×

খেলা

ইতিহাসের হাতছানি টাইগারদের সামনে

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ১১:১৮ এএম

ইতিহাসের হাতছানি টাইগারদের সামনে

মিরপুরে হোম অব ক্রিকেটে ২৩ সেপ্টেম্বর অনুশীলনের ফাঁকে কোচ রাসেল ডমিঙ্গোর সঙ্গে সাকিব আল হাসান -ভোরের কাগজ

ত্রিদেশীয় টি-টোয়েন্টি সিরিজের ফাইনালে মঙ্গলবার (২৪ সেপ্টেম্বর) আফগানিস্তানের মুখোমুখি হচ্ছে টাইগাররা। গ্রুপ পর্বে আফগানিস্তান ও বাংলাদেশ দুদলই একে অপরকে হারিয়েছে। এবার শেষ হাসি কে হাসবে এটাই দেখার পালা। মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে ম্যাচটি শুরু হবে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায়। এ ম্যাচে জিতে শিরোপা নিজেদের দখলে রাখতে মরিয়া টাইগাররা। প্রোটিয়া কোচ রাসেল ডমিঙ্গো তার শিষ্যদের নিয়ে আশাবাদী। ঘরের মাঠে শিরোপা জেতার সামর্থ্য সাকিববাহিনীর রয়েছে। আত্মবিশ্বাসে বলীয়ান টাইগাররা কাবুলিওয়ালাদের হারাতে সংকল্পবদ্ধ। চট্টগ্রামে আফগান বধে যারা নেতৃত্ব দিয়েছেন তাদের নিয়ে ফাইনালে মাঠে নামছে বাংলাদেশ। সহজ কথা স্কোয়াডে কোনো পরিবর্তন আসছে না। আজ ইতিহাস গড়তে মাঠে নামবে সাকিববাহিনী। এখন পর্যন্ত কোনো টি-টোয়েন্টি শিরোপা জেতা হয়নি টাইগারদের। সেই আক্ষেপ ঘোচানোর সুযোগ হাত ছাড়া করতে নারাজ রাসেল ডমিঙ্গোর শিষ্যরা। টি-টোয়েন্টি সিরিজ জিততে পারলে দ্বিতীয়বারের মতো কোনো বহুজাতিক শিরোপা জেতার রেকর্ড গড়বে টাইগাররা। তিন বছরেরও বেশি সময় ধরে টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে অপ্রতিরোধ্য আফগানিস্তান। আইসিসি র‌্যাঙ্কিংয়ে তাদের অবস্থান সপ্তম স্থানে। বিপরীতে বাংলাদেশ রয়েছে ৩ ধাপ নিচে দশম স্থানে। ২০১৬ সালের ডিসেম্বর থেকে চলতি ত্রিদেশীয় সিরিজে অংশ নেয়ার আগ পর্যন্ত টানা জয়ের মধ্যেই ছিল দলটি। অবশেষে বাংলাদেশে এসে দলটির ছন্দের পতন ঘটে। তিন জাতির টুর্নামেন্টে স্বাগতিকদের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে জয়ের ধারা অব্যাহত থাকলেও সাগরিকায় জহুর আহমেদে গিয়ে পা হড়কায়। টানা দুই ম্যাচে জিম্বাবুয়ে ও বাংলাদেশের বিপক্ষে হারতে হয় তাদের। অন্যদিকে টুর্নামেন্টে ৪ ম্যাচের মধ্যে তিনটিতে জয় এবং একটিতে হার নিয়ে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে থেকে ফাইনালে খেলছে বাংলাদেশ। ফাইনালের আগে গতকাল সংবাদ সম্মেলনে টাইগার কোচ রাসেল ডমিঙ্গো বলেন, এখন পর্যন্ত আমরা পারফেক্ট ক্রিকেট খেলতে পারিনি। যদিও ম্যাচ জিতেছি, কিছু ক্ষেত্রে আমরা ভালো আছি। আবার কিছু কিছু ক্ষেত্রে খুবই গড়পড়তা অবস্থানে রয়েছি। শেষ ৫ বা ৬ ওভারে ব্যাটিংয়ের সময় আমরা উইকেট বেশি জমা রেখে সেই ওভার খেলতে পারছি না। শুরুর ১০ ওভারে আমরা অনেক বেশি উইকেট হারিয়ে ফেলেছি। আদর্শ বিষয় হতো যদি ১৫ ওভার পর্যন্ত আমরা মাত্র দুই উইকেট হারাতাম। ব্যাটিংয়ে এমন পরিস্থিতি থাকলে শেষের ৫ ওভারে জয়ের জন্য একটা ক্ষেত্র তৈরি করা যায়। এখন পর্যন্ত ত্রিদেশীয় সিরিজে সর্বোচ্চ রান সংগ্রহের মধ্যে ফাইনালিস্ট দুদলের মধ্যে টাইগারদের শীর্ষে রয়েছেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। ৪ ম্যাচে তার রান ১২৬, আফগানদের মধ্যে রাহমানউল্লাহ গুরবাজের ১৩৩ আর উইকেট শিকারে বাংলাদেশের মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন এবং আফগানদের মুজিব উর রহমান ৭টি করে উইকেট লাভ করেন। ফাইনাল ম্যাচকে সামনে রেখে দল ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ দল। ঢাকায় গ্রুপ পর্বের প্রথম দুই ম্যাচের পর চট্টগ্রামে বাকি দুই ম্যাচের জন্য দল ঘোষণা করেছিল বাংলাদেশ। সেই দলে চার পরিবর্তন আনা হয়েছিল এবং ১৪ থেকে ১৫ জনের স্কোয়াড ঘোষণা করা হয়েছিল। এবার বড় চমক দিয়ে আফগানদের বিপক্ষে ফাইনাল ম্যাচের জন্য স্কোয়াড ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ। তবে এই স্কোয়াডে কোনো পরিবর্তন আনা হয়নি। চট্টগ্রামে টাইগারদের বিপক্ষে হারলেও মনোবল হারায়নি আফগানরা। বরং এই হারকে শক্তিতে পরিণত করে ত্রিদেশীয় সিরিজের ফাইনালে প্রবল বিক্রমে ঘুরে দাঁড়াতে চাইছে তারা। আফগান দলপতি রশিদ খান বলেন, আমি মনে করি না যে ওই দুই হারে আমরা মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছি। আমরা ফাইনাল ম্যাচটির দিকেই ফোকাস রাখতে চাই। প্রথম দুই ম্যাচে যা যা করেছি, এই ম্যাচটিতেও ঠিক তাই করতে হবে। সবচেয়ে বড় কথা হলো, আমরা ফাইনালে উঠেছি। এখানে আগের হার-জিত কোনো ইস্যু নয়। চট্টগ্রামে অনুষ্ঠিত শেষ ম্যাচে বাংলাদেশের বিপক্ষে ফিল্ডিংয়ের সময় হ্যামিস্ট্রিংয়ের চোট নিয়ে মাঠ ছেড়েছিলেন রশিদ খান। কিন্তু চোট তাকে ওই ম্যাচ থেকে ছিটকে দিতে পারেনি। কয়েক মিনিট পর মাঠে ফিরে পা টেনে টেনে বল করেন তিনি। ৩ ওভার বল করে ২৭ রান খরচায় ২ উইকেট শিকার করেন আহত অধিনায়ক। ফাইনালে খেলবেন কিনা তার জবাবে পরিষ্কার কোনো তথ্য দিলেন না আফগান দলপতি। অপেক্ষায় রেখে বললেন, এই মুহূর্তে আমি কিছুই বলতে পারছি না। ইনজুরি নিয়ে কাজ করেছি, মনে হচ্ছে কাজ করছে। দেখি রাতটা কেমন যায়। মঙ্গলবার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেব। রশিদ জানালেন, আসলে ইনজুরির মাত্রাটা কেমন ছিল সেটা জানতেই আমি চোট নিয়েই বোলিং করেছি। ফিজিও এবং কোচ চাইছিলেন না, আমি যেন বোলিং করি। আমি প্রথম দুই ওভার ভালোই বোলিং করি। কিন্তু দৌড়াতেই গিয়েই বিপদটা আরেকবার বাড়িয়ে ফেলি। ইনজুরির অবস্থা আরো শোচনীয় হয়ে পড়ে। আশা করছি আমার এই ইনজুরি ফাইনালের আগে ঠিক হয়ে যাবে। আর পুরোপুরি সেরে না উঠলে রশিদ খান সম্ভবত দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে খুঁড়িয়ে হলেও ঠিকই ফাইনাল খেলবেন। মাত্র ৪ ওভার বোলিং- দেশের জন্য একটু বাড়তি কষ্টই করলাম, এমন সংকল্প নিয়েই ফাইনালের পরিকল্পনা সাজাচ্ছেন আফগান দলপতি।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App