×

সাময়িকী

সৃজন প্রতিভার মানবিক নেত্রী শেখ হাসিনা

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ০৮:২৬ পিএম

যখন বিত্ত-বৈভবহীন অসহায় শিল্পী-সাহিত্যিকদের চিকিৎসার্থে তিনি বিরোধী চিন্তা ও বিরোধীপক্ষের হলেও উদারহস্তে অনুদান দিয়ে সহযোগিতা করেন; তখন কি সে দেশের গর্বিত নাগরিক হিসেবে নিজেকে আশাবাদী ভাবতে পারি না? অসম্ভবের এ দেশে এতসব সম্ভব হয়েছে শুধু একজন শেখ হাসিনার দৃঢ়তা আর দেশপ্রেমের করণে।

বাংলার জননন্দিত নেত্রী শেখ হাসিনাকে কেবল একজন ব্যক্তি হিসেবে বিবেচনা করলে চরম ভুল করা হবে। শেখ হাসিনার নামের সাথে সম্পৃক্ত আমাদের অহংকার হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি, বাঙালির অবিসংবাদিত নেতা, বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নাম। সঙ্গত কারণেই জননেত্রী শেখ হাসিনা সম্পর্কে লিখতে বসে দ্বিধায় পড়তে হয়। শেখ হাসিনা তো বঙ্গবন্ধুকন্যার পাশাপাশি সরকারের নির্বাহী প্রধান প্রধানমন্ত্রী। গোটা বিশ্ব যখন অর্থনৈতিক মন্দায় জবুথবু, উন্নত বিশ্বের তাবড় বিত্তবান দেশের রাষ্ট্রনায়করা যখন মন্দার ঝাপটায় বিপর্যস্ত প্রায়, তেমন দুঃসময়ে দারিদ্র্য-পীড়িত বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের মন রক্ষা করে চলা- চাহিদা পূরণ করে চলা সহজ কথা নয়; তারও উপরে আছে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রকারীদের নিত্য অপতৎপরতা। ষড়যন্ত্রীদের প্রসঙ্গ তুলতেই কেউ কেউ প্রশ্ন তোলেন ’৭১ প্রসঙ্গ আর কত টানবেন? কিন্তু বাংলাদেশের সচেতন জনগণকে আমি প্রশ্ন করতে চাই, একটু ভেবেচিন্তে বলুন ’৭১-এর পরাজিত শক্তি এই বাংলাদেশের মাটিতে কবে নিষ্ক্রিয় থেকেছে? প্রথমত তারা বাংলাদেশকে পাকিস্তান বানাবার ব্যর্থ চেষ্টা চালিয়েছে; পরবর্তীতে যখন তারা বুঝেছে ‘সে গুড়ে বালি’ তখন তারা ভিন্ন পথ ধরেছে। তাদের সেই সব ঘৃণ্য প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে আমরা দেখেছি বাংলাদেশের মাটিতে বঙ্গবন্ধুর মতো বিশ্বনন্দিত নেতার সপরিবারে জীবনোৎসর্গের ঘটনা, দেখেছি স্বাধীনতাবিরোধীদের রাজনীতিতে পুনর্বাসন; শাহ আজিজ, আব্দুর রহমান বিশ্বাস, মির্জা হাফিজ, আব্দুল আলীম, মতিউর রহমান নিজামী, আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদসহ অসংখ্য চিহ্নিত দুর্বৃত্তের গাড়িতে দেখেছি বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা, আমরা দেখেছি বাংলাদেশের মতো সাম্প্রদায়িক-সম্প্রীতির দেশে জঙ্গিবাদের উত্থান, দেখেছি সৌভাগ্যক্রমে বেঁচে যাওয়া বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনাকে হত্যার অপচেষ্টা, দেখেছি ২১ আগস্টের মতো নৃসংশতা, বাঙালির প্রাণের উৎসব নববর্ষের আয়োজনে দেখেছি বর্বর বোমা হামলা, প্রগতিশীল সাংস্কৃতিক সংগঠন উদীচীর জাতীয় সম্মেলনে বোমা হামলার মতো পৈশাচিকতাও আমরা প্রত্যক্ষ করেছি ষড়যন্ত্রকারীদের বদৌলতে।

একদিকে ক্ষুধা-দারিদ্র্যের মতো নিঃশব্দ শত্রু, অন্যদিকে আন্তর্জাতিক সম্প্রসারণবাদ চক্র; একদিকে স্বাধীনতাবিরোধী চক্র, অন্যদিকে স্বার্থান্বেষী চক্রের ক্ষমতার লোভ; একদিকে মুক্ত বাণিজ্যের প্রবল প্রবাহ-উচ্চাভিলাষী শিক্ষিত শ্রেণির সব পাওয়ার মোহ, অন্যদিকে নিরন্ন মানুষের মুখে অন্ন তুলে দেয়ার সংগ্রাম; একদিকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনসহ বিশ্বে মাথা তুলে দাঁড়ানোর প্রয়াস, অন্যদিকে যে কোনো কর্মসূচিকেই বাতিল করে দেয়ার প্রবল প্রচারণা; এতসব ঝঞ্ঝা-বিক্ষোভের বিপরীতে দাঁড়িয়ে সাহস নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার নাম শেখ হাসিনা। কোথায় পেলেন তিনি সে সাহস? প্রথমত তিনি বঙ্গবন্ধুর মতো সাহসী পিতার সন্তান- বঙ্গবন্ধুর উত্তরাধিকার এবং শেষতক তিনি স্বজনহারা এক বঙ্গনারী, যিনি তাঁর বাবা-মা-ভাই-আত্মীয়-পরিজন সবাইকে হারিয়ে পেয়েছেন বাংলাদেশের মানুষের ভালোবাসা, যে বাঙালি জাতির মধ্যে তিনি আবিষ্কার করেছেন তাঁর স্বজনদের মুখ। আকাশের মতো বিশাল-হৃদয় পিতা যিনি উচ্চারণ করেন- ‘আমার প্রথম চিন্তা আমার দেশের জন্য। আমার আত্মীয়-স্বজনদের চাইতেও আমার ভালোবাসা আমার দেশেরই জন্য। আপনি তো দেখেছেন, আমাকে তারা কী গভীরভাবে ভালোবাসে।’ (বিশ্ববরেণ্য সাংবাদিক ডেভিড ফ্রস্ট ১৯৭২-এর ১০ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের পর তাঁর একটি দীর্ঘ সাক্ষাৎকার গ্রহণ করেন, যা ১৮ জানুয়ারি ’৭২ নিউইয়র্কের টেলিভিশনে ‘ডেভিড ফ্রস্ট শো’ নামে প্রচারিত হয়। সেখানে তিনি এ কথা বলেন)। সেই পিতার সন্তান হয়ে শেখ হাসিনা বাংলার মানুষকে ভালো না বেসে পারেন না। বঙ্গবন্ধুর কন্যা হিসেবে তাঁর কাছে হয়তো আমাদের অনেক প্রত্যাশা, কিন্তু আমাদের প্রত্যাশার পাশাপাশি যদি আমাদের হৃদয়ে সামান্য বিবেচনাবোধ থাকে এবং শেখ হাসিনা যাদের বিশ্বাস করে তাদের ওপর আস্থা স্থাপন করেন, তারা যদি তাঁর বিশ্বাসের মর্যাদা দেন, তাহলে সমীকরণটি খুবই সহজ হয়ে যায়; কিন্তু তা তো হওয়ার নয় কিছুতেই; সঙ্গত কারণেই ঘটে যায় বিপর্যয়। স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধুর সাড়ে তিন বছরের শাসনামল যে কোনো বিবেচনার ঊর্ধ্বে; ১৯৭৫-এর পর আজ পর্যন্ত বাংলাদেশের রাজনীতি-রাষ্ট্রনীতি-আর্থসামাজিক অবস্থা-জনজীবন সব মিলিয়ে শ্রেষ্ঠ সময় হিসেবে যে সময়টিকে চিহ্নিত করতে পারি সেটি ১৯৯৬ থেকে ২০০১ পর্যন্ত শেখ হাসিনার শাসনামল। তাঁর সে সময়কালে বাংলাদেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়েছিল, দ্রব্যমূল্য সহনীয় পর্যায়ে ছিল, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সন্তোষজনক ছিল; সব মিলিয়ে বেশ সুসময়ে কেটেছে আমাদের প্রতিটি দিন, কিন্তু পরবর্তী নির্বাচনে ভালো ফল আসেনি। নির্বাচন-উত্তরকালে শেখ হাসিনা বলেছিলেন, ‘নির্বাচনে সূক্ষ্ম কারচুপি হয়েছে।’ জাতির অনেক মেধাবী লোককে দেখেছি শেখ হাসিনার সেই বক্তব্যের বিরোধিতা করেছেন। আমি রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞ নই- রাজনৈতিক রচনা লিখতেও অভ্যস্ত নই; সাধারণভাবে আমি মোটা দাগে বিষয় বিশ্লেষণ করে থাকি, আমি ধারণা করি জননেত্রী শেখ হাসিনা তাঁর রাজনৈতিক জীবনে যত বক্তব্য দিয়েছেন তার মধ্যে সেদিনের সেই বক্তব্যটি সবচেয়ে মেধাদীপ্ত। সেদিনের সেই পরিস্থিতিতে এরচেয়ে খোলাসা করে বলার সুযোগ ছিল না, আবার এরচেয়ে সত্য ভাষণও কিছু হতে পারত না। আমি তাঁর কাছে এমন মেধাবী বক্তব্যই প্রত্যাশা করে থাকি।

একজন রাষ্ট্রনায়কের কোন পরিস্থিতিতে কোন কাজটি করা উচিত আমি বলতে পারি না; এমনকি বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে কোথায় কোন উদ্যোগটি নেয়া আবশ্যক সব সময় হয়তো বুঝে উঠতে পারি না, কিন্তু একজন সচেতন সংস্কৃতিকর্মী হিসেবে বুঝতে চাই- বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে সমুন্নত রেখে, বাংলাদেশের মানুষ বেড়ে উঠবে নিজস্ব সংস্কৃতি-কৃষ্টি আর নিজেদের ঐতিহ্যকে ধারণ করে। আধুনিক বিশ্বের সাথে তাল মেলাতে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সাথে ঘনিষ্ঠ হবে, জাতিকে স্বশিক্ষিত এবং সুশিক্ষিত হয়ে উঠতে হবে; পাশাপাশি বাংলাদেশের মাটি-বাংলার প্রকৃতি-বাংলার সুর ভালোবেসে অন্তরে ধারণ করবে প্রতিটি বাঙালি; লোকবাংলার সংস্কৃতির সাথে পরিচিত হয়ে উঠবে প্রতিটি বাঙালি, সে পরিবেশ এবং সে আয়োজন তার সামনে তুলে ধরতে হবে। আনুষ্ঠনিকতাসর্বস্ব সোনারগাঁওয়ের লোকশিল্প জাদুঘর এ জাতিকে বাঙালি হয়ে বেড়ে উঠতে সামান্য অবদান রেখেছে বলে মনে হয় না। লোকশিল্প জাদুঘরকে ছড়িয়ে দিতে হবে, যেখানে লোকসংস্কৃতির চর্চা সেখানে গড়ে তুলতে হবে লোকসংস্কৃতি একাডেমি। সৃষ্টিশীলতার প্রতিটি শাখায় সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা দিতে হবে আগামী দিনের দেশপ্রেমিক জাতি তৈরি করতে। আপাত অনুৎপাদনশীল সংস্কৃতি খাতে ব্যয় বরাদ্দ করা হলে অনেকেই হয়তো আপত্তি তুলবেন, বিশেষ করে ধর্মান্ধ গোষ্ঠী, স্বাধীনতা বিরোধীচক্র এবং তাদের পোষ্য বুদ্ধিজীবীরা তো প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষে আদাজল খেয়ে লাগবেন সংস্কৃতি বিকাশ-কার্যক্রমের বিরুদ্ধে। কিন্তু আমি বিশ্বাস করি যে কোনো মূল্যে বাঙালির ঐতিহ্য-বাঙালির কৃষ্টি-বাঙালির সংস্কৃতিকে উজ্জীবিত করতে পারলেই জাতি বেড়ে উঠবে সঠিক দিকনির্দেশনায় এবং আমার বিশ্বাস, যদি কোনো বাঙালি রাষ্ট্রনায়ক এমন সাহসী উদ্যোগ গ্রহণের স্পর্ধা দেখাতে পারেন তিনি বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা। বাংলার প্রতিটি জনপদে যদি সাংস্কৃতিক বিপ্লব সাধন করা যায় তাহলে শুধু মানুষ মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উজ্জীবিতই হবে না, যারা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে তারাও নিজেদের নিয়ন্ত্রণের পথ খুঁজে নেয়ার সুযোগ পাবে। জননেত্রী শেখ হাসিনার ১৯৯৬-২০০১-এর শাসনামল এবং ২০০৯ থেকে বর্তমান সময়ের শাসনামলের মৌলিক পার্থক্য নিজের দলের ওপর নিয়ন্ত্রণের ফারাক। আমি ধারণা করি জাতিকে সংস্কৃতিমান করে তোলা গেলে নিয়ন্ত্রণের কাজটি অনেকটাই সহজ হয়ে যাবে। আর সংস্কৃতিকর্মীরা যখন ছড়িয়ে পড়বেন মাঠে-ময়দানে, তারাই নিয়ন্ত্রণ করবেন ষড়যন্ত্রকারীদের; হয়তো অসুস্থ রাজনীতিকে রাজনীতি দিয়ে নয়, বাঙালির ঔদার্য-সহমর্মিতা-আতিথেয়তার মন্ত্রে পোষ মানাবেন। আর যারা অসুস্থ রাজনীতির চর্চা করেন, তরুণ সমাজের মধ্যে অসুস্থতা ছড়িয়ে দেন, তাদের মিথ্যা মোহের পেছনে ঘোরার জন্য তরুণ প্রজন্মের কাউকে আর খুঁজে পাবেন না তারা। বাঙালি জাতির প্রতিটি শিক্ষিত মানুষকে সংস্কৃতজন হিসেবে গড়ে তুলতে পারলেই আমাদের মুক্তি। আমাদের রাজনৈতিক অঙ্গনের প্রতিটি কর্মী যদি সংস্কৃতি সচেতন হয়ে ওঠেন- প্রতিটি রাজনৈতিক কর্মী যদি লোকজীবনের আনন্দ-বেদনার খোঁজ রাখেন- প্রত্যেকেই যদি বঙ্গবন্ধুর মতো অকৃত্রিম ভালোবাসতে পারেন প্রতিটি বঙ্গসন্তানকে, তাহলে প্রত্যেকের মধ্যে জাগ্রত হবে দেশপ্রেম-ভ্রাতৃত্ববোধ-পরমতসহিষ্ণুতা-ঔদার্য-সহনশীলতা। আমাদের রাজনৈতিক কর্মীরা যদি অন্তর দিয়ে বঙ্গবন্ধুকে ভালোবাসতে পারেন- বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে জীবনের ব্রত হিসেবে গ্রহণ করতে পারেন, তাহলেই বাঙালির জীবনে মুক্তি আসা সম্ভব। আমাদের বুকে স্বপ্ন জাগিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু, সেই স্বপ্ন হাতের মুঠোয় পাওয়ার পথে তিনি এগিয়েও যাচ্ছিলেন। সেই স্বপ্নপথের পদযাত্রায় বঙ্গবন্ধুকে হারিয়ে আমরা দিশাহারা হয়ে পড়েছিলাম; জননেত্রী শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত কাজ শেষ করার অঙ্গীকার জানিয়ে আমাদের বুকের ভাঙা স্বপ্নকে শুশ্রুষা দিয়ে উদ্দীপ্ত করেছেন; তাঁর পিতাকে তো আমরা বাঙালি জাতি অন্তর থেকে পিতা বলে স্বীকার করেছি। সঙ্গত কারণেই তাঁর কাছে আমাদের প্রত্যাশা থেকেই যায় এবং আমার বিশ্বাস তিনিই তা পারেন। শেখ হাসিনার মনন-মনীষা আর দৃষ্টিভঙ্গির সন্ধান পাই তখন, যখন দেখি তিনি তাঁর দাপ্তরিক-রাজনৈতিক সহস্র ব্যস্ততার মধ্যেও রচনা করেন শেখ মুজিব আমার পিতা, Secret Document Of Intelligence Branch on Father Of The Nation Bangabandhu Sheikh Mujibur Rahman (1st part 1948-1950 & part-2 1951-1952), নির্বাচিত প্রবন্ধ, বাংলাদেশে স্বৈরতন্ত্রের জন্ম, সাদা কালো, ওরা টোকাই কেন, দারিদ্র্য দূরীকরণ : কিছু চিন্তাভাবনা, Living In Tears, বিপন্ন গণতন্ত্র লাঞ্ছিত মানবতা, সহেনা মানবতার অবমাননা, People And Democracy, সবুজ মাঠ পেরিয়ে, Democracy Proverty Elimination & Peace, সামরিকতন্ত্র বনাম গণতন্ত্র, বৃহৎ জনগোষ্ঠীর জন্য উন্নয়ন, আমাদের ছোট শেখ রাসেল, Democracy in Distress Demeaned Humanity ইত্যাদি শিরোনামের বই; এসব ছাড়াও আছে দলীয় এবং রাজনৈতিক বিভিন্ন ইস্যুভিত্তিক আলোচনা, বক্তৃতা, এজেন্ডা বিষয়ক বই; আছে রচনাবলি ১ম ও ২য় খণ্ড ইত্যাদি। তখন তাঁকে নিয়ে আশাবাদী হতে সামান্য দ্বিধা থাকে না। বিশ্বব্যাংকের চরম বিরোধিতার পরও যিনি নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণের সিদ্ধান্তে অটল থাকেন, বিশ্ব মোড়লদের বিরোধিতার পরও যিনি ’৭১ ও ’৭৫-এর ঘাতকদের বিচার প্রক্রিয়া বাস্তবায়ন করে দেখান, যখন তাঁর নেতৃত্বে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় বেড়ে ওঠা জঙ্গিরা কোণঠাসা হতে বাধ্য, ‘তলাবিহীন ঝুড়ি’র কলঙ্ক ঘুচিয়ে দেশ যখন মধ্যম আয়ের দেশ হিসেবে বিশ্বে পরিচিতি পায়; যখন তিনি নিরন্ন-বঞ্চিত-অবহেলিত মানুষের কল্যাণচিন্তায় গ্রন্থ রচনা করেন, যখন বিত্ত-বৈভবহীন অসহায় শিল্পী-সাহিত্যিকদের চিকিৎসার্থে তিনি বিরোধী চিন্তা ও বিরোধীপক্ষের হলেও উদারহস্তে অনুদান দিয়ে সহযোগিতা করেন; তখন কি সে দেশের গর্বিত নাগরিক হিসেবে নিজেকে আশাবাদী ভাবতে পারি না? অসম্ভবের এ দেশে এতসব সম্ভব হয়েছে শুধু একজন শেখ হাসিনার দৃঢ়তা আর দেশপ্রেমের করণে। দুর্নীতি-দুঃশাসন-অপকর্মের বিনাশ ও অর্থনৈতিক বৈষম্য দূর করে সুখী-সমৃদ্ধ-সুশাসনের বাংলাদেশ হবে একজন শেখ হাসিনার হাত ধরে; এ প্রতীতিতে মানুষ নতুন করে স্বপ্ন বুননে উদ্যোগী হবে, এ বিশ্বাস স্থাপন অযৌক্তিক নয় নিশ্চয়ই। গণতন্ত্রের মানসকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে আমরা নতুন করে আশায় বুক বাঁধি। আমরা বিশ্বাস করি শেখ হাসিনা সুস্থ-সবল-কর্মক্ষম থাকবেন এবং বাঙালি জাতিকে কেবল মধ্যম আয়ের একটি দেশের নাগরিক নয়, পাশাপাশি সংস্কৃতমান জাতি হিসেবেও গড়ে তোলায় ব্রতী হবেন। আগামী বছর বাংলাদেশের প্রতিটি অঞ্চলে সুস্থ সংস্কৃতি চর্চার প্রবল প্রবাহ প্রত্যক্ষ করবো আমরা এবং সেই প্রবাহের সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ত থাকবেন বাংলার পরীক্ষিত সংস্কৃতি কর্মীরা। বাঙালির নিজস্ব সংগ্রামের অগ্রনায়ক হিসেবে আমাদের মুক্তির আন্দোলন এবং আত্মসম্মান প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা হবেন আমাদের দিশারী। উদার মানবিক শেখ হাসিনা ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন, আয়ুষ্মান হোন বঙ্গবন্ধুকন্যা। জয়তু শেখ হাসিনা। জয়বাংলা।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App