×

মুক্তচিন্তা

মানসম্মত ছাপা নিশ্চিত করা জরুরি

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ০৯:০৪ পিএম

প্রতি বছর বিনামূল্যে পাঠ্যপুস্তক প্রদান বর্তমান মহাজোট সরকারের অনন্য অর্জন। এসব বই প্রকাশে সরকারের বিপুল অর্থ ব্যয় হয়। তাই এ ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্টদের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি অবশ্যই থাকতে হবে। দুর্ভাগ্য যে প্রতি বছর বই ছাপার মান নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। এবারো ব্যতিক্রম নয়। গতকাল ভোরের কাগজে একটি খবরে প্রকাশ, কম টাকায় কাজ করার বাহানা দিয়ে প্রেস মালিকরা পাঠ্যবই ছাপার কাজে নিম্নমানের কাগজ, কালি ও বাঁধাইয়ে নিম্নমানের আঠা ব্যবহার করছে। কেউ কেউ এনসিটিবির কিনে দেয়া কাগজের পরিবর্তে নিম্নমানের কাগজে বই ছাপিয়েছে। এই অনিয়ম এবং প্রতারণার জন্য অন্তত ২২টি প্রেসকে শোকজ করেছে এনসিটিবি। এর মধ্যে দুটিকে কালো তালিকাভুক্ত করার প্রক্রিয়াও চলছে। এমন খবরে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা বাড়বে, এটাই স্বাভাবিক। এমতাবস্থায় যথাসময়ে বই পাওয়া নিয়েও অনিশ্চয়তার আশঙ্কা রয়েছে। বছরের প্রথম দিন সব শিক্ষার্থীর হাতে বিনামূল্যের পাঠ্যবই তুলে দেয়া সরকারের অন্যতম অর্জন। কিন্তু এই অর্জনকে প্রশ্নবিদ্ধ করা কোনোভাবেই মানা যায় না। জানা গেছে, সরকার ২০২০ শিক্ষাবর্ষে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্কুলের চার কোটি ৩০ লাখ শিক্ষার্থীর মধ্যে বিনামূল্যে বিতরণের জন্য ৩৫ কোটি ৩১ লাখ ৪৪ হাজার ৫৫৪ কপি বই ছাপছে। এর মধ্যে প্রাথমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের মধ্যে ১০ কোটি ৫৪ লাখ ২ হাজার ৩৭৫ কপি এবং মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের মধ্যে ২৪ কোটি ৭৭ লাখ ৪২ হাজার ১৭৯ কপি বই বিনামূল্যে বিতরণ করা হবে। আগামী বছর ১ জানুয়ারি সারাদেশে একযোগে ‘পাঠ্যপুস্তক উৎসব’ আয়োজন করে এসব নতুন বই সব স্কুলে বিতরণ করা হবে। কিন্তু নানা অনিয়মের মাধ্যমে ছাপানো এসব বই ঠিক সময়ে শিক্ষার্থীদের হাতে পৌঁছবে কিনা, পৌঁছলেও বই টেকসই হবে কিনা এমন নানা প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে। বিভিন্ন গণমাধ্যমের খবর বলছে, বিনামূল্যের পাঠ্যবই ছাপানো একটি সিন্ডিকেটের হাতে বন্দি হয়ে পড়েছে। এই সিন্ডিকেটের নেতৃত্বে রয়েছেন কয়েকজন মুদ্রণকারী ও এনসিটিবির কয়েকজন কর্মকর্তা। তারাই নিম্নমানের কাগজে বই ছাপছে। আমরা মনে করি, শিক্ষাবর্ষের শুরুতে শিক্ষার্থীদের হাতে পাঠ্যবই দেয়া গুরুত্বপূর্ণ। আবার সময়সীমা রক্ষার অজুহাতে বইয়ের মানের ব্যাপারে কোনো রকম আপসও গ্রহণযোগ্য নয়। ছাপার কাঙ্ক্ষিত মান নিশ্চিত করতে এনসিটিবির পরিদর্শক দলের অভিযান অব্যাহত রাখা দরকার। মানসম্মত ছাপা নিশ্চিত করে যত দ্রুত সম্ভব শিক্ষার্থীদের হাতে এগুলো পৌঁছাতে সংশ্লিষ্টদের সচেষ্ট থাকতে হবে। এমন পরিস্থিতির পুনরাবৃত্তি রোধ করতে হলে পাঠ্যবই প্রণয়ন ও মুদ্রণ ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে আমলাতান্ত্রিক দীর্ঘসূত্রতা দূর করা, ছাপার কাজ দেয়ার ক্ষেত্রে মুদ্রণ প্রতিষ্ঠানের সক্ষমতা ভালো মতো যাচাই করা খুবই জরুরি। যাদের বিরুদ্ধে ইতোমধ্যে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে তাদের আইনের আওতায় এনে শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App