×

জাতীয়

ব্যস্ত সময় পার করছেন প্রতিমা কারিগররা

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২১ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ১২:২৩ পিএম

ব্যস্ত সময় পার করছেন প্রতিমা কারিগররা
বছরের অনেকটা সময় অলসভাবেই কাটান প্রতিমা কারিগররা। তবে শারদীয় দুর্গোৎসব মানে তাদের কাজের মৌসুম। দিন-রাতের তফাত তো দূরের কথা, এ দুই মাস যেন নাওয়া-খাওয়াও ভুলে যান তারা। তবে এ নিয়ে কোনো আক্ষেপ নেই প্রতিমা কারিগরদের। মর্যাদা ও উপযুক্ত পারিশ্রমিক না পেলেও তাদের ভাষ্য, এই সময়টার জন্যই অপেক্ষায় থাকেন তারা। অপেক্ষায় থাকেন কবে রথযাত্রা হবে, আর কবে মনের সবটুকু ভক্তি দিয়ে গড়বেন প্রতিমা। যোগ্য পারিশ্রমিক না পেলেও হাজার হাজার মানুষ যখন তাদের গড়া প্রতিমা দেখে মুগ্ধ হন; জানতে চান প্রতিমা শিল্পীর নাম, তখন না পাওয়ার সব দুঃখ ছাপিয়ে প্রাপ্তির আনন্দে ভরে উঠে তাদের মন। স্বার্থক হয় কয়েক মাসের পরিশ্রম। রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে শারদীয় দুর্গোৎসবের প্রস্তুতি চলছে। চলছে প্রতিমা তৈরির কাজ। বেনার (খড় দিয়ে কাঠামো) কাজ শেষ হয়েছে অনেক আগেই। কোথাও কোথাও বেনায় মাটির প্রলেপ দেয়াও শেষ। এখন শুকানোর অপেক্ষা। এর পরই রঙ আর তুলির আঁচড়ে ফুটিয়ে তোলা হবে দেবীর প্রতিচ্ছবি। মনের আনন্দে কাজের ছন্দে চলছে পার্বণের জোর প্রস্তুতি। কারিগররা জানান, রথের পর থেকে তারা প্রতিমা গড়ার কাজ শুরু করেন। বিভিন্ন ধরনের প্রতিমার ক্যাটালগ দেখে আয়োজকরা তাদের বায়না করেন। সেই অনুযায়ী চলে প্রতিমা তৈরির কাজ। দুর্গা প্রতিমার পাশাপাশি গণেশ, কার্তিক, লক্ষ্মী ও সরস্বতীর প্রতিমাকে গড়ে তুলতে হয় দৃষ্টিনন্দন। মহিষ, অসুর, সিংহসহ সবার বাহনও কিন্তু কম গুরুত্বপূর্ণ নয়। তাই সেগুলোকেও দিতে হয় সমান গুরুত্ব। আর এসব মিলিয়েই পরিপূর্ণ হয় একটি প্রতিমা সেট। পুরো সেট একা কোনো কারিগরের পক্ষে গড়া সম্ভব নয়। কাঠামোতে বেনা বাঁধা, প্রতিমার চোখ, হাতের আঙুল, মুখমণ্ডল তৈরিসহ প্রতিটি কাজের জন্য ভিন্ন কারিগর। পাঁচ-ছয়জন মিলে এক সেট প্রতিমা বানাতে সময় লাগে ১৫ দিন। ১৯৮৯ সাল থেকে ঢাকেশ্বরী মন্দিরে প্রতিমা তৈরি করেছেন সুকুমার পাল। এ বছর তার তৈরি প্রতিমা যাবে জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ, কিশোরগঞ্জের কটিয়াদি, নরসিংদীর মনোহরদী, মানিকগঞ্জে। মানিকগঞ্জে তার তৈরি দুটি প্রতিমায় পূজা হবে। আর ঢাকেশ^রীর মন্দিরের প্রতিমা তো আছেই। দীর্ঘ সময় ধরে রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের দুর্গা প্রতিমা তৈরির কাজ করছেন হরিপদ পাল ও তার ছোট ভাই কালীপদ পাল। এ বছরও একচালার এই প্রতিমা তৈরি করছেন তারা। পুরান ঢাকার শাঁখারীবাজার, তাঁতীবাজার, লক্ষ্মীবাজার, সূত্রাপুর এলাকার অস্থায়ী মণ্ডপের পূজার জন্য শিংটোলা এলাকায় ছোট আকারে বেশ কয়েকটি প্রতিমা তৈরি করছেন তপন পাল। এ বছর ১০টি প্রতিমা তৈরি করছেন তিনি। বাংলাবাজার নর্থব্রুক হল রোডের জমিদার বাড়িতে প্রতিমা তৈরির কাজ করছেন বলাই পাল। প্রতিবারের মতো এবারো তার তৈরি প্রতিমায় পূজা হবে বসুন্ধরা, শাঁখারীবাজার এলাকাসহ বিভিন্ন জায়গায়। ১৪টি প্রতিমা তৈরির বায়না পেয়েছেন এবার। তারিখ পরিবর্তন না করলে রংপুরের নির্বাচন বয়কট করবে সংখ্যালঘুরা : আসন্ন দুর্গোৎসবের প্রস্তুতির বিষয়ে দেশের বিভিন্ন এলাকার বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের নেতারা গতকাল শুক্রবার বৈঠক করেছেন। ঢাকেশ্বরী মন্দির প্রাঙ্গণে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে পরিষদের রংপুর জেলার নেতারা বলেন, ৫ অক্টোবর দুর্গোৎসবের সপ্তমীর দিন রংপুরে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। যে মাঠে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে সেই মাঠেই দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হয়। আমরা বারবার নির্বাচনের তারিখ পরিবর্তনের অনুরোধ জানিয়েছি। নির্বাচন কমিশনে চিঠিও দিয়েছি। কিন্তু এখনো কোনো সাড়া পাইনি। নির্বাচনের তারিখ পরিবর্তন না করা হলে সংখ্যালঘুরা এই নির্বাচন বয়কট করবে। প্রসঙ্গত, ষষ্ঠীর মাধ্যমে এবার পূজা শুরু হবে ৪ অক্টোবর। ৮ অক্টোবর প্রতিমা বিসর্জনের মাধ্যমে শেষ হবে শারদীয় দুর্গোৎসব। পরিষদের সাবেক সাধারণ সম্পাদক তাপস পাল ভোরের কাগজকে জানান, এ পর্যন্ত সারাদেশে ৩১ হাজার একশ এবং ঢাকায় ২৩৭টি মণ্ডপে পূজার তথ্য পরিষদের কাছে এসেছে। তবে পূজামণ্ডপের সংখ্যা আরো বাড়তে পারে। গত বছরের তুলনায় এ বছর মণ্ডপের সংখ্যা বেড়েছে এক হাজার।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App