষ হওয়ার পর অভিনয় শিল্পী নির্বাচন করা হয়েছে। ‘প্রতিটা চরিত্রের জন্যই আমরা দুয়েক জন করে বিকল্প ভেবে রেখেছিলাম। এর মধ্যে থেকে শিল্পী চ‚ড়ান্ত করেছি আমরা’ বললেন দোদুল। এ সিনেমার ‘পুষ্প’ মিম বললেন, ‘দোদুল ভাই বছর দেড়েক আগে গল্প শোনালেন। বেশ ভালো লাগলো। আমার চরিত্রটি অনেক গুরুত্বপূর্ণ এ ছবিতে।’ শুভ বললেন, ‘ঘটনাচক্রে আমি তখন নিউইয়র্কে। দোদুল ভাই মাত্র পাঁচ মিনিটে গল্প শোনানোর কথা। কিন্তু আমাদের কথা শেষ হতে হতে প্রায় দেড় ঘণ্টা।’ ‘এই ছবিতে আমাকে এমন চরিত্রে আনা হয়েছে, যা দর্শকরা আগে কখনো দেখেনি। এমনকি আমাকে এর আগে কেউ এভাবে উপস্থাপন করে নাই।’ তারিক আনাম খান, জাহিদ হাসান, শতাব্দী ওয়াদুদ, ইন্তেখাব দিনার, রুনা খান, মারজুল রাসেল ও সুষমা সরকারের মতো শিল্পীরা এই ছবিতে অভিনয় করেছেন। বোঝাই যাচ্ছে গল্পের ব্যাপ্তি অনেক। এ ধরনের গল্পে অভিনয় করা কিংবা নির্মাণের চ্যালেঞ্জটাও অনেক। মিম অবশ্য এত এত সিনিয়র শিল্পীদের কাজ করতে বেশ মজাই পেয়েছেন। তিনি বলেন, ‘ওনারা আসলে সবাই খুব সাহায্য করেছেন সেটে। অভিনয় নিয়ে এবং এর বাইরেও অনেক বিষয়ে তারা পরামর্শ দিয়েছেন। তা ছাড়া আমাদের পুরো ইউনিটি কাজ নিয়ে অনেক বেশি সিরিয়াস ছিল। সারাক্ষণই চরিত্রের মধ্যে ছিলাম।’ আর শুভ এটিকে এই ছবির প্লাস পয়েন্ট বলছেন। ‘এ রকম মাল্টিকাস্টিং ছবি আমাদের দেশে সাম্প্রতিক সময়ে হয়নি। ঢাকা অ্যাটাকে অনেক সিনিয়র শিল্পী থাকলে তাদের চরিত্রের ব্যাপ্তি এর মতো ছিল না।’ ‘তারকাঁটা’র পর আরিফিন শুভর সঙ্গে মিমের এটি দ্বিতীয় সিনেমা। তা ছাড়া তারা দুজন একসঙ্গে এর আগে নাটকে অভিনয় ও মঞ্চে নেচেছেন। যার কারণে দুজনের মধ্যে বোঝাপড়াটা অনেক আগে থেকেই। বিষয়গুলো এই সিনেমাতে দুজনকেই সাহায্য করেছে বলে জানালেন শুভ ও মিম। টানা তিন মাস ধরে ‘সাপলুডু’র জন্য প্রস্তুতি নিয়েছেন আরিফিন শুভ। পরিচালকের সঙ্গে বারবার বসেছেন চিত্রনাট্য নিয়ে। লুক নিয়ে করেছেন পরীক্ষা-নিরীক্ষা। সবশেষে দুটি ভিন্ন ভিন্ন লুকে তাকে দেখা যাবে বলে জানালেন শুভ। শুটিংয়ের জন্য শাড়ি পরে বনের মধ্য দিয়ে দৌড়াতে হয়েছে মিমকে। এর জন্য নাকি পায়ে ব্যথা পেয়েছিলেন মিম। শিশুশিল্পী হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছিলেন দোদুল। টেলিভিশনে অভিনয়, পরিচালনায় প্রায় দুই দশক। এতদিন লাগলো কেনো সিনেমায় আসতে? ‘আসলে আমি চাইলে ৭-৮ বছর আগেই সিনেমা বানাতে পারতাম। কিন্তু আমি চেয়েছি উপযুক্ত বাজেটে সঠিক সিনেমাটা বানাতে। যেটা আমার আমাকে আমার প্রযোজক দিয়েছেন।’ সিনেমার প্রচারণা শুরু করতে অনেক দেরি করেছে পরিচালক-প্রযোজক। এর ব্যাখা দিলেন দোদুল। তিনি বললেন, ‘আমরা মুক্তির তারিখ আগেই ঘোষণা করে দিয়েছিলাম। আবার অন্যদিকে সেন্সর ছাড়পত্র পেতে দেরি হচ্ছিল, কারণ আমরা পুরো ছবি রেডি করে জমা দিতে পারছিলাম না। যাই হোক, যেদিন সেন্সর পেলাম, সেদিনই কিন্তু ট্রেলার আপ করেছি।’ ‘আর আমাদের পরিকল্পনায় ছিল আমরা মুক্তির আগের দুসপ্তাহ প্রচারণা চালাব। ট্রেলারের জন্য যে হাহাকার তৈরি হয়েছিল, তাতে ছবিটার কথা অনেকের কাছেই পৌঁছে গেছে।’ শুভ অবশ্য ভিন্নভাবে বললেন, ‘প্রচারণা খুব ভালো হয়েছে কিন্তু ছবির মেরিট ভালো না। তাহলে ছবি চলবে না। আবার ছবির প্রচারণা অল্প, মেরিট ভালো। তাহলে ওয়ার্ড অফ মাউথেই প্রচারণার ঘাটতিটুকুন পূরণ হয়ে যাবে।’ মাত্র এক সপ্তাহ পরেই মুক্তি পাচ্ছে শাকিব খানের ‘শাহেন শাহ’। বাংলাদেশের সিনেমা ইন্ডাস্ট্রিতে শাকিব খান একটা বড় ফ্যাক্ট। তার সঙ্গে ছবি মুক্তি দেয়া বেশি ঝুঁকি নেয়া হয়ে গেল না? ‘শাহেন শাহ’র আর আমাদের ‘সাপলুডু’র গল্প, মেকিং, সিনেমাটোগ্রাফি আলাদা। তাই আমি বলতে পারি আমাদের ছবি দেখতে যদি একজনও সিনেমা হলে আসে তাহলে সে আরো ৫০ জনকে বলবে, এটা আমার বিশ্বাস, বললেন শুভ। অন্যদিকে পরিচালক বললেন, ‘আমরা চাই দর্শক দুটো ছবিই দেখুক। তাতে আমাদের ইন্ডাস্ট্রির জন্য ভালো।’

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App