বঙ্গবন্ধু বাঙালির অধিকার রক্ষায় কেন্দ্রীয়ভাবে নেতৃত্ব দেন
কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ০৯:৪১ পিএম
বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী পালন উপলক্ষ্যে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের নিয়ে বঙ্গবন্ধু, মুক্তিযুদ্ধ ও বাংলাদেশ বিষয়ক বক্তৃতা অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে। বছরব্যাপী বক্তৃতা অনুষ্ঠানের অংশ হিসেবে গতকাল জাদুঘরের কবি সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে আয়োজন করা হয়েছে বঙ্গবন্ধু, মুক্তিযুদ্ধ ও বাংলাদেশ বিষয়ক একক বক্তৃতা। এই বক্তৃতা অনুষ্ঠানে নটরডেম কলেজের একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণীর ১০০ জন শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেছেন। আমন্ত্রিত শিক্ষার্থীদের মাঝে একক বক্তৃতা করেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি হাবীবুল্লাহ সিরাজী। বক্তৃতা অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরের মহাপরিচালক মো. রিয়াজ আহম্মদ। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন বাংলাদশে জাতীয় জাদুঘরের জনশিক্ষা বিভাগের কীপার, কবি ড. শিহাব শাহরিয়ার।
অনুষ্ঠানের প্রধান বক্তা কবি হাবীবুল্লাহ সিরাজী বলেন, স্বাধীনতার মহান স্থাপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন বাংলাদেশের ভারতীয় উপমহাদেশের একজন অন্যতম প্রভাবশালী রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, যিনি বাঙালির অধিকার রক্ষায় ব্রিটিশ ভারত থেকে ভারত বিভাজন আন্দোলন এবং পরবর্তীতে পূর্ব পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে কেন্দ্রীয়ভাবে নেতৃত্ব দেন।
হাবীবুল্লাহ সিরাজী বলেন, ১৯৪৭ সালে ভারত বিভাগ পরবর্তী পূর্ব পাকিস্তানের রাজনীতির প্রাথমিক পর্যায়ে তিনি ছিলেন তরুন ছাত্রনেতা। বাংলাকে অন্যতম রাষ্ট্রভাষা করার দাবী নিয়ে প্রতিষ্ঠিত আন্দোলনে অংশগ্রহণের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক তৎপরতার সূচনা ঘটে। ১৯৪৮ সালে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা দেন গণ-পরিষদের অধিবেশনে উর্দূই হবে পাকিস্তানের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা। এ ঘোষণার প্রেক্ষাপটে পূর্ব বাংলায় সাধারণ জনগণের মধ্যে গভীর ক্ষোভের জন্ম হয়। ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারিতে এ আন্দোলন চূড়ান্ত রূপ নেয়।
একক বক্তা আরো বলেন, পূর্ব পাকিস্তানের জনসংখ্যায় সংখ্যাগরিষ্ঠ ছিল কিন্তু মোট রপ্তানি আয়ের সংখ্যাগরিষ্ঠ রপ্তানি হতো পূর্ব পাকিস্তান থেকে। তবে, পূর্ব পাকিস্তানের রাজনৈতিক ক্ষমতা ও অর্থনৈতিক সুবিধা আনুপাতিক ছিল না। যার ফলে, অর্থনীতিবিদ, বুদ্ধিজীবী এবং পূর্ব পাকিস্তানের রাজনীতিবিদরা বৈষম্য সৃষ্টি হয় এবং এরই পরিপ্রেক্ষিতে ১৯৬৬ সালের ঐতিহাসিক ছয় দফা প্রদান করে। ১৯৭০-এর নির্বাচনে আওয়ামী লীগ পূর্ব পাকিস্তানের সংখ্যাগরিষ্ঠ আসনে জয়লাভ করেও সরকার গঠনে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী বিরোধিতা করেন। ৭১এর ২৫শে মার্চ রাতে পাকিস্তানি সামরিক বাহিনী শুরু করে অপারেশন সার্চলাইট নামের গণহত্যাযজ্ঞ। শুরু হল মুক্তির জন্য যুদ্ধ। ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয় এবং দীর্ঘ নয়মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর ১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশের স্বাধীনতা লাভের মধ্য দিয়ে এর পরিসমাপ্তি ঘটে। এসব কিছুর মূলে যে মানুষটি ছিলেন তিনি হলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।
মো. রিয়াজ আহম্মদ বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান একটি নাম, একটি ইতিহাস। বাঙালির প্রেরণার নাম। বাঙালির আপসহীন নেতা বঙ্গবন্ধু স্বপ্ন দেখেছিলেন সোনার বাংলা ও দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটানোর। শোষণমুক্ত, গণতান্ত্রিক ও অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার জন্য তিনি সারাজীবন কাজ করেছেন। ৭৫এর নির্মম হত্যাকা- বঙ্গবন্ধুকে, বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও দর্শনকে মুছে দিতে পারেনি। বাংলার মানুষ তাকে আগেও যেমন ভালোবেসেছে আজও তাকে তেমন ভাবেই হৃদয় দিয়ে ভালোবাসে।
স্বাগত ভাষণে সচিব মো. আবুল মজিদ বলেন, হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলার গর্বিত নাগরিক আমরা।