×

সাহিত্য

সৈয়দ হকের তৃতীয় প্রয়াণবার্ষিকী শুক্রবার

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ০৯:৩৯ পিএম

সৈয়দ হকের তৃতীয় প্রয়াণবার্ষিকী শুক্রবার

সব্যসাচী লেখক, কথাশিল্পী ও কবি সৈয়দ শামসুল হকের তৃতীয় প্রয়াণবার্ষিকী শুক্রবার (২৭ সেপ্টেম্বর)। তার প্রয়াণ দিবস উপলক্ষে ঢাকায় এবং কুড়িগ্রামে বিস্তারিত কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। প্রকাশনা সংস্থা বেঙ্গল পাবলিকেশন্স প্রকাশ করেছে তাঁর অপ্রকাশিত দীর্ঘকবিতা নুন-পূর্ণিমা এবং সৈয়দ হকের অনুবাদগ্রন্থ আফ্রিকান ও অন্যান্য কবিতা। শুক্রবার বিকেল ৫টায় বেঙ্গল বই প্রাঙ্গণে গ্রন্থ দু’টোর প্রকাশনা উৎসবের আয়োজন করা হয়েছে। বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি সৈয়দ শামসুল হক তৃতীয় প্রয়াণবর্ষ স্মরণার্ঘ্য শিরোনামে সন্ধ্যা ৭টায় জাতীয় নাট্যশালায় মঞ্চায়ন করবে সৈয়দ শামসুল হক রূপান্তরিত উইলিয়াম শেকস্পিয়রের বিশ্বখ্যাত নাটক হ্যামলেট। জন্মভূমি কুড়িগ্রামেও তৃতীয় প্রয়াণবার্ষিকী স্মরণে কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে নানা কর্মসূচি গৃহীত হয়েছে। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে তাঁর সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ, র‌্যালি, দোয়া মাহফিল, শিশু-কিশোর প্রতিযোগিতা, আলোচনা সভা এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। বাংলা সাহিত্যের এ মেধাবী কবি ২০১৬ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। এর আগে তিনি প্রায় ৪ মাস লন্ডনের চিকিৎসাধীন ছিলেন। ফুসফুসের সমস্যা দেখা দিলে ২০১৬ সালের ১৫ এপ্রিল তাকে লন্ডন নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে পরীক্ষা-নিরীক্ষার তার ফুসফুসে ক্যান্সার ধরা পড়ে। কবিতা, উপন্যাস, নাটক, ছোটগল্প, চলচ্চিত্র, গান, অনুবাদসহ সাহিত্যে-সংস্কৃতির বিভিন্ন ক্ষেত্রে তার সাবলীল লেখালেখির জন্য তাকে ‘সব্যসাচী’ লেখক বলা হয়ে থাকে। তার লেখকজীবন প্রায় ৬২ বছরব্যাপী বিস্তৃত। সৈয়দ হক ১৯৩৫ সালের ২৭ ডিসেম্বর কুড়িগ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার প্রথম লেখা একটি গল্প, যা ১৯৫১ সালে ফজলে লোহানী সম্পাদিত ‘অগত্যা’ নামে একটি ম্যাগাজিনে ছাপা হয়েছিল। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র থাকাকালে তার প্রথম উপন্যাস ‘দেয়ালের দেশ’ প্রকাশিত হয় ১৯৫৬ সালে ১৯৬৬ সালে মাত্র ২৯ বছর বয়সে বাংলা একাডেমি পুরস্কার লাভ করেন তিনি। বাংলা সাহিত্যে অসামান্য অবদানের জন্য ১৯৮৪ সালে তাকে একুশে পদক এবং ২০০০ সালে স্বাধীনতা পদকে ভূষিত করে সরকার। তিনি ১৯৫৯ সালে মাটির পাহাড় চলচ্চিত্রের চিত্রনাট্য লেখেন। এরপর ‘তোমার আমার’, ‘শীত বিকেল’, ‘কাঁচ কাটা হীরে’, ‘পুরস্কার, ‘বড় ভাল লোক ছিল’সহ আরও বেশ কিছু চলচ্চিত্রের কাহিনী, চিত্রনাট্য ও সংলাপ লেখেন। ‘বড় ভাল লোক ছিল’ও ‘পুরস্কার’এ দুটি চলচ্চিত্রের জন্য তিনি শ্রেষ্ঠ চিত্রনাট্যকার বিভাগে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেন। চলচ্চিত্রের চিত্রনাট্য লেখার পাশাপাশি তিনি চলচ্চিত্রের জন্য গানও রচনা করেছেন। এখানেও তিনি সফল হয়েছেন এবং পেয়েছেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার। তিনি ১৯৭১ সালের নভেম্বর মাসে লন্ডন চলে যান এবং সেখানে বিবিসির বাংলা খবর পাঠক হিসেবে কাজ করেন। তিনি ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর পাকিস্তান সেনাবাহিনীর আত্মসর্মপণের খবরটি পাঠ করেছিলেন। পরে ১৯৭২ থেকে ১৯৭৮ পর্যন্ত বিবিসি বাংলার প্রযোজক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। সৈয়দ হকের উপন্যাসের মধ্যে ‘এক মহিলার ছবি’, ‘অনুপম দিন’, ‘সীমানা ছাড়িয়ে’, ‘নীল দংশন’, ‘স্মৃতিমেধ’, ‘মৃগয়া’, ‘এক যুবকের ছায়াপথ’, ‘বনবালা কিছু টাকা ধার নিয়েছিল’, ‘ত্রাহি’, ‘তুমি সেই তরবারি’, ‘কয়েকটি মানুষের সোনালী যৌবন’, ‘নির্বাসিতা’, ‘খেলারাম খেলে যা’, ‘মেঘ ও মেশিন’, ‘ইহা মানুষ’, ‘বালিকার চন্দ্রযান’, ‘আয়না বিবির পালা’ প্রভৃতি। তার কাব্যগ্রন্থের মধ্যে ‘বৈশাখে রচিত পঙ্ক্তিমালা’, ‘বিরতিহীন উৎসব’, ‘প্রতিধ্বনীগণ’, ‘পরানের গহিন ভিতর’ উল্লেখযোগ্য।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App