×

খেলা

শেষ দিনে সাকিবের দিকে তাকিয়ে বাংলাদেশ

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৮ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ১০:২০ পিএম

শেষ দিনে সাকিবের দিকে তাকিয়ে বাংলাদেশ

সাকিবের ব্যাটিং অ্যাকশন । ছবি: কমল দাশ

তৃতীয় দিন শেষেই ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ পুরোপুরি আফগানদের হাতে চলে গিয়েছিল। কারণ ২ উইকেট হাতে রেখে ৩৭৪ রানের বিশাল লিড নিয়ে চট্টগ্রাম টেস্টের তৃতীয় দিন শেষ করেছিল রশিদ খানের দল। এই লক্ষ্য তাড়া করে ম্যাচ জেতা কেবল কঠিনই নয়, একপ্রকার অসম্ভবও। তবুও টাইগার সমর্থকরা ভালো কিছু দেখার আশায় বুক বেঁধেছিল। তাদের প্রত্যাশা ছিল চতুর্থ দিনে ঘুরে দাঁড়াবে সাকিবের দল। কিন্তু সেটা আর হলো কই! হার এড়াতে টাইগারদের ভরসা ছিল সাগরিকার বৈরি আবহাওয়া। ব্যাটসম্যানরা না পারলেও বৃষ্টি ঠিকই কিছুটা সঙ্গ দিয়েছে বাংলাদেশকে। চতুর্থ দিনের প্রথম সেশনের পুরোটাই ভেস্তে যায় বৃষ্টিতে। আর শেষ বিকেলে বাংলাদেশ যখন হারের প্রহর গুণছিল তখন আবারো নেমে আসে বৃষ্টি। যে কারণে নির্ধারিত সময়ের প্রায় আধা ঘন্টা আগে দিনের খেলার সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়। চতুর্থ দিন শেষে নিজেদের ২য় ইনিংসে টাইগারদের সংগ্রহ ৬ উইকেটে ১৩৬ রান। ম্যাচ জিততে আরো ২৬২ রান করতে হবে কোচ রাসেল ডমিঙ্গোর শিষ্যদের। হাতে আছে ৪ উইকেট। সে হিসেবে বলা যায়, চট্টগ্রাম টেস্টে জয়ের পাল্লাটা আফগানদের দিকেই বেশি ভারী। শেষ দিনে ম্যাচ বাঁচাতে টাইগারদের সবচেয়ে বড় ভরসা অধিনায়ক সাকিব। ৩৯ রানে অপরাজিত আছেন এই বাঁ-হাতি ব্যাটসম্যান। তার সঙ্গে ক্রিজে থাকা অপর ব্যাটসম্যান সৌম্য সরকার এখনো রানের খাতা খুলতে পারেননি। পঞ্চম দিনে সাকিব-সৌম্যর দিকেই তাকিয়ে আছে টাইগার সমর্থকরা।

আফগানিস্তান তৃতীয় দিন শেষ করেছিল ৮ উইকেটে ২৩৭ রান নিয়ে। আগের দিনের সঙ্গে আর ২৩ রান যোগ করেই বাকি ২ উইকেট হারায় তারা। ফলে টাইগারদের সামনে জয়ের জন্য ৩৯৮ রানের লক্ষ্যমাত্রা দাঁড়ায়। আফগানদের ২য় ইনিংসে টাইগারদের পক্ষে সবচেয়ে বেশি উইকেট নেন সাকিব। ৫৮ রানের বিনিময়ে ৩ উইকেট নেন তিনি। এ ছাড়া ২টি করে উইকেট নেন মেহেদী হাসান মিরাজ, তাইজুল ইসলাম ও নাঈম হাসান।

পাহাড়সম লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে বাংলাদেশ দলের ব্যাটসম্যানদের প্রয়োজন ছিল ধৈর্য্য সহকারে ব্যাটিং করা, চেষ্টা করা যত বেশি সময় সম্ভব ক্রিজে টিকে থাকার। কিন্তু টাইগার ব্যাটসম্যনরা ধৈর্য্যরে প্রমাণ দিতে পারেননি। তাদের মধ্যে না ছিল ক্রিজে টিকে থাকার প্রবণতা, না ছিল দ্রুত রান তোলার চেষ্টা। বরং আফগান স্পিনের বিপক্ষে ইনিংসের শুরু থেকেই ভীত ছিলেন তারা।

১ম ইনিংসে সাদমানের সঙ্গে ওপেন করেন সৌম্য সরকার। কিন্তু ২য় ইনিংসে টাইগারদের ওপেনিংয়ে পরিবর্তন আনা হয়। সৌম্যর পরিবর্তে সাদমানের সঙ্গে ইনিংস ওপেন করতে নামেন ডানহাতি ব্যাটসম্যান লিটন দাশ। মূলত বাম-ডান কম্বিনেশন আনতেই লিটনকে দিয়ে ইনিংস ওপেন করানো হয়। বিশাল লক্ষ্যের সামনে দাঁড়িয়ে শুরুটা ভালোই করেন বাংলাদেশ দলের দুই ওপেনার সাদমান ও লিটন। বিনা উইকেটে ৩০ রান নিয়ে মধ্যাহ্ন ভোজনে যান তারা। কিন্তু মধ্যাহ্ন ভোজন থেকে ফিরেই লিটনের উইকেট হারায় বাংলাদেশ। ব্যক্তিগত ৯ রানে চায়নাম্যান বোলার জহির খানের বলে এলবিডব্লিউ হন তিনি। এরপর আফগান স্পিনে কাবু হয়ে দ্রুত সাজঘরে ফেরেন মোসাদ্দেক হোসেন, মুশফিকুর রহিম ও মুমিনুল হক। এদের বিদায়ে ৮২ রানেই ৪ উইকেট হারায় স্বাগতিকরা। তখন মনে হচ্ছিল হয়তোবা চট্টগ্রাম টেস্ট পঞ্চম দিনে গড়াবে না।

তবে পঞ্চম উইকেটে সাকিব ও সাদমানের দৃঢ়তায় কিছুটা প্রতিরোধ গড়ে তুলে টাইগাররা। এই জুটিতে আসে ২৪ রান। সতীর্থদের আসা-যাওয়ার মিছিলে একপ্রান্ত আগলে রাখা তরুণ ওপেনার সাদমান আউট হন ৪১ রানের ইনিংস খেলে। দলের প্রয়োজনে আবারো দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিতে ব্যর্থ হন অভিজ্ঞ মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। তার ব্যাট থেকে আসে ৭ রান।

তবে আফগান স্পিনারদের কৃতিত্ব দিতেই হবে। বৃষ্টি ভেজা পিচে দারুণ বোলিং করেছেন তারা। বিশেষ করে লেগ স্পিনার রশিদ খানের গুগলি সামলাতে হিমশিম খেতে হয়েছে টাইগার ব্যাটসম্যানদের। পাশাপাশি অভিজ্ঞ মোহাম্মদ নবি ও অভিষিক্ত জহিরের স্পিন ঘূর্ণিও স্বাগতিক ব্যাটসম্যানদের যথেষ্ট ভুগিয়েছে। রশিদ ৩টি, জহির ২টি ও নবি ১টি উইকেট পেয়েছেন।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App