নাগরিকত্ব, কেড়ে নেয়া জমিজমা ফেরতের নিশ্চয়তা না পেলে মিয়ানমারে ফিরে যাবেন না বলে চীনের প্রতিনিধিদলকে জানিয়েছেন টেকনাফে শিবিরে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গারা। গতকাল সোমবার টেকনাফের ২৬ নম্বর শিবিরের সিআইসি কার্যালয়ে রোহিঙ্গা নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত লি জিমিংয়ের কাছে এসব দাবি জানান তারা। চীনা প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন রাষ্ট্রদূত লি জিমিং। মিয়ানমারে ফিরে যেতে কী সমস্যা লি জিমিংয়ের এমন প্রশ্নের জবাবে রোহিঙ্গা প্রতিনিধিরা জানান, মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের জন্য এখনো শান্তির পরিবেশ সৃষ্টি হয়নি। তারা বলেন, সে দেশে বিবদমান গ্রুপের মধ্যে সংঘাত লেগে আছে। সেখানে অবস্থানরত রোহিঙ্গা মুসলমানদের ওপর নির্যাতন এখনো চলছে। তা ছাড়া ২০১২ সালে আকিয়াবে ১ লাখ ৮০ হাজার রোহিঙ্গাকে কয়েক মাসের জন্য এক জায়গায় জড়ো করে রাখলেও এখনো পর্যন্ত তারা একই অবস্থায় রয়ে গেছে। এ পরিস্থিতিতে আমরা কীভাবে মিয়ানমার যাব। কী ব্যবস্থা নিলে মিয়ানমারে যাবেন এমন প্রশ্নের উত্তরে রোহিঙ্গা নেতা মো. জাকারিয়া, হোছাইন আহমদ ও মো. জসীম চীনা প্রতিনিধিদলকে বলেন, নাগরিকত্ব ও কেড়ে নেয়া জমিজমা ফেরত দিলেই আমরা নিজ উদ্যোগে ফিরে যাব। মতবিনিময় শেষে শালবন শিবিরে আশ্রিত রোহিঙ্গাদের তিনটি ঘরে যান চীনা প্রতিনিধিদলের সদস্যরা। সেখানে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেন এবং তাদের হাতে কিছু স্কুল ব্যাগ ও ফুটবল তুলে দেন। এর আগে সকাল ১০টার দিকে চীনের রাষ্ট্রদূত টেকনাফের কেরুনতলী ট্রানজিট ঘাট পরিদর্শন করেন। পরিদর্শনকালে প্রত্যাবাসন বিষয়ে লি জিমিংয়ের কাছে জানতে চাইলে জবাবে অতিরিক্ত ত্রাণ ও শরণার্থী প্রত্যাবাসন কমিশনার শামসুদ্দৌজা নয়ন বলেন, প্রত্যাবাসনের জন্য বাংলাদেশের পক্ষ থেকে সব কিছু প্রস্তুত রয়েছে। যে কোনো মুহূর্তে প্রত্যাবাসন করা যাবে। এ সময় তার সঙ্গে আরো ছিলেন নয়াপাড়া শরণার্থী রোহিঙ্গা শিবিরের ইনচার্জ (সিআইসি) আব্দুল হান্নান, জাদিমুরা ও শালবাগান রোহিঙ্গা শিবিরের ইনচার্জ মোহাম্মদ খালিদ হোসেনসহ অন্য কর্মকর্তারা। জাদিমুরা ও শালবাগান রোহিঙ্গা শিবিরের ইনচার্জ মোহাম্মদ খালিদ হোসেন বলেন, চীনের রাষ্ট্রদূতের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল টেকনাফের কেরুনতলী ট্রানজিট ঘাট ও শালবাগান শিবির পরিদর্শন করে। এ সময় রোহিঙ্গাদের সঙ্গে কথা বলেন প্রতিনিধিদলের সদস্যরা।