×

মুক্তচিন্তা

ফাইভ-জি চালু কতটা অবাস্তব

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৭ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ০৯:০৭ পিএম

ফাইভ-জি কেবল কথা বলার বা সাধারণ ডাটা ব্যবহারের নেটওয়ার্ক নয়, এটি একটি সভ্যতার মহাসড়ক। এই নতুন সভ্যতা যাকে ডিজিটাল সভ্যতা বলতে পারেন, চতুর্থ বা পঞ্চম শিল্প বিপ্লব বলতে পারেন তার মূল ভিত ফাইভ-জি। ফাইভ-জির সঙ্গে যুক্ত হয়ে আসছে নবীন প্রযুক্তি যেমন; কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, রোবোটিক্স, আইওটি, ব্লক চেইন ইত্যাদি। আমরা ফাইভ-জির প্রভাবকে যেভাবে আঁচ করছি তাতে পৃথিবীতে এর আগে এমন কোনো যোগাযোগ প্রযুক্তি আসেনি, যা সমগ্র মানব সভ্যতাকে এমনভাবে আমূল পাল্টে দেবে।

এই কলামে ‘বাঙালির জাতিরাষ্ট্রের পিতা শেখ মুজিব’ শিরোনামে একটি ধারাবাহিক লেখার তিন কিস্তি তিন সপ্তাহে ছাপা হয়েছে। চতুর্থ কিস্তি ছাপার জন্য লেখা হলেও একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় আলোচনার জন্য লেখাটির পরের কিস্তি সামনের সপ্তাহে ছাপা হবে। ফাইভ-জি কতটা বাস্তবসম্মত- এই শিরোনামেই দৈনিক ভোরের কাগজের প্রথম পাতার শীর্ষ শিরোনাম প্রকাশিত হয়েছে ৪ সেপ্টেম্বর ২০১৯। রাশেদ আলীর এই প্রতিবেদনটি আমার নজরে পড়তে বাধ্য। সম্পাদকীয়, মতামত বা চতুরঙ্গে প্রকাশিত হলে আমি একভাবে বিষয়টিকে দেখতাম, কিন্তু শীর্ষ সংবাদ তো শীর্ষ গুরুত্ব পেতেই পারে। রাশেদ আলীর স্বনামে প্রকাশিত খবরটিতে বলা হয়, ‘দেশে মানসম্পন্ন থ্রি-জি বা ফোর-জি সেবা নিশ্চিত না করেই সরকার নতুন করে এ খাতের সর্বাধুনিক প্রযুক্তি ‘ফাইভ-জি’ চালুর উদ্যোগ নিয়েছে। বর্তমান বাস্তবতায় এ সেবা দেয়া সম্ভব নয় জানিয়ে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসির সঙ্গে দেশের সবচেয়ে বড় দুই অপারেটরের পাওনা নিয়ে দ্বন্দ্ব এখন লাইসেন্স বাতিলের নোটিসের পর্যায়ে পৌঁছেছে। বাকি অপারেটরগুলোর সক্ষমতা ফাইভ-জি চালুর অনুকূলে নেই। ৯০ শতাংশ গ্রাহক এখনো ফোর-জির আওতার বাইরে। এমন পরিস্থিতিতে প্রশ্ন উঠেছে, ফাইভ-জি চালুর সিদ্ধান্ত কতটা বাস্তবসম্মত?’ প্রাসঙ্গিকভাবে প্রতিবেদক উল্লেখ করেন, ‘বিটিআরসির প্রধান কার্যালয়ে গত মঙ্গলবার এ সংক্রান্ত কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এতে দেশে ফাইভ-জি চালুর জন্য পূর্ণাঙ্গ প্রস্তাবনা ও নীতিমালা প্রণয়নের সিদ্ধান্ত হয়। বিটিআরসির জ্যেষ্ঠ সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) মো. জাকির হোসেন খান জানান, গত ৪ আগস্ট গঠিত ওই কমিটিতে সরকার, বিটিআরসি ও অপারেটরগুলোর প্রতিনিধিরা রয়েছেন। তারা আগামী জানুয়ারি নাগাদ ফাইভ-জি চালুর রূপরেখা, সম্ভাব্য তরঙ্গ, তরঙ্গমূল্য এবং বাস্তবায়ন সময়কাল প্রভৃতি বিষয়ে একটি পূর্ণাঙ্গ প্রস্তাবনা ও নীতিমালা তৈরি করবেন বলে বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে।’ একই সঙ্গে তিনি মুঠোফোন গ্রাহক সমিতির সভাপতি মহিউদ্দিন সাহেবের একটি বক্তব্য উল্লেখ করেছেন, যাতে মহিউদ্দিন সাহেব বলেছেন, এদিকে যেখানে থ্রি-জি সেবাই ঠিকমতো পাওয়া যায় না, সেখানে দেশে ফাইভ-জি চালুর সিদ্ধান্তকে গ্রাহকদের সঙ্গে প্রতারণা... ফাইভ-জি চালুর সিদ্ধান্তে সবচেয়ে খুশি হওয়ার কথা আমাদের। কিন্তু খুশি না হয়ে আতঙ্কিত হচ্ছি। কারণ ফোর-জি চালুর ১৭ মাস পার হলেও সারাদেশে ফোর-জি তো দূরের কথা, থ্রি-জি সেবাও সঠিকভাবে নিশ্চিত করা যায়নি। সেই সঙ্গে বর্তমানে যোগ হয়েছে ৬৪ ভাগ মার্কেট দখলকারী গ্রামীণফোন ও রবির বিরুদ্ধে পাওনা নিয়ে ঝামেলা। বিটিআরসি তাদের এনওসি বন্ধ করার ফলে গ্রাহকরা কাক্সিক্ষত সেবা থেকে এমনিতেই বঞ্চিত। নিয়ন্ত্রক সংস্থা একদিকে পাওনা আদায়ের জন্য অপারেটর দুটির লাইসেন্স বাতিল করার সিদ্ধান্ত নিচ্ছে, আবার অন্যদিকে ফাইভ-জি চালুর সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে। বিষয়টি এমন, যে ডালে বসে আছেন, সে ডালই আপনি কাটছেন। এনওসি বন্ধের ফলে অপারেটর দুটি আর নতুন করে স্পেকট্রাম কিনতে পারবে না। তবে ফাইভ-জি কাদের মাধ্যমে চালু করা হবে, সে প্রশ্ন তোলেন তিনি।... বর্তমান সময়ে কোয়ালিটি অব সার্ভিস যদি মাপা হয় তাহলে দেখা যাবে যে কোনো সময়ের চেয়ে তা অনেক নিম্নমানের। নেটওয়ার্ক ব্যবস্থা অত্যন্ত দুর্বল। রাষ্ট্রীয় অপারেটর টেলিটক এখনো ফোর-জি চালু করতে পারেনি। গ্রাহকদের ৯০ শতাংশ এখনো ফোর-জি সেবাই গ্রহণ করেননি। অন্যদিকে ফাইভ-জির ডিভাইসও দেশে পর্যাপ্ত নয়। ফাইভ-জির উপযুক্ত সেট হবে অনেক বেশি মূল্যের। ফাইভ-জি চালুর ক্ষেত্রে এসব বিষয় গুরুত্বপূর্ণ। তিনি বলেন, অপারেটরদের এখন পর্যন্ত স্পেকট্রাম আছে ৩৫ মেগাহার্জ। অথচ ফাইভ-জি করতে লাগবে প্রায় ১০০ মেগাহার্জ। এখন পর্যন্ত এ বিষয়ে সরকার বা নিয়ন্ত্রক সংস্থা গ্রাহকদের সঙ্গে কোনো আলোচনা করেনি। এ অবস্থায় ফাইভ-জি চালু করা হলে তা কেবল কাগজে-কলমেই সীমাবদ্ধ থাকবে বলে মন্তব্য করেন তিনি। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয় যে বুয়েটের অধ্যাপক ড. কায়কোবাদের মতে, ফাইভ-জি চালুর পেছনে ভিন্ন উদ্দেশ্য থাকতে পারে। তিনি একে গরিবের ঘোড়া রোগ বলেও চিহ্নিত করেছেন। ড. কায়কোবাদের মতো পণ্ডিত ব্যক্তির এই মন্তব্য আমাকে অন্তত হতাশ করেছে। বরাবরই তিনি প্রযুক্তিতে সামনে যাওয়ার মানুষ। তিনি ফাইভ-জি নিয়ে নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি রাখেন সেটি ভোরের কাগজই লিখল। দেখা হলে জেনে নেব বিষয়টি সত্যি কিনা। তবে তিনি প্রথম বাক্যটিতে যে কথাটি বলেছেন সেটি প্রণিধানযোগ্য। তিনি ফাইভ-জি চালু করাকে ভিন্ন উদ্দেশ্য বলে মনে করেন। ধন্যবাদ তাকে এই ধারণাটি পোষণ করার জন্য। সত্যিকারভাবেই ফাইভ-জি চালুর উদ্দেশ্য ভিন্ন। অন্যদিকে কায়কোবাদের কথামতো প্রযুক্তিতে এগিয়ে যাওয়া যদি গরিবের ঘোড়া রোগ হয় তবে মোবাইল প্রযুক্তিতে আমাদের থ্রি-জি, ফোর-জি চালু করা উচিত হয়নি, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করা মোটেই উচিত হয়নি। উচিত হয়নি দেশব্যাপী টেলিকম নেটওয়ার্ক গড়ে তোলা। এমনকি কি দরকার আছে কম্পিউটার বিজ্ঞান, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, রোবোটিক্স ইত্যাদি পড়ার সুযোগ তৈরি করার বা এসব নবীনতম প্রযুক্তি অনুশীলনের জন্য অত্যাধুনিক ও ব্যয়বহুল ল্যাব প্রতিষ্ঠা করার? আমরা তো এখনো সুযোগ পেলেই ক্ষমতার বাইরে বিনিয়োগ করে বুয়েটের মতো প্রতিষ্ঠানে নবীনতম বা চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের গবেষণাগার তৈরি করছি। এসবও কি তাহলে গরিবের ঘোড়া রোগ। আমি আশা করেছিলাম যে, ড. কায়কোবাদ এটি অনুভব করবেন যে ফাইভ-জি প্রযুক্তি টু-জি, থ্রি-জি বা ফোর-জির মতো কথা বলার বা ফেসবুক ব্রাউজ করার প্রযুক্তি নয়। আমার নিবন্ধটি প্রতিবেদনের শেষ অনুচ্ছেদ থেকে শুরু করতে চাই। অনুচ্ছেদটি এমন, ‘বর্তমানে প্রচলিত মোবাইল গ্রাহক হিসেবে শুধু মানুষকে বিবেচনা করা হলেও ফাইভ-জি প্রযুক্তির অন্যতম প্রধান সেবা হলো ‘ইন্টারনেট অব থিংস-আইওটি’, যেখানে যন্ত্র থেকে যন্ত্রে যোগাযোগের জন্য ব্যবহƒত ডিভাইসগুলোকেও গ্রাহক হিসেবে বিবেচনা করা হয়। যুক্তরাজ্য, দক্ষিণ কোরিয়া, আয়ারল্যান্ড, স্পেন, অস্ট্রেলিয়াসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এখন ফাইভ-জি প্রযুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে।’ প্রতিবেদনে উল্লিখিত কতগুলো বিষয় আমরা স্বীকার করি। মোবাইল অপারেটরদের সেবার মান খুবই নিম্নমানের। বিশেষ করে সবচেয়ে বড় অপারেটর জিপি বা তার পরের অপারেটর রবির সেবার মান ভয়ঙ্করভাবে খারাপ। জিপির সংকট স্পেকট্রামে। তাদের সাড়ে সাত কোটি গ্রাহক থাকলেও যে স্পেকট্রাম আছে তা দিয়ে এর অর্ধেক গ্রাহককেও সেবা দেয়া সম্ভব নয়। ফলে তাদের কলড্রপ থেকে শুরু করে এখন এমনকি নেটওয়ার্ক না থাকার মতো অবস্থায় পৌঁছেছে। সরকার জিপিকে স্পেকট্রাম কেনার জন্য বারবার অনুরোধ করা সত্ত্বেও তারা কোনো বিনিয়োগ করেনি। বরং নানা অজুহাতে দিনের পর দিন সময় ক্ষেপণ করে তাদের গ্রাহকসেবা আরো খারাপ করেছে। কোনো সতর্ক বাণী এদের জন্য কাজে লাগছে না। রবির স্পেকট্রামের সমস্যা এতটা ভয়ঙ্কর না হলেও তাদের নেটওয়ার্ক মানসম্মত নয়। তারা গ্রাহকদের চাহিদাকে গুরুত্ব দিচ্ছে এমনটি মনে হচ্ছে না। বাংলালিংকের নেটওয়ার্ক দুর্বল। টেলিটকের নেটওয়ার্কও দুর্বল। বাংলালিংকের বিষয়ে সরকারের নির্দেশনা হচ্ছে স্পেকট্রাম বাড়াও এবং নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণ কর। টেলিটকের বিষয়টি হলো যে এই সরকারি সংস্থায় যথাযথ বিনিয়োগ ছিল না। ২০১৮ সাল অবধি এতে বিনিয়োগ ছিল মাত্র ৩ হাজার কোটি টাকা অথচ জিপির বিনিয়োগ ৪০ হাজার কোটি টাকা। তবে সেই দিন এখন আর নেই। টেলিটকের নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণে ব্যাপক কর্মযজ্ঞ চলছে। আমি নিশ্চিতভাবেই বলতে পারি যে, ২০২১ সাল নাগাদ টেলিটক বর্তমান দুরবস্থা থেকে ঘুরে দাঁড়াবে। প্রতিবেদনে সরকারকে দায়ী করা হয়েছে, কেন জিপি ও রবিকে লাইসেন্স বাতিলের কারণ দর্শাও নোটিস দেয়া হয়েছে। মোবাইল ফোন গ্রাহক সমিতির সভাপতির উদ্ধৃতি দিয়ে প্রতিবেদনে এ জন্য পরোক্ষভাবে সরকারকেই দায়ী করা হয়েছে। অথচ বাংলাদেশের একজন নাগরিক এই কথাটি ভেবে দেখলেন না যে ১৯৯৭ সাল থেকে ২২ বছর ধরে জমে ওঠা ১২ হাজার ৮০০ কোটি টাকার জাতীয় পাওনা পরিশোধ না করে জিপি দেশের ১৬ কোটি মানুষের সম্পদ আটকে রেখেছে। আমাদের কি অধিকার আছে যে এই জাতীয় পাওনা তাদের কাছে আটক রেখে আমরা নাকে তেল দিয়ে ঘুমিয়ে থাকব। রবির ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য। এমন যদি হতো যে তারা সরকারের টাকা বিলম্বে দিলেও সেই টাকা গ্রাহকদের ভোগান্তি কমাতে সেবার মান বাড়াতে বিনিয়োগ করেছে তবে তাতেও একটু স্বস্তি পেতাম। জিপির জন্য অপরাধটি বেশি গুরুতর। কারণ তারা বিপুল মুনাফা করে টাকা বিদেশে নিয়ে যায়। অন্যদিকে তাদের ভুলের জন্য দেশের সাধারণ শেয়ারহোল্ডাররা তাদের মূলধন হারাচ্ছে। ফোর-জির প্রসার তেমনটা হয়নি এটিও সত্য কথা। কিন্তু মহিউদ্দিন সাহেব যে জিপি বা রবির উমেদারি করেছেন তিনি তো জানেন যে বিনিয়োগটা জিপি-রবিরই করার কথা। টেলিটকের সক্ষমতায় দুর্বলতা আছে বলে প্রতিষ্ঠানটি ফোর-জির প্রসার ঘটাতে পারেনি। তবে টেলিটকের নেটওয়ার্ক একেবারেই নেই তা তো নয়। আমাদের প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজ চলছে এবং আমরা আমাদের সংকট কাটিয়ে উঠব। এবার আসি ফাইভ-জির কথায়। প্রথমে সবিনয়ে এই কথাটি বলতে চাই যে ফাইভ-জি কেবল কথা বলার বা সাধারণ ডাটা ব্যবহারের নেটওয়ার্ক নয়, এটি একটি সভ্যতার মহাসড়ক। এই নতুন সভ্যতা যাকে ডিজিটাল সভ্যতা বলতে পারেন, চতুর্থ বা পঞ্চম শিল্প বিপ্লব বলতে পারেন তার মূল ভিত ফাইভ-জি। ফাইভ-জির সঙ্গে যুক্ত হয়ে আসছে নবীন প্রযুক্তি যেমন; কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, রোবোটিক্স, আইওটি, ব্লক চেইন ইত্যাদি। বস্তুত ফাইভ-জির মধ্য দিয়ে দুনিয়া একটি অভাবনীয় রূপান্তরের মুখোমুখি হয়েছে। আমরা ফাইভ-জির প্রভাবকে যেভাবে আঁচ করছি তাতে পৃথিবীতে এর আগে এমন কোনো যোগাযোগ প্রযুক্তি আসেনি, যা সমগ্র মানব সভ্যতাকে এমনভাবে আমূল পাল্টে দেবে। ব্রিটেনের ভোডাফোন ২০১৯ সালের মে মাসেই ফাইভ-জি চালু করেছে। ফাইভ-জি চালু করার তালিকায় ওপরে যাদের নাম তার মাঝে জাপানও আছে। আমাদের সময়সীমা ২০২১-২০২৩ সাল। ২০২০ সাল নাগাদ এই প্রযুক্তি বিশ্ববাসী ব্যাপকভাবে ব্যবহার করবে। মোবাইলের এই প্রযুক্তি ক্ষমতার একটু ধারণা পাওয়া যেতে পারে এভাবে যে আমরা এখন যে ফাইভ-জি প্রযুক্তি ব্যবহার করছি তার গতির হিসাব এমবিপিএসএ। অন্যদিকে ফাইভ-জির গতি জিবিপিএসএ। মানে হাজার গুণ বেশি। আমরা মহিউদ্দিন সাহেবদের মোবাইলে গল্প করার জন্য ফাইভ-জি আনছি না, আমরা গ্রামের কৃষকের কাছে আইওটি, টেলি স্বাস্থ্যসেবা, ডিজিটাল শিক্ষা, রোবোটিক্স এবং উৎপাদনের নতুন ধারা প্রবর্তনের জন্য ফাইভ-জি চালু করছি। ১৪৫৪ সালে আবিষ্কৃত মুদ্রণ প্রযুক্তি বাংলাদেশে এসেছিল ১৭৭৮ সালে। মহিউদ্দিন সাহেবরা এই দেশটাকে যদি ৩২৪ বছর পেছনে রাখতে চান তবে সেটি আমরা মানতে পারি না। এ জন্য ২০১৮ সালে ফাইভ-জি পরীক্ষা করেছি। ২০২০ সালে পথনকশা তৈরি হবে এবং ২০২১-২০২৩ সালে ফাইভ-জি চালু হবে। মহিউদ্দিন সাহেব যে ফাইভ-জি ফোন সেটের অভাবের কথা বলেছেন সেটির জবাবটা হলো ফাইভ-জি আইটি, স্বাস্থ্যসেবা, রোবোটিক্স, ডিজিটাল শিক্ষা দিতে গিয়ে হয়তো হ্যান্ডসেট চাইবেই না। আর সেই সেট দুনিয়াতে প্রচলিত হবে তখন আমরা সেই সেট বাংলাদেশেই বানাব। আমি কামনা করি ভোরের কাগজ আমাদের সামনে যাওয়ার সাথী হবে পেছনে থাকার জন্য পিছু টানবে না।

মোস্তাফা জব্বার : তথ্যপ্রযুক্তিবিদ ও কলাম লেখক।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App