×

জাতীয়

শিক্ষিকার দাবি, জিনে নিয়ে গেছে নিখোঁজ মাদ্রাসাছাত্রী সাজমিনকে

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ১০:৫২ এএম

শিক্ষিকার দাবি, জিনে নিয়ে গেছে নিখোঁজ মাদ্রাসাছাত্রী সাজমিনকে
রাজধানীর পল্লবীর বাউনিয়া বাঁধ এলাকার জামিয়া ফোরকানিয়া তালিমিয়া মহিলা মাদ্রাসা থেকে ষষ্ঠ শ্রেণির এক ছাত্রী নিখোঁজ হয়েছে। গত ৩১ আগস্ট থেকে তার কোনো খোঁজ পায়নি পরিবার। পরে মাদ্রাসায় যোগাযোগ করলে শিক্ষিকা আফরোজা বেগম জানান, সাজমিন আক্তার (১৩) নামের ওই ছাত্রীকে জিনে নিয়ে গেছে। গতকাল বুধবার বেলা ১২টার দিকে রাজধানীর সেগুনবাগিচাস্থ বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স এসোসিয়েশনে (ক্র্যাব) সংবাদ সম্মেলন এসব তথ্য জানান নিখোঁজ ছাত্রীর বাবা শরীফ উল্লাহ। এ সময় ওই ছাত্রীর মা শিল্পী আক্তারও উপস্থিত ছিলেন। শরীফ উল্লাহ বলেন, তাদের বাসা মিরপুরের শাহ আলীবাগে। ৪ বছর ধরে তার মেয়ে সাজমিন ওই মাদ্রাসায় পড়ছে। গত ৮ আগস্ট ঈদুল আজহার ছুটিতে সাজমিনকে বাসায় নিয়ে আসেন। ২৫ আগস্ট মাদ্রাসা খুললে শিক্ষিকা আফরোজা বেগম ফোন করে মেয়েকে রেখে আসতে বলেন। গত ২৭ আগস্ট মেয়েকে মাদ্রাসায় রেখে আসি। গত ৩১ আগস্ট ওই শিক্ষিকা ফোন করে বলেন, ‘আপনার মেয়েকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। তার সঙ্গে জিন ছিল। তাকে জিনে নিয়ে গেছে।’ পরে তিনি মাদ্রাসা গেটে গিয়ে নিরাপত্তাকর্মীর কাছে সাজমিনের খবর জানতে চান। কিছুক্ষণ পর ওই নিরাপত্তাকর্মী এসে জানায়, সাজমিনকে সকাল থেকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। এরপর আমি মাদ্রাসার হুজুর ও আপাকে ফোন দেই। তারা একেক সময় একেক কথা বলছেন। প্রথমে বলেন, গেটে বাবার সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে আর আসেনি। আবার জানায়, আমার মেয়ের সঙ্গে জিন আছে। তাকে জিনে নিয়ে গেছে। আবার বলে সে অসুস্থ। মাথা ঘুরে সিঁড়িতে পড়ে গেছে। পরে মেয়েকে খুঁজতে আমি মাদ্রাসার সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ দেখতে চাই। আমাকে তা দেখতে দেয়া হয়নি। এরপর ১ সেপ্টেম্বর আমরা পল্লবী থানায় একটি জিডি করি। জিডির ৩ দিন পর পুলিশ মাদ্রাসায় গিয়ে ছাত্রছাত্রী ও শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলে ও সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ দেখতে চায়। তখন পুলিশ দেখে সিসিটিভি ক্যামেরা বন্ধ ছিল। তিনি বলেন, এখনো সাজমিনকে উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ। এর মধ্যে কয়েকটি নম্বর থেকে আমাদের কাছে পুলিশ পরিচয় দিয়ে টাকা চাওয়া হয়েছে। আমি আমার মেয়েকে উদ্ধারে প্রধানমন্ত্রীর সহযোগিতা চাই। সাজমিনের মা শিল্পী আক্তার বলেন, আমার একমাত্র মেয়েকে ফেরত চাই। আর যদি আমার মেয়ে কোনো কারণে মারা গিয়েও থাকে তবে মরদেহ চাই। ওই মাদ্রাসার ভেতর এমন নিরাপত্তা ব্যবস্থা রয়েছে তাতে কেউ বের হয়ে যাবে এমন সাধ্য নেই। জিনে নিয়ে যাওয়ার বিষয়ে মাদ্রাসাটির শিক্ষিকা আফরোজা বেগম বলেন, সাজমিনের সঙ্গে সব সময় জিন থাকে তা আমি বলিনি। এটি তার বান্ধবী আনিকা বলেছে। আর আনিকাকে সাজমিনই বলেছে যে, তার সঙ্গে সব সময় জিন থাকে। এমনকি সাজমিন আনিকাকে একটি ডায়েরি দিয়ে বলেছে, আমি সাকিব নামে একটি ছেলেকে ভালোবাসি। তার সঙ্গে আমি চলে যাব। তোর কাছে এই ডায়েরিটা রাখবি। পরে সেই ডায়েরিটা পুলিশ জব্দ করেছে। সিসি ক্যামেরা সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সাজমিন যখন নিখোঁজ হয় তখন আমাদের প্রিন্সিপাল হজে ছিলেন। ক্লিনাররা তার রুমে ঝাড়ু দিতে গিয়ে সিসি ক্যামেরার তার ছিঁড়ে গেছে। সেজন্য বন্ধ ছিল। ফলে সাজমিন চলে যাওয়ার বিষয়টি আমরা কেউই দেখতে পারিনি। তদন্ত হোক, সঠিক তথ্য বেরিয়ে আসুক। মেয়েটি উদ্ধার হোক আমরাও চাই। পল্লবী থানার ওসি নজরুল ইসলাম বলেন, আমরা ঘটনার পর মেয়েটিকে উদ্ধারে কাজ করছি। মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের অনেককে জিজ্ঞাসাবাদ করেছি। বাচ্চাদের নিরাপত্তার দায়িত্ব মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের। আমরাও বিভিন্নভাবে চেষ্টা করছি। তবে এখনো তেমন কোনো আপডেট নেই।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App