বাণিজ্য বাধা দূর হলে সিআইএসভুক্ত দেশে রপ্তানি বাড়বে কয়েক গুণ
কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ১১:১৩ এএম
উজবেকিস্তানে সফররত বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেছেন, বাংলাদেশ তৈরি পোশাক রপ্তানিতে পৃথিবীর মধ্যে দ্বিতীয় স্থান দখল করে আছে। বিশ্ববাজারে দিন দিন তৈরি পোশাক রপ্তানি বাড়ছে। বাংলাদেশের কারখানাগুলোতে নিরাপদ ও কর্মবান্ধব পরিবেশে শ্রমিকরা কাজ করছে। দেশে একের পর এক গ্রিন ফ্যাক্টরি গড়ে উঠছে। বাংলাদেশ উজবেকিস্তানসহ সিআইএসভুক্ত দেশগুলো (আজারবাইজান, বেলারুশ, কাজাখাস্তান, কিরগিস্তান, আরমেনিয়া, মলডোভা, রাশিয়া, তাজিকিস্তান এবং উজবেকিস্তান) বাংলাদেশি পণ্যের রপ্তানি বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছে। টিপু মুনশি বলেন, বাণিজ্য বাধা দূর হলে রপ্তানি অনেক গুণ বাড়বে।
বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি উজবেকিস্তানের রাজধানী তাসখন্দে গত মঙ্গলবার উজবেকিস্তান টেক্সটাইল এন্ড গার্মেন্টস ইন্ডাস্ট্রি এসোসিয়েশন আয়োজিত ‘উজবেকিস্তান টেক্সটাইল কনফারেন্স এবং ৫ দিনব্যপী গ্লোবাল টেক্সটাইল ডে’-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে এসব কথা করেন। সভায় আরো বক্তব্য রাখেন উজবেকিস্তানের উপ-প্রধানমন্ত্রী ইলিয়রগানিয়েভ, তুরস্কের রাষ্ট্রদূত, আইএলও, আইএফসি প্রতিনিধিরা। আয়োজক সংস্থার পক্ষ থেকে কনফারেন্সের মূল প্রতিপাদ্য উপস্থাপনায় তৈরি পোশাক খাতের বিশ্ববাণিজ্য পরিস্থিতির হাল নাগাদ চিত্র তুলে ধরা হয় এবং তাতে বাংলাদেশের ভূমিকা গুরুত্বের সঙ্গে উল্লেখ করা হয়।
এর আগে গত সোমবার উজবেকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ইলিয়রগানিয়েভের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় সভায় বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, উজবেকিস্তান বাংলাদেশের ঘনিষ্ঠ বন্ধুরাষ্ট্র। বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক বাণিজ্য বাড়ানো এবং বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে স্থাপিত স্পেশাল ইকোনমিক জোনে বিদেশি বিনিয়োগের জন্য বিশেষ উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। বিনিয়োগকারীদের বিশেষ সুযোগ-সুবিধা দেয়া হচ্ছে। ইতোমধ্যে অনেক দেশ বাংলাদেশের স্পেশাল ইকোনমিক জোনে বিনিয়োগ শুরু করেছে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সুযোগ্য কন্যা ও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক ও সামাজিক খাতের দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে। বিশ^বাণিজ্যে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। বিশ্বের মধ্যে বাংলাদেশ এখন উন্নয়নের রোলমডেল। ২০২৪ সালে বাংলাদেশ এলডিসি থেকে বেরিয়ে উন্নয়নশীল দেশে পরিণত হবে।
উজবেকিস্তানের উপ-প্রধানমন্ত্রী ইলিয়রগানিয়েভ বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্য বৃদ্ধি করার কথা বলেন। তিনি বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক, চামড়া ও চামড়াজাতপণ্য, পাট ও পাটজাত পণ্য এবং ফার্মাসিউটিক্যালস ইত্যাদি আমদানি বাড়ানোর বিষয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেন। এ সময় বাংলাদেশের প্রতিনিধি দলের অন্যান্য সদস্য এবং উজবেকিস্তান সরকারের বিনিয়োগ ও পররাষ্ট্রবিষয়ক উপমন্ত্রী এবং কৃষিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী উপস্থিত ছিলেন। পরে বাণিজ্যমন্ত্রী উজবেকিস্তনের চেম্বার অব কমার্স আয়োজিত দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ফোরামের রাউন্ড টেবিল বৈঠকে যোগদান করেন। এ সময় বাণিজ্যমন্ত্রী বাংলাদেশের তৈরি পোশাক ছাড়াও পর্যটন, যৌথ বিনিয়োগ, ঢাকা-তাসখন্দ সরাসরি ফ্লাইট চালু এবং বাংলাদেশের স্পেশাল ইকোনমিক জোনে বিনিয়োগের আহবান জানান। বাণিজ্যমন্ত্রী উজবেকিস্তান সরকারের ও বাণিজ্য প্রতিনিধি দলকে বাংলাদেশ সফরের জন্য আমন্ত্রণ জানান।
সভায় বাংলাদেশের পক্ষে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি এবং উজবেকিস্তানে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশের ব্যবসা-বাণিজ্য, অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন। উজবেকিস্তানের পক্ষ থেকে চেম্বারের সভাপতি আধামইকরামভ ছাড়াও বিনিয়োগ ও পররাষ্ট্রবিষয়ক উপমন্ত্রী লাজিজ কুদরাতভ ও উজবেকিস্তানের ফার্মাসিউটিক্যালস ইন্ডাস্ট্রির পরিচালক সারদোরকারিয়েভ বক্তব্য রাখেন। আলোচনায় উভয় পক্ষ দুদেশের মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্য সম্প্রসারণ এবং বিনিয়োগের সম্ভাবনা কাজে লাগানোর ওপর গুরুত্ব আরোপ করা হয়।