সহস্রাধিক শিশুর কলমুখরিত সাংস্কৃতিক উৎসব
কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ০৯:২৫ পিএম
`আমরা সবাই মঞ্চকুঁড়ি, নটনন্দনে ফুটবো’ স্লোগানে সহস্রাধিক শিশুর কলমুখর পদচারণায় দেশের সর্ববৃহৎ শিশু-কিশোর উৎসব শুরু হয়েছে। নয়দিনব্যাপী ‘১৪তম জাতীয় শিশু-কিশোর নাট্য ও সাংস্কৃতিক উৎসব’ উদ্বোধন করেছেন সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এমপি। শুক্রবার (২০ সেপ্টেম্বর) শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালা প্রাঙ্গণে অতিথিরা বেলুন উড়িয়ে উৎসবের উদ্বোধন করেন। একইসঙ্গে শিল্পী মোস্তাফা মনোয়ার রং তুলির আঁচড়ে শিশু চিত্রাঙ্কনের উদ্বোধন করেন। এসময় শিশুরা গেয়ে শোনায় উৎসব সংগীত ‘আমরা সবাই মঞ্চকুঁড়ি, নটনন্দনে ফুটবো’।
পরে মিলনায়তনের ভিতরে জাতীয় সঙ্গীতের মধ্য দিয়ে শুরু হয় আলোচনা পর্ব। এসময় ওবায়দুল কাদের বলেন, এ ধরণের উৎসব আয়োজনের মধ্য দিয়ে শিশুরা নিজস্ব সংস্কৃতির প্রতি আরো বেশি দায়বোধ অনুভব করবে। তাদের সুন্দর আগামী নির্মাণের জন্যই সংস্কৃতিকে পৃষ্ঠপোষকতা করতে হবে।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক ও পিপলস থিয়েটার এসোসিয়েশনের প্রতিষ্ঠাতা লিয়াকত আলী লাকী। বিশেষ অতিথি ছিলেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কেএম খালিদ, আইটিআই বিশ্বকেন্দ্রের সাম্মানিক সভাপতি রামেন্দু মজুমদার এবং বাংলাদেশ গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশানের সেক্রেটারি জেনারেল কামাল বায়েজীদ। শিশুদের পক্ষ থেকে বক্তব্য রাখেন শিশুশিল্পী টইটই হিলালী এবং সামিয়া মীম।
আলোচনা পর্বে সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ বলেন, এ বছরের মধ্যেই অন্তত ১০০টি উপজেলায় সাংস্কৃতিক কেন্দ্র নির্মাণের কাজ শেষ করা হবে। এসব সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে অত্যাধুনিক মিলনায়তনের পাশাপাশি মহড়া কক্ষসহ সব রকম সুযোগ সুবিধা থাকবে। সারাদেশের সব উপজেলায় সাংস্কৃতিক কেন্দ্র নির্মাণ করা হচ্ছে। মুস্তাফা মনোয়ার বলেন, আমাদের শিশুরা বইয়ের ব্যাগ বইতে বইতে কুঁজো হয়ে যাচ্ছে। এটা যেন না হয়। শিশুরা যেন মনের আনন্দে নিজেদের প্রতিভার বিকাশ ঘটায় এজন্য সাংস্কৃতিক কর্মাকা-ে যুক্ত হতে হবে।
উদ্বোধনী আলোচনা পর্ব শেষে অনুষ্ঠিত হয় শিশুদের অংশগ্রহণে নান্দনিক সাংস্কৃতিক পরিবেশনা। প্রথম দিনের নাট্য পরিবেশনার মধ্যে ছিলো পিপলস লিটল থিয়েটার, ঢাকা- এর নাটক ‘ডাকঘর’; বিবর্তন যশোর-এর নাটক ‘বনকাব্য’; বাঁধনহারা থিয়েটার স্কুল, নরসিংদী-এর নাটক ‘দৈত্য হলো খেলার সাথি’ এবং বন্ধুমহল শিল্পী সংস্থা, গাজীপুর-এর নাটক।
বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি ও পিপলস থিয়েটার এসোসিয়েশনের যৌথভাবে আয়োজিত এ উৎসব চলবে আগামী ২৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। উৎসবে ৯৫টি শিশু নাট্যদল অংশ নিচ্ছে। নাটক মঞ্চায়নের পাশাপাশি ৮টি ভেন্যুতে প্রতিদিন ৮৫টি পরিবেশনা অনুষ্ঠিত হবে। এই আয়োজনে ৪০০ শিশু-কিশোরকে ‘মঞ্চকুঁড়ি তনয় শিশু পদক’ প্রদান করা হবে। পাশাপাশি পদক প্রদান করা হবে উৎসবে অংশ নেয়া বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন প্রতিটি শিশুকে।
উৎসবের সমাপনী দিনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্মদিন উদযাপন করা হবে। নাটকের প্রদর্শনীর পাশাপাশি, সঙ্গীত, পুতুল নাচ, নৃত্যসহ নানা রকম সাংস্কৃতিক আয়োজন থাকবে পুরো উৎসবজুড়ে।