×

খেলা

শেষ বিকেলে মোসাদ্দেক-তাইজুল স্বস্তির জুটি

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৬ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ১০:৫৫ পিএম

শেষ বিকেলে মোসাদ্দেক-তাইজুল স্বস্তির জুটি

৪৮ রানের জুটি গড়ে মাঠ ছাড়েন মোসাদ্দেক ও তাইজুল

আফগানিস্তানের বিপক্ষে চলমান একমাত্র টেস্টে টাইগারদের আসা-যাওয়ার মিছিলে দলের জন্য স্বস্তি এনে দিয়েছেন অলরাউন্ডার মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত। প্রথম ইনিংসে রশিদদের করা ৩৪২ রানের জবাবে ১৩০ রান তুলতেই ৭ উইকেট নেই সাকিবদের। ফলোঅনের শঙ্কায় থাকা বাংলাদেশ দলকে সেখান থেকে টেনে তুলেছেন লড়াকু ডানহাতি এই ব্যাটসম্যান। দ্বিতীয় দিনের শেষ বিকেলে তাইজুল ইসলামকে সঙ্গে নিয়ে ৪৮ রানের জুটিতে বাংলাদেশকে স্বস্তি এনে দেন এই মোসাদ্দেকই।

চট্টগ্রাম টেস্টের শুক্রবার দ্বিতীয় দিন শেষে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৮ উইকেটে ১৯৪ রান। আফগানদের প্রথম ইনিংস থেকে ১৪৮ রানে পিছিয়ে টাইগাররা। যদিও ১৪৮ রানে পিছিয়ে থাকা দলের জন্য ৪৮ রানের জুটি আহামরি কিছু নয়। কিন্তু পরিস্থিতি বিবেচনায় নবম উইকেটের এই ছোট জুটিই বাংলাদেশ দলের ভরসার স্থল। ৭৪ বল মোকাবেলায় ১ চার ২ ছক্কায় করা ৪৪ রানে অপরাজিত সৈকত। তার সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ ১৪ রানের ইনিংস খেলে অপরাজিত রয়েছেন তাইজুল। শনিবার তৃতীয় দিনে এই জুটির দিকেই তাকিয়ে স্বাগতিক সমর্থকরা।

২০১৬ সালে অভিষিক্ত মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতকে ভাবা হতো বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ সাকিব আল হাসান হিসেবে। শুরুটাও ভালো করছিলেন তিনি। আফগানিস্তানের বিপক্ষে ১০০ স্ট্রাইক রেটে অপরাজিত ৪৫, ইংল্যান্ডের বিপক্ষে অপরাজিত ৩৮। এরপর ক্রাইস্টচার্চে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ৪৪ বলে অপরাজিত ৫০ রান তোলেন সৈকত। ২০১৭ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতেও বল হাতে ভূমিকা পালন করেন সৈকত।

আয়ারল্যান্ডে ত্রিদেশীয় সিরিজের ফাইনালে সাকিব আল হাসানের চোটের সুযোগে একাদশে জায়গা পেয়ে ম্যাচ জেতানো ইনিংসটি খেলেন তিনি। এক ওভারে ২৫ রানের ঝড় তুলেছিলেন মোসাদ্দেক সেই ম্যাচে। তিনি যখন ব্যাট করতে নামেন তখন দলের সংগ্রহ ছিল ১৫ ওভার ৪ বলে ১৪৩ রান, হাতে ছিল পাঁচ উইকেট। এ সময় ৫ ছক্কা হাঁকিয়ে ২৭ বলে ৫২ রানে ৭ বল বাকি থাকতেই বাংলাদেশকে জয়ের বন্দরে পৌঁছে দেন। ম্যাচসেরার পুরস্কারও ওঠে তার হাতে।

টাইগারদের বর্তমান দলের বেশির ভাগই উঠে এসেছেন অনূর্ধ্ব-১৯ দল থেকে। মোসাদ্দেকও এর ব্যতিক্রম নন। তবে শুরুটা হয়েছিল বিকেএসপি থেকে। ২০১৩-১৪ মৌসুমে ঢাকা বিভাগের হয়ে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে অভিষেক হয় তার। তবে চমক দেখান অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে। ব্যাট হাতে মাত্র ৪ ইনিংসে ৯৩.৫০ গড়ে ১৮৭ রান, বল হাতে ৬ ম্যাচে ১১টি উইকেট নিয়ে নিজের সামর্থ্যরে প্রমাণ দেন।

পরের বছরই বরিশাল বিভাগের হয়ে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে নেমে দুটো সেঞ্চুরি করেন, আর দুটোকেই পরিণত করেন দ্বিশতকে। ২০১৫ সালে করেন আরও এক দ্বিশতক, হলেন বাংলাদেশের প্রথম ব্যাটসম্যান যার প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে তিনটি দ্বিশতক রয়েছে। জাতীয় দলে ওয়ানডে ফরম্যাটে সুযোগ পেয়ে আফগানিস্তানের বিপক্ষে অভিষেকটা রাঙান ৪৫ রানের ঝকঝকে এক ইনিংস দিয়ে, পরে বল হাতেও ১০ ওভারে মাত্র ৩০ রান দিয়ে তুলে নেন ২টি উইকেট।

পরের বছর মার্চে ভারতের বিপক্ষে একমাত্র টেস্টের স্কোয়াডে সুযোগ মিলল মোসাদ্দেকের, তবে মাঠে নামা হলো না। সেই সুযোগ আসে বাংলাদেশের শততম টেস্টে, শ্রীলঙ্কা সফরে। প্রথম ইনিংসেই ৭৫ রানের দুর্দান্ত এক ইনিংস খেলে মন জিতে নিলেন সবার। এরপরও ঠিক থিঁতু হতে পারলেন না, দ্বিতীয়বার টেস্ট খেলতে নামলেন পরের বছর সেই লঙ্কানদের বিপক্ষেই। দ্বিতীয় ইনিংসে যখন নেমেছেন, বাংলাদেশ তখন জয়-পরাজয়ের দোলাচলে। চাপের মুখে ব্যাটিং করতে নেমে দলের প্রয়োজনে স্বভাবের বিরুদ্ধে গিয়ে মোসাদ্দেক হয়ে উঠলেন অভেদ্য এক দুর্গ, ৫৩ বলে কোনো সুযোগ না দিয়ে অপরাজিত রইলেন মাত্র ৮ রান করে। দলও ড্র করতে সক্ষম হলো। আর মোসাদ্দেক হয়ে উঠলেন বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের অন্যতম সেরা অস্ত্রে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App