×

জাতীয়

সরকারি নির্দেশনাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি, রোহিঙ্গাদের হাতে মুঠোফোন

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৫ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ০২:১১ পিএম

সরকারি নির্দেশনাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি, রোহিঙ্গাদের হাতে মুঠোফোন
সরকারি নির্দেশনাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি, রোহিঙ্গাদের হাতে মুঠোফোন
সরকারি নির্দেশনাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি, রোহিঙ্গাদের হাতে মুঠোফোন
সরকারের রোহিঙ্গাদের মুঠোফোন সেবা বন্ধের নির্দেশনা সত্ত্বেও কক্সবাজারের টেকনাফ-উখিয়ায় মুঠোফোন ও ইন্টানেটের ব্যাবহার করছে রোহিঙ্গারা। সরকারের এই নির্দেশনা খবর ছড়িয়ে পড়লে কেউ কেউ প্রকাশ্যে ব্যবহার করলেও অনেকে লুকিয়ে ব্যবহার করছে মুঠোফোন সেবা। সোমবার (৩ সেপ্টেম্বর) রোহিঙ্গাদের মুঠোফোন সেবা বন্ধের সরকারের নির্দেশনার পর গত মঙ্গলবার থেকে রোহিঙ্গা শিবির ও আশপাশ এলাকায় নেটওয়ার্ক সীমিত করেছে অপারেটার গুলো। যার ফলে দুর্বল নেটওয়ার্কের কারণে স্থানীয়দের পাশাপাশি বিভিন্ন অনলাইন সেবা কার্যক্রমে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হয়েছে। মুঠো ফোন ও ইন্টার্নেট ব্যাবহার করে মাদক, হত্যা, ডাকাতি ও তথ্য পাচারসহ নানা অপকর্ম জড়াচ্ছে আশ্রিত রোহিঙ্গারা। যার ফলে সামাজিক ও পারিবারিক শান্তি শৃংখলা বিঘ্নিত হচ্ছে প্রতিনিয়ত। সরেজমিন টেকনাফ ও উখিয়ার একাধিক রোহিঙ্গা ক্যাম্পে দেখা যায়, আশ্রিত রোহিঙ্গারা এন্ড্রয়েড সেটের মাধ্যমে গান শুনছে, কেউ কেউ ভিডিও কল দিয়ে আত্মীয় স্বজনদের সাথে কথা বলছে, আবার কেউ কেউ ছোট মুঠোফোনে আলাপন করতে দেখা গেছে। মুঠোফোন ব্যবহারে বাদ যায়নি উঠতি বয়সের তরুন-তরুনীরা। তারা দেদারছে ভিডিও গেমস, ইউটিউব, ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ, ইমো, ভাইবার ও মেসেন্জারে চ্যাটিংয়ে মগ্ন হয়ে অলস সময় পার করছে। এসময় সাংবাদিকদের দেখে হতবিহ্বল ও কিংকর্তব্যবিমুঢ় হয়ে পড়ে অনেকে। অনেকে তাড়াহুড়ো করে লুকিয়ে ফেলার চেষ্টা করতে দেখা গেছে। এব্যপারে টেকনাফের শালবন (ক্যাম্প নং- ২৬) এর একাধিক রোহিঙ্গা নারী ও পুরুষের সাথে কথা বললে জানান, মুঠোফোন ব্যবহার না করার বিষয়ে কেউ তাদের অবগত করেনি। তবে বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে জানতে পেরেছি। তারা জানান, মুঠোফোন ব্যবহার বন্ধ করা হলে বিদেশ ও বিভিন্ন ক্যাম্পে বসবাসকারী আত্মীয় স্বজনের খবরা খবর নিতে অসুবিধা সৃষ্টি হবে। অপর এক পশ্নের জবাবে রোহিঙ্গারা জানান, মুঠোফোনে সিমটি তাঁরা ব্যবহার করলেও এসব সিম কার নামে নিবন্ধিত, তা তাঁরা জানেন না। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, রোহিঙ্গাদের ব্যবহৃত বেশীর ভাগ সিম ‘রবি’ কোম্পানীর। এরপর ‘গ্রামীন, এয়ারটেল, বাংলালিংক’ কোম্পানীর সিমও রয়েছে। উখিয়া-টেকনাফের ৩৪ টি রোহিঙ্গা ক্যাম্পের কোথাও কোথাও দুর্বল নেটওয়ার্ক হলেও প্রায় ক্যাম্পে পাওয়া যায়। এই মুঠোফোন ও মুঠোফোনে অ্যাপ্স ব্যবহারের মাধ্যমে ভয়াবহ অপরাধসহ নানা অপকর্ম জড়াচ্ছে পালিয়ে আসা আশ্রিত রোহিঙ্গাদের অনেকে। এছাড়াও মুঠোফোনের মাধ্যমে উঠতি কিশোর, তরুন-তরুনী ও যুবক-যুবতীদের সামাজিক অবক্ষয় এবং অপরাধ অপকর্মে লিপ্ত হয়ে পড়ছে। বিশেষ করে স্থানীয়দের সাথে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে বিয়ে করারও অভিযোগ রয়েছে। গত সোমবার বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের মুঠোফোন সেবা বন্ধের নির্দেশ দেয়। রোহিঙ্গা শিবির ও আশেপাশের এলাকায় প্রতিদিন বিকেল পাঁচটা থেকে সকাল ছয়টা পর্যন্ত ফোর-জি এবং থ্রি-জি মোবাইল সেবা বন্ধ থাকবে। বন্ধ করা হলে রোহিঙ্গারা ওই সময়ে ইন্টারনেট সেবা পাবে না। এছাড়া বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তে ১৫০টি মোবাইল ফোন টাওয়ারের ক্ষমতা কমানোর নির্দেশ দেয়া হয়েছে মোবাইল কোম্পানিগুলোকে। এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হলে রোহিঙ্গারা মিয়ানমারের মোবাইল কোম্পানির সাথে যুক্ত হতে পারবে না এবং রাখাইনে যোগাযোগ করতে পারবে না বলে জানা গেছে। এব্যাপারে টেকনাফ উপজেলা মহিলা ও শিশু বিষয়ক কর্মকর্তা মোঃ আলমগীর কবির জানান, মুঠোফোন ব্যবহারের মাধ্যমে রোহিঙ্গা তরুন-তরুনীরা নানা পন্থায় স্থানীয়দের ফাঁদে ফেলে বিয়ে করার চেষ্টা করছে। মুঠোফোন যোগাযোগের কারণে অনেকে পারিবারিক অশান্তি সৃষ্টি করছে। ঘরে বউ রেখে রোহিঙ্গারা যে কোন মুল্যে হোস্ট কমিউনিটির মেয়ে-ছেলে বিবাহ করছে। এর ফলে সামাজিক ও পারিবারিক শান্তি শৃংখলা বিঘ্নিত হওয়ার আশংকা রয়েছে। টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ রবিউল হাসান জানান, রোহিঙ্গা ক্যাম্পে মুঠোফোন ব্যবহারের নিষেধাজ্ঞা ইতিমধ্যে মৌখিকভাবে নির্দেশনা পেয়েছি। এব্যাপারে কার্যক্রম শুরু হয়েছে। পাশাপাশি যারা বিভিন্ন অপারেটর রয়েছে তাদের মোবাইল সিম বিক্রি না করতে কঠোর নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App