×

জাতীয়

সরকারের হস্তক্ষেপের বিরুদ্ধে আইনি লড়াই করবে বিএনপি

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ০৮:৫৪ পিএম

সরকারের হস্তক্ষেপেই আদালত ছাত্রদলের কাউন্সিলে স্থগিতাদেশ দিয়েছে বলে মনে করে বিএনপি। এজন্য আইনগতভাবেই পরিস্থিতি মোকাবেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি। দলটির শীর্ষ নেতৃত্ব পরবর্তী করনীয় নির্ধারণে দলটির আইনজীবী নেতাদের দায়িত্ব দিয়েছেন।

শুক্রবার (১৩ সেপ্টেম্বর) বিকেলে দলটির সিনিয়র নেতাদের এক বৈঠকে এ দায়িত্ব দেয়া হয়।

বৈঠকে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ড.খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ, ব্যারিস্টার জমিরউদ্দিন সরকার, ড. আবদুল মঈন খান, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সেলিমা রহমান, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে লন্ডন থেকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত ছিলেন।

বৈঠক শেষে সন্ধ্যায় গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ছাত্রদলের বিষয়ে ছাত্রদল নেতারা আলাপ করছেন। তারা সিদ্ধান্ত নেবে। এটা তাদের ব্যাপারা। আমরা বিএনপি এটার সঙ্গে জড়িত নই। আমাদেরকে যেটা প্রশ্ন করা হয়েছে আমরা আমাদের উত্তরগুলো কোর্টের কাছে যথা সময়ে দেবো। ছাত্রদলের সিদ্ধান্ত ছাত্রদলই নেবে।

কাউন্সিলের কী হবে-এমন প্রশ্নে বিএনপি মহাসচিব বলেন, এটা ছাত্রদলই করবে। এটা তারা বলবে। আমি বিএনপির সেক্রেটারি জেনারেল হিসেবে এ কথা বলছি না। এটা তারা বলবে। ছাত্রদলের তো কমিটি নেই-এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে বিএনপি মহাসচিব বলেন, যারা দায়িত্বে আছেন তারা বলবেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, আপনারা সবাই ছাত্রদলের কাউন্সিলের স্থগিতাদেশের ব্যাপারে জানতে আগ্রহী। কি সিদ্ধান্ত। হঠাৎ করে এ বিষয়টা সামনে এসেছে একেবারে শেষ মুহুর্তে সকলের অগোচরে। বোঝা যায় এখানে সরাসরি সরকারের হস্তক্ষেপ আছে বলেই স্থগিতাদেশ দেয়া হয়েছে। তিনি বলেন, আসলে বর্তমানে সরকার যারা আছেন তারা কি চান? বাংলাদেশে নূন্যতম গণতন্ত্রের পরিস্থিতি পরিবেশ থাকুক?।

বিএনপি মহাসচিব বলেন,আজকে বর্তমান সরকার যে কালচার তৈরি করেছে রাজনৈতিক সংস্কৃতিক তৈরি করেছেন এটা ভয়বাহ, আদলতকে দিয়ে রাজনীতি নিয়ন্ত্রন করা। গত দশ বছর ধরে তারা এই সংস্কৃতি তৈরি করেছেন। তিনি বলেন, এই সরকার আদালতকে ব্যবহার করে বিভিন্ন আইন কানুন তৈরি করে গণতান্ত্রিক অধিকার কেড়ে নিয়েছেন। আদালতকে প্রশ্নবিদ্ধ করে দেয়া, আদালতকে দলীয় করণের দিকে নেয়া দেশ ও জাতির জন্য শুভ নয়।

মির্জা ফখরুল বলেন, রাজনীতিতে আদালতের হস্তক্ষেপে কখনওই কোনো গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের জন্য, জাতির ভবিষ্যতের জন্য শুভ হতে পারে না। একটা দল আসবে একটা দল যাবে এটাই নিয়ম, তারা যদি ভাবেন যতদিন পৃথিবী থাকবে ততদিন তারা থাকবেন তাহলে তারা বোকার স্বর্গে বাস করছেন।

উল্লেখ্য, শনিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) ছাত্রদলের কাউন্সিল হওয়ার কথা। বৃহস্পতিবার কাউন্সিলের ওপর অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা জারি করেন আদালত। ছাত্রদলের সদ্য বিলুপ্ত কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-ধর্মবিষয়ক সম্পাদক আমানউল্লাহ আমানের এক আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার চতুর্থ সহকারী জজ নুসরাত জাহান বিথি এ আদেশ দেন। এছাড়া কাউন্সিল অনুষ্ঠানে কেন স্থায়ী নিষেধাজ্ঞা দেয়া হবে না তা জানতে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ ১০ নেতাকে কারণ দর্শানোর নির্দেশ দেন আদালত।

বৃহস্পতিবার রাত ৮টার দিকে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আদেশের কপি পৌঁছে দেয়া হয়। এরপরপরই বিষয়টি নিয়ে বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয়ে বৈঠকে বসেন কাউন্সিল পরিচালনা কমিটির নেতারা। বৃহস্পতিবার রাতেই নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জরুরি সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী অভিযোগ করেন, আদালত যে অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন সেটা ‘অযৌক্তিক’। কোনো বিচার বিশ্লেষণ ও যুক্তিতর্ক ছাড়া ছাত্রদলের কাউন্সিল স্থগিতের আদেশ দেয়া গভীর চক্রান্তমূলক। সরকারের কারসাজিতেই এহেন আদেশ প্রদান করা হয়েছে।

আদালতের অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞার প্রতিবাদে শুক্রবার প্রতিবাদ বিক্ষোভ করেছেন সংগঠনের নেতাকর্মীরা। দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে ছাত্রদলের সভাপতি প্রার্থী ফজলুর রহমান খোকন, সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী মো. মোস্তাফিজুর রহমান, সাবেক কেন্দ্রীয় নেতা মো. আব্বাস আলীর নেতৃত্বে এ বিক্ষোভ মিছিল হয়।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App