জনপ্রিয় সঙ্গীত পরিচালক পারভেজ রবকে ধাক্কা দিয়ে হত্যা করেছে ভিক্টর পরিবহনের এক চালক। এতে মানসিক ভাবে ভেঙে পড়ে নিহতের গোটা পরিবার। তবে ধৈর্য হারাননি সংগীতপরিচালক বাবার ছেলে ইয়ামি আলভি রব (২০)। মামলা না করে মেহেদী হাসান ছোটনসহ বেশ কয়েকজনকে নিয়ে আলভি রাজধানীর উত্তরা কামারপাড়ায় ভিক্টর পরিবহন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সমঝোতার জন্য দেখা করতে যান।

আলোচনার এক পর্যায়ে উত্তেজনাকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। চালকদের সঙ্গে কথা কাটাকাটি থেকে তা হাতাহাতি পর্যন্ত গড়ায়। একপর্যায়ে ভিক্টরের এক চালক রফিকুল ইসলাম তাদের উপর বাস উঠিয়ে দিলে বাসের নিচে চাপা পড়েন মেহেদী হাসান ছোটন ও সঙ্গীত পরিচালকের ছেলে আলভী। পরে দুজনকে উদ্ধার করে দ্রুত উত্তরা ক্রিসেন্ট হাসপাতাল নেয়া হয়।

ঘটনাটি শনিবারের (৭ সেপ্টেম্বর)। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাতেই মারা যায় আলভির বন্ধু ছোটন মারা যায়। আর উত্তরা টাউন ইউনিভার্সিটিতে বিবিএ প্রথমবর্ষের ছাত্র আলভীর মেরুদণ্ডের হাড় ভেঙে গেছে। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক। রবিবার (৮ সেপ্টেম্বর) তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে ট্রমা সেন্টারে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করে উত্তরা পশ্চিম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তপন চন্দ্র সাহা জানিয়েছেন, ঘটনার পরপরই ওই ভিক্টর পরিবহনের বাসটিকে জব্দ করাসহ চালক রফিকুল ইসলামকে আটক করা হয়েছে। এ ঘটনায় মামলা হয়েছে। তপন চন্দ্র বলছেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে বাসচালক রফিকুল ইসলাম দাবি করেছে হঠাৎ তাকে মারধর করায় আত্মরক্ষায় সে গাড়িতে টান দিয়েছিল। তবে সেটা আত্মরক্ষা না চাপা দেয়ার ঘটনা ছিল পুলিশ তা খতিয়ে দেখছে।

পারভেজ রবের বন্ধু আলী আসরাফ জানান, পারভেজ রবের মৃত্যুর ঘটনায় ভিক্টর পরিবহনের কয়েকজন কর্মকর্তা তাদের সঙ্গে সমঝোতা করতে এসেছিলেন। একপর্যায়ে পরিবহনের লোকজন তাদের ওপর হামলা চালিয়ে মারপিট শুরু করে। তখন ঘটনাস্থলে দাঁড়িয়ে থাকা ভিক্টর পরিবহনের একটি বাস তাদের উপর উঠিয়ে দেয় এতে পারভেজের ছেলে আহত হন ও তার বন্ধু মারা যান।

মাত্র দুদিন আগেই সংগীত পরিচালক বাবাকে হারিয়ে শোকে পাথর হয়ে গিয়েছিলেন আলভি। তারপরেও মামলা না করে বিষয়টির সুরাহা করতে গিয়েছিলেন চালক ও কর্তৃপক্ষের কাছে। সেখানে গিয়ে আরো ভয়ঙ্কর পরিস্থিতির মুখে পড়তে হয়েছে তাকে। ঘাতক পরিবহনের চালকদের এমন হিংস্র আচরণে শোকের মধ্যেও স্তব্ধ হয়ে গেছে গোটা পরিবার।