×

খেলা

টাইগারদের চোখ রাঙাচ্ছে কাবুলিওয়ালারা

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৫ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ১১:০১ পিএম

টাইগারদের চোখ রাঙাচ্ছে কাবুলিওয়ালারা

দিনের শুরুতেই সবচেয়ে কম ম্যাচে ১০০ উইকেটের মাইলফলক স্পর্শ করা বাংলাদেশি বোলারের রেকর্ডটি নিজের করে নিয়েছেন তাইজুল ইসলাম। আর শেষ বিকেলে তরুণ স্পিনার নাঈম হাসান এনেছেন একই ওভারে জোড়া আঘাত। দীর্ঘদিন পর বল হাতে নিয়ে সফলতা পেয়েছেন স্পিনার মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। তবুও সফরকারী আফগানিস্তানের বিপক্ষে চট্টগ্রাম টেস্টের প্রথম দিনটা স্বস্তিতে কাটেনি সাকিব আল হাসানের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ দলের। প্রথম দিন শেষে টাইগারদের তুলনায় সুবিধাজনক অবস্থানেই রয়েছে রশিদ খানের আফগানিস্তান। বৃহস্পতিবার দিন শেষে তাদের সংগ্রহ ৫ উইকেটে ২৭১ রান। ৮৮ রান নিয়ে ব্যাট করছেন আসগর আফগান। আর ক্রিজে থাকা অপর ব্যাটসম্যান আফসার জাজাই করেছেন ৩৫ রান। শুক্রবার ম্যাচের দ্বিতীয় দিনে আবারো ব্যাটিংয়ে নামবেন তারা।

উইকেট কেমন হবে তা নিয়ে আলোচনা হচ্ছিল গত কয়েকদিন ধরেই। ধারণা করা হচ্ছিল আফগানদের স্পিন শক্তির কথা বিবেচনা করে পেস-সহায়ক উইকেট বানানো হবে। কিংবা উইকেট হবে স্পোর্টিং। কিন্তু এমনটি হয়নি। ঘরের মাঠে অতীতে সব সময় স্পিনবান্ধব উইকেটেই খেলেছে টাইগাররা। ব্যতিক্রম হয়নি এবারো। ম্যাচ শুরুর আগেই উইকেটে দেখা গেছে ফাটল। এর মানে সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে স্পিনের কার্যকারিতাও বাড়বে।

চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে এ দিন টেস্ট ইতিহাসের সর্বকনিষ্ঠ অধিনায়ক হিসেবে টস করতে নামেন আফগান লেগ স্পিনার রশিদ খান। আর ইতিহাস গড়ার দিনে টাইগার দলপতি সাকিবকে হতাশ করে টসও জিতে নেন তিনি। স্বাভাবিকভাবেই টস জিতে আগে ব্যাটিং বেছে নেন রশিদ। সাকিব জানান, টস জিতলে তিনিও আগে ব্যাটিংই বেছে নিতেন। বাংলাদেশ একাদশ সাজায় ৪ জন স্পেশাল স্পিনার নিয়ে। টাইগারদের একাদশে জায়গা হয়নি কোনো পেসারের।

স্পিনবান্ধব উইকেটে অধিনায়ক সাকিব শুরুতেই বল তুলে দেন তার সেরা অস্ত্র তাইজুলের হাতে। এরপর বোলিংয়ে আসেন সাকিব নিজেই। উইকেটের আচরণ বুঝে বেশ সাবধানতার সঙ্গেই নিজেদের ইনিংস শুরু করেন আফগানিস্তানের ব্যাটসম্যানরা। প্রথম ১০ ওভারে তারা তুলেন মাত্র ১৫ রান। টাইগারদের প্রথম ব্রেক থ্রু এনে দেন স্পিনার তাইজুল। ইনিংসের ত্রয়োদশ ওভারের দ্বিতীয় বলে আফগান ওপেনার ইনসানউল্লাহ জানাতকে বোল্ড করেন তিনি। এই ডেলিভারিটিকে ক্লাসিকই বলা যায়। ইনসানউল্লাহকে সামনে টেনে এনে হালকা গ্রিপে টার্ন করে ব্যাটের ফাঁক দিয়ে স্টাম্পে ঢুকান তাইজুল। ইনসানউল্লাহর পেছনে তাকিয়ে বেল পড়ার দৃশ্যটা দেখা ছাড়া আর কিছুই করার ছিল না। আফগানদের সংগ্রহ তখন ১৯ রান। এর কিছুক্ষণ পর আরেক ওপেনার ইব্রাহিম জাদরানকেও সাজঘরে ফেরান তাইজুল। অভিষিক্ত ইব্রাহিমের ব্যাট থেকে আসে ২১ রান। ৫০ রানের আগেই দুই ওপেনারের উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে আফগানরা। শুরুতেই উইকেট হারানোর ধাক্কা কাটিয়ে ওঠার আগে আরো একবার আঘাত হানেন মাহমুদউল্লাহ। দলীয় ৭৭ রানের মাথায় হাসমতউল্লাহ শাহিদিকে সৌম্য সরকারের ক্যাচ বানান তিনি। ফলে প্রথম সেশনটা নিজেদের করে নেয় স্বাগতিকরা। স্বস্তি নিয়েই মধ্যাহ্ন ভোজনের বিরতিতে যায় সাকিব বাহিনী।

তবে দ্বিতীয় সেশনে দৃশ্যপট পাল্টে যায়। অভিজ্ঞ আসগর আফগান ও রহমত শাহ প্রতিরোধ গড়ে তুলেন। মিরাজের বলে ৯ রানের মাথায় জীবন পান আসগর। অবশ্য ক্যাচটি নেয়া তরুণ ক্রিকেটার সাদমানের পক্ষে বেশ কঠিনই ছিল। সুযোগ কাজে লাগিয়ে চতুর্থ উইকেটে রহমত শাহর সঙ্গে ১২০ রানের জুটি গড়েন আসগর। রহমতকে আউট করে এই জুটি ভাঙেন নাঈম। তবে আউট হওয়ার আগে ইতিহাসের প্রথম আফগান ব্যাটসম্যান হিসেবে টেস্ট সেঞ্চুরির কীর্তি গড়েন রহমত শাহ। এ দিন তিনি খেলেন ১৮৭ বলে ১০ চার ও ২ ছক্কায় ১০২ রানের নান্দনিক এক ইনিংস। একই ওভারে অভিজ্ঞ মোহাম্মদ নবিকেও সাজঘরের পথ দেখান নাঈম। ফলে ম্যাচে ফেরে টাইগাররা। আফগানদের সংগ্রহ তখন ৫ উইকেটে ১৯৭ রান। এরপর ষষ্ঠ ব্যাটসম্যান হিসেবে ক্রিজে আসা আফসারকে সঙ্গে নিয়ে দিনের বাকি সময়টা বেশ স্বাচ্ছন্দ্যেই পার করেন আসগর আফগান। শুক্রবার টাইগার বোলারদের লক্ষ্য থাকবে তাদের দ্রুত সাজঘরে ফেরানো।

বাংলাদেশের পক্ষে তাইজুল ও নাঈম ২টি করে উইকেট পেয়েছেন। আর অপর উইকেটটি পেয়েছেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App