×

পুরনো খবর

‘মনের মতো স্কুল পেলে, শিখব মোরা হেসে খেলে’

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ০২:২৭ এএম

‘মনের মতো স্কুল পেলে, শিখব মোরা হেসে খেলে’
‘মনের মতো স্কুল পেলে, শিখব মোরা হেসে খেলে’
‘মনের মতো স্কুল পেলে, শিখব মোরা হেসে খেলে’
আমি বাবা-মায়ের শত আদরের মেয়ে/ আমি বড় হই সকলের ভালোবাসা নিয়ে- গানটি অতি পরিচিত। শিশুদের সবচেয়ে জনপ্রিয় মীনা কার্টুন ধারাবাহিকটিতে এ গানটি গাওয়া হয়। এতে ‘মীনা’ নামের বালিকা চরিত্রটি মেয়েশিশুদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় সোচ্চার। ১৯৯১ সালে ৯ বছর বয়সী বালিকা হিসেবে মীনার সৃষ্টি। দক্ষিণ এশীয় দেশগুলোতে বিভিন্ন সামাজিক বৈষম্যের বিরুদ্ধে সচেতনতা তৈরি এবং শিশুদের জন্য শিক্ষামূলক অনুষ্ঠানের অংশ হিসেবে ইউনিসেফের সহায়তায় ধারাবাহিকটি নির্মিত হয়ে থাকে। মীনার মাধ্যমে বাল্যবিবাহ বন্ধ করা, স্বাস্থ্যসম্মত পায়খানা নির্মাণ ও ব্যবহারে উৎসাহিত করা, মেয়েদের স্কুলে পাঠানো, কমবয়সী মেয়েদের বিয়ে থেকে স্কুলকে বেশি গুরুত্ব দেয়া, যৌতুক বন্ধ করা, ছেলে-মেয়ে সমান পুষ্টি ও সুযোগ-সুবিধার দাবিদার, প্রয়োজনীয় ও সমঅধিকার পেলে মেয়েরাও অনেক কিছু হতে পারে তা বোঝানো, শহরের বাসায় বাসায় কাজে সাহায্য করে এমন মেয়েদের প্রতি সুবিচার ও তাদের প্রয়োজনীয় শিক্ষা নিশ্চিত করা হয়। সমাজের কুসংস্কার, ধর্মান্ধতা, বিভেদ ও বৈষম্য দূর করে সমৃদ্ধ জাতি গঠনের বার্তাসমূহ বিনোদনমূলক কার্টুন চরিত্র মীনার মাধ্যমে উপস্থাপন করা হয়। মীনা চরিত্রটি বাংলাদেশ, পাকিস্তান, ভারত, নেপাল তথা দক্ষিণ এশিয়ার মেয়েশিশুদের প্রতিনিধিত্বকারী একটি বালিকা চরিত্র। এরই মধ্যে অনেক বিষয়ে মীনা কার্টুন পর্ব ও মীনা বই তৈরি করা হয়েছে, যার মাধ্যমে চরিত্রটি শিশু ছাড়াও সব বয়সের মানুষের মধ্যে সাড়া ফেলেছে। ১৯৯৮ সাল থেকে দেশব্যাপী মীনা দিবস উদযাপন করছে সরকারি ও বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থা। প্রতি বছর ২৪ সেপ্টেম্বর দিনটি উদযাপিত হয়। প্রতি বছরের মতো এ বছরও মীনা দিবস উদযাপন উপলক্ষে মীনা কার্টুন প্রদর্শনী, মীনা বিষয়ক আলোচনা, উপস্থিত শিশুদের অংশগ্রহণে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, পাপেট ও মাপেট শো প্রদর্শনী এবং মীনা মেলার আয়োজন করা হয়েছে। মঙ্গলবার (২৪ সেপ্টেম্বর) সকাল ১০ টায় মিরপুরে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরে এ দিবসটি উদযাপন উপলক্ষে আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছে। এবারের প্রতিপাদ্য ‘মনের মত স্কুল পেলে, শিখব মোরা হেসে খেলে’। মীনা কার্টুনের চরিত্রগুলো- মীনা : কেন্দ্রীয় চরিত্র। সে বিদ্যালয়ে যেতে ভালোবাসে এবং নতুন কোনো কিছু সম্পর্কে শিখতে ও জানতে চায়। প্রকৃতি প্রদত্ত ইন্দ্রিয়ের সাহায্যে ভালো-মন্দ বোঝার সক্ষমতা তার রয়েছে। গ্রামের যে কোনো সমস্যা মোকাবিলা করতে গিয়ে পিছু হটে না। তার এ শক্তিশালী ক্ষমতা দিয়ে দক্ষিণ এশিয়ার শিশুদের উজ্জ্বল ভবিষ্যত সম্ভাবনার কথা তুলে ধরে। রাজু : মীনার পিঠেপিঠি ভাই। মিঠু : মীনার সবচেয়ে কাছের বন্ধু ও তার পোষা টিয়া। রাণী : মীনা-রাজুর ছোট্ট বোন। দাদী : মীনা-রাজুর বৃদ্ধা দাদী। বাবা-মা : মীনা-রাজুর বাবা-মা। লালী : মীনাদের গরু। মুনমুন : মীনাদের ছাগল। মোড়ল : গ্রামের নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিত্ব। দোকানদার : সামন্ততান্ত্রিক, অত্যাচারী, শঠ চরিত্রের লোক। বাজারে তার দোকান আছে এবং তার ছেলে শহর থেকে ডাক্তারি পাশ করে এসেছে। কার্টুন ধারাবাহিকগুলোতে তিনিই মূলত খলনায়ক। রিতা : মীনার স্কুলের উপরের শ্রেণীতে পাঠরত একজন আপু। পরবর্তীকালে তার সাথে দোকানদারের ছেলের বিয়ে হয়। দিপু : মীনার একজন দুষ্টু বন্ধু। বিভিন্ন সময়ে দিপুকে সচেতন করতে সহায়তা করেছে মীনার টিয়া মিঠু। স্কুলের বড় আপা বা শিক্ষিকা : ইনি মীনাকে বিভিন্ন সমস্যায় সময় ও বুদ্ধি পরামর্শ দিয়ে সহায়তা করেছেন। এছাড়াও বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ধারাবাহিকে বিভিন্ন চরিত্রের আগমন ঘটেছে। ফুফু আম্মা: মীনা-রাজুর বাবার বড় বোন। বদমেজাজি, নিষ্ঠুর প্রকৃতির মহিলা। মীনা কার্টুনের পর্বগুলির মধ্যে আছে- সব মুরগী আছে বুদ্ধিমতি মীনা মীনা কি স্কুল ছেড়ে দেবে? মীনা ও দুষ্টু ছেলে জীবন বাঁচানো মীনার তিনটি ইচ্ছা যৌতুক বন্ধ কর বিয়ের বয়স হয় নাই মেয়েদের যত্ন নাও আমি স্কুল ভালবাসি ছেলেই হতে হবে মীনা এখন শহরে মীনা কার্টুনের সূচনা সংগীত- আমি বাবা-মায়ের শত আদরের মেয়ে আমি বড় হই সকলের ভালোবাসা নিয়ে আমার দু চোখে অনেক স্বপ্ন থাকে আমি পড়ালেখা শিখতে চাই যদি চার দেয়ালের মাঝে কাটে সারা জীবন তাহলে থাকবো শুধু বোঝা হয়ে শিক্ষা আমায় মুক্তি দেবে, মুক্তি দেবে আমিই তো কালকের খুশি আর আশা আমারোতো সাধ আছে, আছে অভিলাষা ঘরে বেঁধে রেখো না, নিয়ে যাও এগিয়ে। গানটিতে কণ্ঠ অসম্ভব সুন্দর এই গানটি রচনা করেছেন প্রখ্যাত সঙ্গীতকার আরশাদ মাহমুদ এবং ফারুক কায়সার। আর গানে মিষ্টি কণ্ঠ দিয়েছেন সুষমা শ্রেষ্ঠা, যিনি সেই সত্তরের দশকের শুরু থেকে বিগত দশক পর্যন্ত দর্শক শ্রোতাদের অসংখ্য কালজয়ী গান উপহার দিয়েছেন। গানটি পাকিস্তানে রচনা ও রেকর্ড করা হয়। বাংলার পাশাপাশি হিন্দি, উর্দু, ইংরেজি সংস্করণেও গানটি ইউটিউবে আছে। মীনার কণ্ঠ মীনা কার্টুনের মীনার অবয়বের মতো ওর কণ্ঠস্বরও দারুণ জনপ্রিয় ও চির-পরিচিত হয়ে উঠেছে। প্রথম দিকের পর্বগুলোতে মীনার কণ্ঠ দিয়েছেন ভারতের রাজশ্রী নাথ। তিনি নেপথ্য কণ্ঠশিল্পী এবং হিন্দি ভাষায় ডাবিং করা হ্যারি পটারসহ বিভিন্ন ছবিতে কণ্ঠ দিয়েছেন। আর মিঠুর কণ্ঠটি দিয়েছেন চেতন শশীতল। সাম্প্রতিক পর্বগুলোতে অন্যরা কণ্ঠ দিচ্ছেন। বাংলাদেশে নির্মিত বাংলা মীনা কার্টুনে মীনার কণ্ঠ দিচ্ছেন প্রমিতা গাঙ্গুলি।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App